
যোগদানের পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য কোনও প্রশাসনিক ও আর্থিক কাজে সহযোগিতা করেননি বলে অভিযোগ করেছেন খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ শরীফুল আলম। বুধবার (২৩ এপ্রিল) রাতে উপাচার্যসহ তাঁকে সরিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরুর পর উপদেষ্টা বরাবর লেখা এক চিঠিতে এ অভিযোগ করেন তিনি। তার দাবি, তিনি এখনও নিজের সম্পর্কে জানেন না এবং তাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগও দেয়া হয়নি।
চিঠিতে অধ্যাপক ড. শেখ শরীফুল আলম বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার পক্ষে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখার রাখি। পরবর্তীতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গত ৪ ডিসেম্বর আমাকে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেন। উপ-উপাচার্য পদে যোগদানের পর বিভিন্ন দাপ্তরিক সভা ও সিন্ডিকেটে প্রতিষ্ঠানের স্বার্থ ও শিক্ষার্থীদের স্বার্থ সমুন্নত রাখতে সর্বদা নিজেকে নিয়োজিত রেখেছি। যোগদানের পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মহোদয় আমাকে কোন প্রশাসনিক ও আর্থিক কাজে সহযোগিতা করেননি।
উপরন্তু বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট কর্তৃক উপ-উপাচার্যের সীমিত আকারে প্রশাসনিক ও আর্থিক কাজ করার যে নীতিমালা ছিল, তা গত ১১ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৭তম (জরুরি) সিন্ডিকেট সভার মাধ্যমে বাতিল করে দেয়া হয়। এ তথ্য জানিয়ে তিনি বলেন, গত চার মাসে প্রশাসনিক কার্যাদি এবং আর্থিক বিলে স্বাক্ষর করতে না দিয়ে আমাকে বঞ্চিত করা হয়েছে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য পদটি একটি অলংকারিক পদে পরিণত করা হয়েছে। উল্লেখ্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য হিসেবে আমি শুধুমাত্র লাইব্রেরি কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করি।
বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদানের পর থেকে সর্বদা প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে কাজ করেছেন দাবি করে অধ্যাপক ড. শেখ শরীফুল আলম বলেন, প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় জানতে পারি, সরকারের তরফে আমাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য পদ থেকে অব্যাহতি দেয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বাস্তবতা হলো আমি নিজে এখনও আমার অপরাধ সম্পর্কে জানি না এবং আমাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগও দেয়া হয়নি যা খুবই দুঃখজনক ও অনভিপ্রেত।
উপরন্তু, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ক্যাম্পাসে সংঘটিত ন্যাক্কারজনক হামলার সময়ে (দুপুর ১টা৪০ মিনিট হতে বিকেল সাড়ে ৫টা) উভয়পক্ষকে (ছাত্র ও বহিরাগত সন্ত্রাসী) নিবৃত্ত করার চেষ্টা করি এবং আমার শরীরে ২টি ঢিল বা পাটকেল লাগে। ছাত্রদের সঙ্গে আমি নিজেও আহত হই - এ ব্যাপারে সাধারণ ছাত্রদের বক্তব্য নেয়া যেতে পারে ও ঘটনার ফুটেজ দেখা যেতে পারে।
অধ্যাপক ড. শেখ শরীফুল আলম বলেন, আমাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দেয়া এবং কোনও অপরাধ বা অপকর্ম না করে অব্যাহতি দেয়ার মতো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ভুল বার্তা যাবে বলে মনে করি। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্যকে অব্যাহতি দেয়ার মতো পক্ষপাতমূলক সিদ্ধান্ত নেয়া থেকে বিরত থাকার অনুরোধ জানাচ্ছি বা অধিকতর তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানাচ্ছি।