
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) নারী কেলেঙ্কারীতে অভিযুক্ত রেজিস্ট্রার মনিরুল ইসলামকে অপসারণের দাবিতে আন্দোলন করেছে শিক্ষার্থীরা। এসময় তারা রেজিস্ট্রারের কুশপুত্তলিকা দাহ করার পর, তার দপ্তরসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন কর্মকর্তার কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেয়। আন্দোলনকারীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনকে আগামী ১২ ঘণ্টার মধ্যে তাদের দাবিগুলো মেনে নেওয়ার আল্টিমেটাম দিয়েছে।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী রাকিন খান বলেন, ‘রেজিস্ট্রারকে দপ্তর থেকে অপসারণ না করা পর্যন্ত তালা খোলা হবে না।’ তিনি আরও জানান, রেজিস্ট্রার মনিরুল ইসলাম ভোলার মনপুরা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি ছিলেন এবং জুলাই মাসের আন্দোলনে বিরোধিতা করেছিলেন। শিক্ষার্থীরা দাবি করেছে যে, তার অপসারণসহ ৪ দফা দাবি পূর্ণ করা না হলে আন্দোলন চলবে।
শিক্ষার্থীরা আরও জানান, তাদের দাবিগুলো উপাচার্য ড. শুচিতা শারমিনকে দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু ২ দিনের আল্টিমেটামের পরও কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় তারা এই পদক্ষেপ নিয়েছে। তারা বলেছেন, ‘অবৈধ রেজিস্ট্রার মনিরুল ইসলামের অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন জোরালো হবে।’
এ বিষয়ে সাবেক ছাত্রদল নেতা মোশারফ হোসেন বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের যৌক্তিক দাবির প্রতি কোনো কর্নপাত না করায়, রেজিস্ট্রারকে অবৈধ ঘোষণা করে আমরা তার দপ্তরে তালা দিয়েছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘এটি একটি স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মামুন অর রশিদ বলেন, ‘বর্তমান অস্থিরতার সমাধান উপাচার্যের কাছেই। উপাচার্য যদি অবৈধ রেজিস্ট্রারকে অপসারণ করেন, তবে বিষয়টির সমাধান সম্ভব।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. গোলাম রব্বানী জানান, ‘শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে উপাচার্য বিষয়টি সমাধান করতে পারেন।’
এদিকে, উপাচার্য অধ্যাপক ড. শুচিতা শারমিনের সাথে যোগাযোগ করা হলেও তিনি সাড়া দেননি। তার পিএসকেও কল করা হলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। পরে দপ্তর থেকে জানা যায়, উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে অবস্থান করছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা গত মঙ্গলবার থেকে ৪ দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেছে। দাবিগুলো হলো- ‘ইংরেজী বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহসিন উদ্দিনের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপমানজনক অপবাদ প্রত্যাহার এবং পুনর্বহাল, চুক্তিভিত্তিক নিয়োগপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মো. মনিরুল ইসলামকে অপসারণ, ফ্যাসিবাদ ও স্বৈরাচারের দোসর শিক্ষকদের লাভজনক কমিটি থেকে অপসারণ, ফ্যাসিবাদের দোসরদের পুনর্বাসন করায় উপাচার্যকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে।’