
দুপুরে খাবারের পর একটু বিশ্রাম অর্থাৎ ভাতঘুম অনেকেরই প্রতিদিনকার অভ্যাস। বিশেষ করে যারা বাড়িতে থাকেন, তারা কাজের ফাঁকে শরীর ও মনকে চাঙ্গা করতে এই ঘুমকে জরুরি বলে মনে করেন। তবে এই দুপুরের ঘুম নিয়ে মতভেদও রয়েছে। কেউ বলেন, এটি স্বাস্থ্যের জন্য ভালো; কেউ আবার বলেন, এতে শরীর আরও অলস হয়ে পড়ে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দুপুরে ঘুমানো ভালো না খারাপ, তা নির্ভর করে বয়স, ঘুমের সময় এবং পরিমাণের ওপর। গবেষণায় দেখা গেছে, দুপুরে যারা নিয়মিত কিছুক্ষণ ঘুমান, তারা মানসিকভাবে বেশি চাঙা থাকেন। অপরদিকে, যারা ঘুমান না, তারা অবসাদ, খিটখিটে মেজাজ এবং মনোযোগের ঘাটতির মতো সমস্যায় বেশি ভোগেন।
একটি গবেষণায় ৬০ বছরের বেশি বয়সী ১৫৩৪ জনের মধ্যে প্রায় ৬৮০ জন দুপুরে ঘুমাননি। দেখা গেছে, তাদের মস্তিষ্ক প্রয়োজনীয় বিশ্রাম পায় না, ফলে মানসিক ক্লান্তি, রাগ এবং মনোসংযোগে সমস্যা দেখা দেয়। গবেষকরা বলছেন, বয়স ৬০ বছরের বেশি হলে দিনে অন্তত ৩০-৬০ মিনিটের ভাতঘুম উপকারী। তবে ঘুমের সময় যেন ২ ঘণ্টা না ছাড়ায়, সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।
অন্যদিকে, তরুণদের জন্য ১৫ থেকে ৩০ মিনিটের ছোট ঘুম যাকে বলা হয় ‘পাওয়ার ন্যাপ’ সারাদিনের ক্লান্তি দূর করতে কার্যকর। বেশি সময় ঘুমালে রাতে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটতে পারে। দুপুরের এই বিশ্রাম শরীরের এনার্জি পুনরুদ্ধার করে, মানসিক চাপ কমায় এবং কর্মক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। তবে এটি কখন এবং কতক্ষণ ঘুমাচ্ছেন, তার ওপর নির্ভর করে এর উপকারিতা। দুপুর ১টা থেকে ২টার মধ্যে খাওয়ার পর কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেওয়া সবচেয়ে ভালো সময় হিসেবে বিবেচিত হয়।
সবশেষে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দুপুরের ঘুম বাদ নয় নিয়ম মেনে নিলে তা শরীর ও মনের জন্য অত্যন্ত উপকারী। যাদের ব্যস্ত রুটিনে প্রতিদিন সময় হয় না, তারা অন্তত সপ্তাহে ৩ দিন এই বিশ্রামের সুযোগ নিলে সুফল মিলবে। তাই ভাতঘুমকে অলসতা না ভেবে, সঠিকভাবে কাজে লাগানোই হোক সচেতন জীবনের অংশ। সূত্র: জি নিউজ