
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুল্ক সুবিধা পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বাংলাদেশের চলমান আলোচনায় সবচেয়ে বড় ইস্যু হয়ে উঠেছে শ্রম অধিকার। ট্রাম্প প্রশাসন আগের চেয়েও কঠোর অবস্থান নিয়েছে। দেশটি চায়—বাংলাদেশ এমন আইন প্রণয়ন করুক, যার মাধ্যমে জোরপূর্বক বা বাধ্যতামূলক শ্রমে উৎপাদিত কোনো পণ্য যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি না হয়।
এছাড়া শ্রমিকদের সংগঠন গড়ার অধিকারের পাশাপাশি ইপিজেড (রফতানিমুখী অঞ্চল) গুলোতেও শ্রমিক ইউনিয়ন গঠনের অনুমতি দেয়ার দাবিও যুক্ত হয়েছে। এমনকি শ্রমিকদের জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্মসনদ বাধ্যতামূলক করা, ধর্মঘটের কারণে জেল-জরিমানার বিধান বাতিল, মালিকপক্ষের উপর জরিমানার বিধান জোরদার করারও কথা বলা হয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই শর্তগুলো শুধু শ্রমিক সুরক্ষার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নয়, এর পেছনে ভূরাজনৈতিক হিসাবও রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত চুক্তিতে স্পষ্টভাবে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে চীনকে। মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় থাকা কোনো চীনা কোম্পানি থেকে কাঁচামাল আমদানি না করার শর্ত রাখা হয়েছে বাংলাদেশের জন্য।
বিশ্লেষকদের মতে, চীনা গার্মেন্টস উপকরণ, টেলিকম বা সফটওয়্যার ব্যবহার কিংবা সামরিক পণ্যের উৎস হিসেবে চীনকে বাদ দেয়ার চাপ বাড়ছেই। অথচ এর মধ্যেই ভিয়েতনাম ২০% ও ইন্দোনেশিয়া ১৯%-এর মতো শুল্ক সুবিধা নিয়ে অনেক এগিয়ে গেছে।
এই প্রেক্ষাপটে, রাজনৈতিক সরকার হোক বা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার—বাংলাদেশকে শ্রম অধিকার এবং আন্তর্জাতিক ভূরাজনৈতিক বাস্তবতা দুটোই মাথায় রেখে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে।