Image description

জামালপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (জাবিপ্রবি) প্রশাসন জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা, নির্যাতন ও সামাজিক মাধ্যমে ভয়ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগে মোট ৫১ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে। সোমবার (২৫ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. নুর হোসেন চৌধুরী গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, শিক্ষার্থীদের অভিযোগের ভিত্তিতে গঠিত ১৩ সদস্যবিশিষ্ট গণতদন্ত কমিশনের প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের ১৬তম সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

কর্মকর্তাদের মধ্যে সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে রয়েছেন ৬ জন কর্মকর্তা। তাঁরা হলেন সহকারী রেজিস্ট্রার আনিসুজ্জামান, ইঞ্জিনিয়ার শহীদুজ্জামান, সেকশন অফিসার রাসেল মাহমুদ, মোতাব্বির হোসেন, কর্মকর্তা-কর্মচারী পরিষদের সভাপতি মির্জা হালিম ও উপাচার্যের ব্যক্তিগত সহকারী সোহাগ সরকার। তাঁদের সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব শৃঙ্খলানীতি না থাকায় সিন্ডিকেট সদস্যদের সুপারিশ অনুযায়ী তাঁদের বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা ২০১৮ অনুসারে বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে  পরবর্তী সিন্ডিকেটে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

শিক্ষার্থীদের মধ্যে শাস্তিপ্রাপ্তদের মধ্যে ৪৫ জন শিক্ষার্থী। তাঁদের মধ্যে গুরুতর অপরাধে জড়িত ২১ জন এবং অপেক্ষাকৃত কম অপরাধে জড়িত ২৪ জন শিক্ষার্থী রয়েছেন।

গুরুতর অপরাধে জড়িতদের মধ্যে জাবিপ্রবি শাখা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক কাওসার আহমেদ স্বাধীন ও যুগ্ম আহ্বায়ক-১ পলাশকে পাঁচ বছরের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। 

এ ছাড়া শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ইয়াসির আরাফাত সৌরভ, মোকাররম হোসেন, মোশারফ হোসেন, আভিমান সরকার, সেবক দাস, মাসুদ রানা, ইতিসার সানি ইমন, ছাত্র হল শাখার সাধারণ সম্পাদক সকলাই এবং ছাত্রী হল শাখার সভাপতি ঐশীসহ যেসব শিক্ষার্থী স্নাতক সম্পন্ন করেছেন তাঁদের সনদপত্র স্থগিত করা হয়েছে।

এ ছাড়া ছাত্রীদের ওপর নির্যাতন ও ভয় ভিতি দেখানো ছাত্রলীগ নেত্রী প্রিয়া সরকার, ছাত্র হল শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক রবিউল ইসলাম ইমন এবং ছাত্রলীগ আহ্বায়ক স্বাধীনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে পরিচিত ফিশারিজ বিভাগের শিক্ষার্থী শাহরিন সাবাসহ মোট সাতজনকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। এই গুরুতর অপরাধে জড়িতদের বহিষ্কার/সনদ স্থগিত, হল থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার, সিট বাতিল, তিরস্কার ও মুচলেকা প্রদানের শাস্তি দেওয়া হয়েছে।

অন্যদিকে, অপেক্ষাকৃত লঘুদণ্ডপ্রাপ্ত ২৪ শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের হল থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। তাঁদের সিট বাতিল ও তিরস্কার করা হয়েছে। একই সঙ্গে তাঁদের মুচলেকা দিতে হবে।৪৫ জন সাজাপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীর মধ্যে ৯ জন ছাত্রী এবং ৩৬ জন ছাত্র। তাঁদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আচরণ ও শৃঙ্খলা বিধি ২০১৯ অনুসারে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। শিক্ষকদের বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানায়, তাঁদের বিচারকার্য দ্বিতীয় ধাপে শুরু হবে যা আগামী সিন্ডিকেট সভায় তাঁদের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।