
বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ হচ্ছে যোগ্য গ্র্যাজুয়েট তৈরি করা, পলিটিকাল লিডার তৈরি করা নয় বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) উপাচার্য ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার। শুক্রবার (২৩ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের এ কে খান অডিটোরিয়ামে ক্যাম্পাসে প্রথমবারের মতো আয়োজিত সংসদীয় প্রতিযোগিতা নিলস-এলইবি জাতীয় ছায়া আইনসভা ২০২৫-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
উপাচার্য বলেন, আমি একাডেমিক পড়াশোনার থেকে বেশি সহ শিক্ষাকে প্রাধান্য দেয়। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যে শিক্ষা দেয় তা বাস্তবে কোন কাজে আসে না। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ হচ্ছে যোগ্য গ্র্যাজুয়েট তৈরি করা, পলিটিকাল লিডার তৈরি করা না। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যোগ্য গ্র্যাজুয়েট তৈরি করতে পারলে যোগ্য নেতা এমনেতেই বেরিয়ে আসবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যোগ্য গ্র্যাজুয়েট তৈরি করতে পারলে যোগ্য নেতা এমনিই বেরিয়ে আসবে। তার জন্য লাল দল, নীল দল করার দরকার নেই। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে আত্মবিধ্বংসী কার্যকলাপ, লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতি বন্ধ করতে হবে। আর আমি তোমাদের বলবো এমন আয়োজন আরও করতে।
তিনি আরও বলেন, আমরা ভাবি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মানে তিনি সবজান্তা, বিষয়টা ঠিক না। আমাদের শিক্ষকদের মাঝে অনেক ঘাটতি আছে। সেসব উত্তীর্ণের দরকার। আমি শিক্ষকদের বলি বেসিক বিষয় না জেনে ট্রেনিং প্রোগ্রামে জয়েন করা উচিত না। বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাক্ট ১৯৭৩ তে শিক্ষকদের যে অবাধ স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে তা সংস্কার জরুরি।
অনুষ্ঠানে ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী তানজিম মালিহা তাহা এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ইতমিনান মনির বাসিলিস-এর সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় আইন বিভাগের অধ্যাপক এ বি এম আবু নোমান, সহকারী অধ্যাপক সাঈদ আহসান খালিদ। অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার।
বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান বলেন, যে আইন কেবল আদালত কক্ষের জন্য নয় - আইন পড়তে হবে প্রতিটি নাগরিকের অধিকার এবং আমাদের আর্থ-সামাজিক-রাজনৈতিক বাস্তবতা বোঝার জন্য। চার বছর অধ্যয়নের পরেও, অনেক আইন শিক্ষার্থী আইন বুঝে না, আমাদের একাডেমি পড়াশোনার বাইরেও আইন বুঝতে হবে, চর্চা করতে হবে।
আয়োজকরা জানান, এই অনুষ্ঠানে ৪০টিরও বেশি সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অংশগ্রহণকারীরা অংশগ্রহণ করেছেন। এছাড়াও এআইইউবি মুট কোর্ট ক্লাব, এইউএসটি ডিবেটিং ক্লাব, ফেনী ইউনিভার্সিটি ল মুটিং সোসাইটি, এনএসইউএলএমএস, জেইউমুনা, এনএসটিইউ ডিবেটিং সোসাইটি, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং অর্গানাইজেশন, সাউথইস্ট মডেল ইউনাইটেড ন্যাশনস ক্লাব, বিআইইউডিসি। ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি এবং চট্টগ্রাম ল ইনস্টিটিউট আয়োজনে সহযোগিতা করেছে।