Image description

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে চট্টগ্রামকে লেখা হয়েছে ‘চট্রগ্রাম’। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে, ছাপার ভুল। ওই প্রশ্নে পলাতক নেতাদের সম্পদের বিষয়ে বাক্য তুলে দিয়ে সেটি শুদ্ধ হয়েছে কি না, জানতে চাওয়া হয়। আজ শনিবার অনার্স (স্নাতক সম্মান) ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষার প্রথম দিনে ছিল এ ইউনিটের পরীক্ষা। পরীক্ষা চলবে ২৫ মার্চ পর্যন্ত। এ বছর রেকর্ডসংখ্যক শিক্ষার্থী এই পরীক্ষা দিচ্ছেন।

বিজ্ঞান, জীববিজ্ঞান, প্রকৌশল, মেরিন সায়েন্সেস অ্যান্ড ফিশারিজ অনুষদের সব বিভাগ নিয়ে গঠন করা হয়েছে এ ইউনিট। এই ইউনিটে ১ হাজার ১২৩ সাধারণ আসনের বিপরীতে পরীক্ষার্থী ছিলেন ১ লাখ ৯ হাজার ৮১ জন। দুপুর ১২টায় শুরু হয়ে বেলা ১টা পর্যন্ত ঢাকা, চট্টগ্রাম ও রাজশাহী এই তিন শহরে পরীক্ষাটি হয়।

এদিন ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের বাংলা দ্বিতীয়পত্র অংশে একটি প্রশ্নে পলাতক নেতাদের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। প্রশ্নটিতে ‘সপরিবারে পলাতক নেতাদের স্বনামে বেনামে বিপুল সম্পত্তি আছে’ বাক্যটি উল্লেখ করে জানতে চাওয়া হয়, এটি অর্থপূর্ণভাবে গঠিত হয়েছে কি না। তবে প্রশ্নের শুরুতে বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম ‘চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়’ লেখা হয়েছে। এটি নিয়ে অনেকেই সমালোচনা করছেন। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে, এটি মুদ্রণের ভুল। জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের এ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার সমন্বয়ক প্রকৌশল অনুষদের ডিন মুহাম্মদ সানাউল্লাহ চৌধুরী বলেন, পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে। কোথাও অসংগতির খবর তাঁরা পাননি। বানানের ভুলটা মুদ্রণজনিত।

চারটি ইউনিট ও তিনটি উপ-ইউনিট মিলিয়ে এবার আবেদন করেছেন ২ লাখ ৭১ হাজার ২৩৯ শিক্ষার্থী। এর আগে কখনো এত শিক্ষার্থী চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় বসার জন্য আবেদন করেননি। সেই হিসাবে এ বছর রেকর্ডসংখ্যক পরীক্ষার্থী নিয়ে ভর্তি পরীক্ষা হচ্ছে।

গত বছরের মতো এ বছরও ৪৮টি বিভাগ ও ৬টি ইনস্টিটিউটে শিক্ষার্থী ভর্তি নেওয়া হচ্ছে। তবে আসনসংখ্যায় পরিবর্তন এসেছে। গত বছর ৪ হাজার ৯২৬টি আসনের বিপরীতে আবেদন নেওয়া হলেও এবার মোট ৪ হাজার ৫৮৪টি আসনের বিপরীতে পরীক্ষা হবে। এর মধ্যে সাধারণ আসন ৪ হাজার ১১টি আর বাকি ৫৭৩টি আসন কোটার জন্য বরাদ্দ।

ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম ছাপা হয় ভুল বানানে।
ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম ছাপা হয় ভুল বানানে।

৮ মার্চ বি ইউনিট, ১৫ মার্চ সি ইউনিট ও ২২ মার্চ ডি ইউনিটের পরীক্ষা হবে। অন্যদিকে ১০ মার্চ বি-১ এবং ১১ মার্চ বি-২ উপ-ইউনিটের পরীক্ষা হবে। আর ডি-১ উপ-ইউনিটের পরীক্ষা হবে ২৪ মার্চ।

বিজ্ঞান অনুষদের ডিন মোহাম্মদ আল-আমিন প্রথম আলোকে বলেন, চট্টগ্রাম ছাড়াও ঢাকা ও রাজশাহী—এই দুই কেন্দ্রে পরীক্ষা হচ্ছে। ২ লাখ ৭১ হাজার ২৪০ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা দেবেন ৮৭ হাজার ৮৯৬ জন। বাকি পরীক্ষার্থীরা অন্য দুই কেন্দ্রে দেবেন।

বাকি ইউনিটে কত

কলা ও মানববিদ্যা আর শিক্ষা অনুষদভুক্ত বি ইউনিটে সাধারণ আসন রয়েছে ৮৯৬টি। এতে পরীক্ষায় বসবেন ৭৩ হাজার ১৭১ শিক্ষার্থী। ১টি আসনের বিপরীতে এতে পরীক্ষার্থী প্রায় ৮১ জন। ব্যবসায় অনুষদভুক্ত সি ইউনিটে সাধারণ আসন ৬৪০টি। এই ইউনিটে পরীক্ষায় বসবেন ২১ হাজার ৩৯৩ জন। ১টি আসনের বিপরীতে পরীক্ষার্থী ৩৩ জন।

অন্যদিকে সমাজবিজ্ঞান অনুষদের সব বিষয়, আইন বিভাগ ও জীববিজ্ঞান অনুষদের ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা আর মনোবিজ্ঞান বিভাগ নিয়ে গঠন করা হয়েছে ডি ইউনিট। এতে ৮৬২টি সাধারণ আসনের বিপরীতে পরীক্ষায় বসবেন ৬০ হাজার ৫২২ জন। ১টি আসনের বিপরীতে এই ইউনিটে পরীক্ষার্থী প্রায় ৭০ জন। নাট্যকলা, চারুকলা ও সংগীত বিভাগ নিয়ে গঠিত বি-১ উপ-ইউনিটে ১২৫টি আসনের বিপরীতে পরীক্ষায় বসবেন ১ হাজার ৯১১ জন। ১টি আসনের বিপরীতে পরীক্ষার্থী প্রায় ১৫ জন। আরবি, ইসলামিক স্টাডিজ ও পালি বিভাগ নিয়ে গঠিত বি-২ উপ-ইউনিটে আসন রয়েছে ৩২৫টি। এতে এবার পরীক্ষা দেবেন ৩ হাজার ৬৭০ জন। ১টি আসনের বিপরীতে পরীক্ষা দেবেন প্রায় ১১ জন।

শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়াবিজ্ঞান বিভাগ নিয়ে গঠিত ডি-১ উপ-ইউনিট। এতে ৪০টি সাধারণ আসনের বিপরীতে পরীক্ষায় বসবেন ১ হাজার ৪৯১ জন। ১টি আসনের বিপরীতে এতে পরীক্ষার্থী প্রায় ৩৭ জন।