Image description

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে রেখেই দ্রুত নির্বাচনসহ দেশের চলমান সংকটের সমাধান চান রাজনীতিকরা। বৃহস্পতিবার রাতে প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগের গুঞ্জনের পর গতকাল রাজনীতিবিদদের অনেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দিয়ে এ বিষয়ে নিজের মতামত তুলে ধরেছেন। কেউ কেউ সংবাদমাধ্যমের কাছেও মতামত ব্যক্ত করেছেন। তাদের বেশিরভাগই চলমান পরিস্থিতিতে সবাইকে সতর্ক থেকে ঐক্য বজায় রাখার পক্ষে। অধিকাংশ রাজনীতিক মনে করেন, জাতির বৃহত্তর স্বার্থে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে চেয়ারে রাখতে হবে। বিশ্লেষকরাও বলছেন, ড. ইউনূস পদত্যাগ করলেই সব সংকটের সমাধান হবে—এটি মনে করার কারণ নেই। এতে বরং সংকট আরও তীব্র হবে, ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বিপ্লবের মূল চেতনাও।

মিয়ানমারের রাখাইনে ‘মানবিক করিডোর’, চট্টগ্রাম বন্দরের একটি টার্মিনাল বিদেশি কোম্পানিকে দেওয়া, জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ না দেওয়া, বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণের মেয়র পদে শপথ পড়ানো নিয়ে অচলাবস্থা, নারী সংস্কার কমিশন বাতিলসহ বেশকিছু ইস্যু ঘিরে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের দূরত্ব ক্রমেই বাড়ছে। দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, গত চার দিন একটানা চেষ্টা করেও প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিএনপি সাক্ষাৎ পেতে ব্যর্থ হয়েছে। জামায়াতে ইসলামীর পক্ষেও বারবার সর্বদলীয় বৈঠক আহ্বানের তাগিদ দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু কোনো অনুরোধেই তিনি সাড়া দেননি। জুলাই অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া শিক্ষার্থীদের রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতৃবৃন্দ ছাড়া আর কোনো দলই পাচ্ছে না প্রধান উপদেষ্টার দেখা। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার রাতে খবর ছড়ায়—প্রধান উপদেষ্টা পদত্যাগ করবেন। এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করার পর ড. ইউনূস পদত্যাগের বিষয়ে ভাবছেন বলে জানালে গুঞ্জন আরও ডালপালা মেলে। এরই ধারাবাহিকতায় দেশে জরুরি অবস্থা জারি হচ্ছে—এমন গুঞ্জনও ছড়ায়। সবমিলিয়ে গত কয়েক দিনের ঘটনায় জটিল রাজনৈতিক সমীকরণে অস্থিরতা দেখা দেয় দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে। এমন পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক নেতাদের অনেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দিয়ে সবাইকে সতর্ক থাকার পাশাপাশি নিজেদের মধ্যে ভেদাভেদ ভুলে ঐক্য গড়ে তোলার কথা বলেন।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বৃহস্পতিবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে লেখেন, ‘জাতীয় স্বার্থে স্পর্শকাতর ও বিতর্কিত বিষয়গুলো আসুন সবাই এড়িয়ে চলি। সংকট উত্তরণে ইতিবাচক ভূমিকা কেবল জাতিকে উপকৃত করবে। নেতিবাচক ভূমিকা কখনোই কল্যাণ বয়ে আনে না।’ আরেকটি পোস্টে তিনি লেখেন, ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী সব পক্ষকে মান-অভিমান ও ক্ষোভ একদিকে রেখে জাতীয় স্বার্থে দূরদর্শী ও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের জন্য আন্তরিকভাবে অনুরোধ জানাই। যার যার অবস্থান থেকে সর্বোচ্চ দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করি। আল্লাহতায়ালা এই জাতিকে সাহায্য করুন এবং সব ধরনের ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করুন। আমিন।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ গতকাল সাংবাদিকদের বলেন, ‘ড. ইউনূসের পদত্যাগে কোনো শূন্যতা তৈরি হবে না। তবে বিএনপি চায় সম্মানের সঙ্গে ড. ইউনূস থাকুক এবং নির্বাচনী রোডম্যাপ দিয়ে জাতিকে সংকট থেকে মুক্ত করুক। নির্বাচনী রোডম্যাপই বর্তমান সংকট সমাধানের একমাত্র পথ।’ তিনি বলেন, ‘বিএনপি ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পদত্যাগ চায় না, বিএনপি চায় নির্বাচনী রোডম্যাপ। কিন্তু সেদিকে না গিয়ে সংস্কারের কথা বলে সময়ক্ষেপণ করা হচ্ছে। তবু তিনি কোনো কারণে আবেগের বশবর্তী হয়ে পদত্যাগ করলে জাতি নতুন বিকল্প বেছে নেবে।’

সালাহউদ্দিন আরও বলেন, ‘বিএনপি সোমবার থেকে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাতের চেষ্টা করেও পায়নি। সরকারের ভেতরে আওয়ামী দোসর এবং উচ্চাভিলাষী কেউ কেউ বিএনপিকে প্রতিপক্ষ ভাবে।’

এদিকে, প্রধান উপদেষ্টা পদত্যাগ করবেন না বলে গতকাল দুপুরে ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তবে পরে আবার পোস্টটি মুছেও ফেলেন তিনি। পোস্টটিতে তিনি লিখেছিলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পদত্যাগ করবেন না। তার ক্ষমতার প্রয়োজন নেই। কিন্তু বাংলাদেশের জন্য, বাংলাদেশের শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক উত্তরণের জন্য অধ্যাপক ইউনূসের দরকার আছে।’ পোস্টটি মুছে ফেলার পর দেওয়া আরেক পোস্টে তিনি জানান, মুছে ফেলা পোস্টটিতে তিনি তার ব্যক্তিগত মত দিয়েছিলেন।

উদ্ভূত রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, জাতির বৃহত্তর স্বার্থে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে চেয়ারে রাখতে হবে। বর্তমান পরিস্থিতির উন্নতি না হলে আগামী দিনের পরিস্থিতির জন্য সবাই আফসোস করবেন। এ জন্য সোশ্যাল মিডিয়ায় একে অন্যের বিরুদ্ধে তির্যক বক্তব্য না দিয়ে জাতীয় ঐক্যের জন্য সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। তিনি বলেন, সেনাপ্রধানের সর্বশেষ বক্তব্য আইএসপিআর বা সরকারি তথ্যসূত্রের আলোকে আসা উচিত ছিল। সেইসঙ্গে বিএনপির সঙ্গে যে দূরত্ব তৈরি হয়েছে, সেখানে সমঝোতামূলক পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। সেটি হতে পারে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পরামর্শ নিয়ে কিছু রাজনৈতিক মেধাসম্পন্ন লোককে উপদেষ্টা পরিষদে যুক্ত করা। পাশাপাশি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যেসব উপদেষ্টার কারণে জাতীয় অনৈক্য তৈরি হয়েছে, তাদের পদত্যাগ করার আহ্বান জানান মঞ্জু।

হেফাজতে ইসলাম ঢাকা মহানগরীর সেক্রেটারি মাওলানা মামুনুল হক গতকাল এক সমাবেশে বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস অভিভাবকের দায়িত্ব নিয়েছেন। আমাদের সেনাপ্রধান দেশের স্তম্ভ। আপনারা ব্যক্তিগত মান-অভিমানের কারণে মানুষের স্বপ্ন ফিকে হতে দেবেন না।’ ক্ষমতা নিয়ে মারামারি-হানাহানি করা সমীচীন হবে না উল্লেখ করে মামুনুল হক সব রাজনৈতিক দলের উদ্দেশে বলেন, ‘টাইম ফ্রেম বেঁধে দেশকে এগিয়ে নেওয়া সম্ভব না। একের পর এক দাবি আদায়ের সংস্কৃতি অব্যাহত থাকলে এই দেশকে ধ্বংসের হাত থেকে কেউ রক্ষা করতে পারবে না।’ তিনি জুলাই আন্দোলনে অংশ নেওয়া সব দল ও সংগঠনের প্রতি ঐক্যের ডাক দেন।

এদিকে, কবি ও রাষ্ট্রচিন্তক ফরহাদ মজহার ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে বলেছেন, “প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পদত্যাগের ইচ্ছা প্রকাশ করে ‘ভুল করেছেন’। ‘পদত্যাগ’ করা হবে ড. ইউনূসের ব্যর্থতা, তার জন্য আত্মঘাতী। কোনো ব্যক্তি বা দল নয়, তার উচিত জনগণের ঐতিহাসিক অভিপ্রায়কে সম্মান করা, কোনো দল বা গোষ্ঠীর চাপে বিভ্রান্ত না হয়ে জনগণের ওপর আস্থা রাখা’।” তিনি আরও লেখেন, ‘লক্ষ্য অর্জনের জন্য জনগণ চায় প্রধান উপদেষ্টা ও বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর সঙ্গে ড. ইউনূসের ভুল বোঝাবুঝির অবসান হোক। নির্বাচন অবশ্যই যত দ্রুত সম্ভব হতে হবে, কিন্তু কুচক্রী মহলের ষড়যন্ত্রে সেনাপ্রধান তার এখতিয়ারের বাইরে নির্বাচন নিয়ে যে মন্তব্য করেছেন, তা লুটেরা ও মাফিয়া শ্রেণিকে আবার ক্ষমতায় বসানোর যুক্তি। গণঅভ্যুত্থানের অংশগ্রহণকারী জনগণ তা মেনে নেবে না। দেশকে বিভিন্ন শক্তির ক্ষমতা দখলের প্রতিযোগিতার ময়দান ও গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দেওয়ার দায় তখন সেনাপ্রধানের ওপর বর্তাবে।’

এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় তার ফেসবুক আইডিতে লেখেন, ‘বাংলাদেশের রাজনীতিকে সব ধরনের আধিপত্যবাদ থেকে মুক্ত করে স্বাধীন ও সার্বভৌমভাবে পরিচালনা করাই আমাদের লক্ষ্য। ড. ইউনূসকে জনগণকে দেওয়া সংস্কার, বিচার ও ভোটাধিকারের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে হবে। উনাকে দায়িত্বে থেকেই রাজনৈতিকভাবে সব সমস্যার সমাধান করতে হবে। জুলাই ঘোষণাপত্র নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই দিতে হবে। ঘোষিত টাইম ফ্রেমের মধ্যেই নির্বাচন হবে। নির্বাচনের আগে মৌলিক সংস্কারের জুলাই সনদ রচিত হবে। নির্বাচনের আগে জুলাই গণহত্যার বিচার দৃশ্যমান হবে এবং বিচারের রোডম্যাপ আসতে হবে। নতুন সংবিধানের জন্য গণপরিষদ ও আইনসভার নির্বাচন একই সঙ্গে দিতে হবে।’

এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ফেসবুকে এক পোস্টে লেখেন, ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, নর্থ ও দিল্লি জোটভুক্ত হয়ে যে কুমির ডেকে আনছেন, তা আপনাদেরই খাবে। আপনারা তাদের একজন নন। আপনাদের শুধু সাময়িকভাবে কাজে লাগানো হয়েছে। আমাদের না আছে মরার ভয়, না আছে হারাবার কিছু। একমাত্র আফসোস, গণতান্ত্রিক রূপান্তর আর এ দেশের মানুষের ভাগ্য—কোনোটিই ইতিবাচক পথে যাবে না আর কী।’ তিনি আরও লেখেন, ‘স্বপ্ন দেখে স্বপ্নভঙ্গের কষ্টই বোধহয় এ দেশের ভাগ্য।’

অন্যদের মধ্যে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা ফেসবুকে লেখেন, ‘রাজনৈতিক শক্তিগুলোর ক্ষুদ্র স্বার্থের দ্বন্দ্ব ও পারস্পরিক অবিশ্বাস আমাদের গণতান্ত্রিক রূপান্তরকে চরম ঝুঁকির মুখে ফেলছে। বৃহস্পতিবার ছিল জুলাই অভ্যুত্থানের পর থেকে অন্যতম কঠিন রাত।’ তিনি আরও লেখেন, ‘এটা দোষারোপের সময় নয়। এটা আত্মসমালোচনার সময়। ইতিহাস আমাদের শেখায়—যারা পরিবর্তনকে ভয় পায়, তারা প্রায়ই বিভাজন ও মেরূকরণকে ব্যবহার করে পুরোনো শাসনব্যবস্থাকে নতুন মুখোশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করে। আমরা যেন সেটা এখানে ঘটতে না দিই। আমাদের গোষ্ঠীবাদী মানসিকতার ঊর্ধ্বে উঠতে হবে। এই বিপ্লব ছিল জনগণের। আর সেই জনগণের প্রতিই আমাদের দায়িত্ব—সংযম দেখানো, সংলাপে এগিয়ে আসা এবং ঐক্য ধরে রাখা। আসুন, এটি হোক বিভক্তির নয়—ঐক্যের একটি মোড়।’

বিদ্যমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে গতকাল শুক্রবার বিকেলে এক বিবৃতিতে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেন, ফ্যাসিবাদী শাসনের বিপরীতে জনগণের সক্রিয় অংশগ্রহণভিত্তিক, গণমুখী ও গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে একটি সমন্বিত, সর্বজনীন ও গণভিত্তিক প্রজাতন্ত্র গঠনে জুলাই অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষার ভিত্তিতে সংস্কারের লক্ষ্যে ‘জাতীয় সনদ’ দ্রুত প্রণয়ন এই মুহূর্তে অনিবার্য হয়ে পড়েছে। তিনি বলেন, এই সনদ হবে জাতির সর্বস্তরের মানুষের ন্যূনতম ঐকমত্যের প্রতিফলন। এটি হবে সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচারভিত্তিক গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র গঠনের প্রতিশ্রুতি। জাতীয় সনদ হবে রাষ্ট্র ও নাগরিকের মধ্যে একটি নতুন সামাজিক চুক্তি, যেখানে সাংবিধানিক সংস্কারসহ জনগণের আকাঙ্ক্ষা প্রতিফলিত হবে। এই সনদের ভিত্তিতেই গণঅভ্যুত্থানকারী শক্তিগুলোর মধ্যে জাতীয় ঐক্য কার্যকর হবে।

দেশের চলমান রাজনৈতিক উত্তেজনা আলাপ আলোচনার মাধ্যমে প্রশমন করা সম্ভব বলে মনে করেন খেলাফত মজলিসের শীর্ষ নেতৃত্ব। গতকাল সংগঠনের পল্টনের কার্যালয়ে আমিরে মজলিস মাওলানা আব্দুল বাছিত আজাদের সভাপতিত্বে ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব জাহাঙ্গীর হোসাইনের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে নেতারা বলেন, দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তরণে বিভিন্ন দল ও পক্ষের মধ্যে পারস্পরিক মতপার্থক্য-বিভেদ দূর করতে সংলাপ শুরু করা প্রয়োজন। প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগ বা অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে অন্যদের মতপার্থক্যের যেসব খবর প্রকাশিত হচ্ছে, তাতে জনগণ খুবই উদ্বিগ্ন ও শঙ্কিত। ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্য অটুট রাখার স্বার্থে সবাইকে আন্তরিক হতে হবে। রাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে নিজ নিজ গণ্ডির মধ্যে থেকে দায়িত্বশীলতার সঙ্গে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করতে হবে। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন নায়েবে আমির আহমদ আলী কাসেমী, অধ্যাপক আব্দুল্লাহ ফরিদ, যুগ্ম মহাসচিব ড. মোস্তাফিজুর রহমান ফয়সল, অধ্যাপক মো. আবদুল জলিল ও আমিনুর রহমান ফিরোজ।

এদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা ফেসবুকে লেখেন, ‘দেশ কোনো ধরনের রাজনৈতিক ঐক্যের পথে নেই। এই ঐক্য ভেঙে গেছে গত সেপ্টেম্বর, অক্টোবরের দিকেই। খোলসটা ছিল একরকমভাবে। বর্তমানে খোলসটাও খুলে পড়ছে, তাই অনেকে অবাক হচ্ছে। সব পক্ষ যদি কিছুটা পরিপক্বতা দেখাত, শহীদদের জীবনের কথা ভেবে কিছুটা ছাড় দিত, তাহলে অন্তত নির্বাচনের আগ পর্যন্ত দেশটা স্ট্যাবল থাকত। দেশটা স্ট্যাবল না হতে দেওয়ার জন্য অনেক ধরনের ফোর্স ভেতরে সক্রিয় আছে। আর জুলাইয়ের সব লড়াকু শক্তিই ক্ষমতা প্রশ্নে অস্থির হয়ে গেছে। যেন গোটা দেশটাই একটা খেলামাত্র।’