Image description

মিনার রশীদ

বিএনপির অনেক সুহৃদ বর্তমান অবস্থান নিয়ে নিজেদের হতাশার কথা প্রকাশ করছেন। জামায়াতকে নিয়েও একই হতাশা কাজ করছে। বর্তমান সরকারকে নিয়েও খুব স্বস্তিতে নেই। আসলে আমরা সবাই পারফেক্ট একটা সিস্টেম চাই। এই চাওয়াটি কিছুটা অবিবেচনাপ্রসূত হলেও অপরাধ নহে।

পাঁচ তারকা হোটেলের খাবার খেতে কে না চায়? কিন্তু সেই খাবারের আশায় থেকে তো অভুক্ত থাকা যাবে না! ঘরে যা আইটেম রয়েছে সেসবই সর্বোত্তম উপায়ে রান্না করতে হবে এবং কিছু কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে, যাতে একদিন সেই উন্নতমানের খাবার পেটে পড়ে!

আমি ভালো মানুষ হয়ে কেন শয়তান কিলবিল করা রাজনীতিতে জড়াতে চাই বা তাদের রাজনীতির পক্ষে (অনিয়মের পক্ষে না) সরাসরি কথা বলি? এই প্রশ্ন আমার অনেক শুভাকাঙ্ক্ষীর, যারা আমাকে জেনুইনলি ভালোবাসেন। তাদের কাছে আমার কৈফিয়ত হলো, ভালো মানুষগুলো সে জায়গায় না গেলে খারাপ মানুষগুলো সরাবে কারা?

আমাদের সবাইকে মনে রাখতে হবে যে, সমালোচনা আক্রমণাত্মক হলে সংশোধনের রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। কাজেই সমালোচনাটি এমন হলে ভালো হয়, যাতে দলটি সংশোধনের একটা তাগিদ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রাস্তাটিও দেখতে পায়।

আপনি পছন্দ করেন আর না করেন বাংলাদেশের রাজনীতিতে সবচেয়ে আলোচিত ব্যক্তিত্ব হলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান! এখানে একটি কথা স্মরণ করিয়ে দিলে অপ্রাসঙ্গিক হবে না যে তিনিই সম্ভবত বিশ্বের একমাত্র রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, যার বক্তব্য প্রচার না করার জন্য উচ্চ আদালতের নির্দেশ ছিল! রাজনৈতিক দল বা ব্যক্তিকে হয় তেল দিই, না হয় বাঁশ দিই। এই দুটোর মাঝামাঝি আমরা লেখক, কলামিস্টরা যেমন কিছু খুঁজে পাই না। তেমনি পাঠকরাও ভিন্ন কিছু ভাবতে পারেন না।

বিএনপির অ্যাকটিং চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবি পার্টির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেছেন! তিনি যথার্থই বলেছেন, ‘চারদিকে এমন একটা আবহ তৈরি করা হচ্ছে, যেন নির্বাচন চাওয়াটাই অপরাধ। দেশের প্রতিটি দল রাজনৈতিক সংস্কারের পক্ষে। তারপরও রাজনৈতিক দলগুলোকে অবজ্ঞা করলে তা বিরাজনীতিকরণের দিকে দেশকে ঠেলে দেবে। ‘তার এই বলিষ্ঠ উচ্চারণ, ডিপলিটিসাইজড শক্তিগুলোর জন্য একটা স্পষ্ট মেসেজ। একই সঙ্গে রাজনৈতিক শক্তিগুলোর জন্য একটি সতর্কবার্তা হিসেবে কাজ শুরু করেছে।’

লন্ডনে জামায়াতের আমিরের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের পর এবি পার্টির পঞ্চম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে বিএনপিপ্রধানের এই বক্তব্য এদেশের রাজনীতিতে একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে। আদর্শিক মতভিন্নতা থাকার পরও রাজনৈতিক দলগুলো এ রকম পাশাপাশি থেকে দেশের স্বার্থে কাজ করতে পারে। আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ কথা তিনি স্পষ্ট করে উচ্চারণ করে জনগণের মনে অনেক জিজ্ঞাসার জবাব দিয়েছেন! ১৯৭১ সালে যেমন আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছিলাম, ২০২৪-এ তেমনি সেই স্বাধীনতা রক্ষা করেছি। ইতিহাসের এই দুটি বাঁককে উল্লেখ করে মওলানা ভাসানীর সেই বিখ্যাত উক্তি তিনি এখানে উচ্চারণ করেছেন- ‘পিন্ডির গোলামির জিঞ্জির ছিন্ন করেছি, দিল্লির দাসত্ব করার জন্য নয়।’ ১৯৭১, ১৯৭৫, ১৯৯০ ও ২০২৪-এ যারা নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছেন, তাদের সবার চাওয়া ছিল এক, সেই কথাটিও তিনি সবাইকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন!

জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন হলে ঝুঁকির বিষয়টিও তিনি তুলে ধরেছেন। পতিত স্বৈরাচারের দোসরদের হাতে প্রচুর অবৈধ টাকা রয়েছে। সেই টাকা খরচ করে স্থানীয় নির্বাচনে অংশ নিয়ে তারা নিজেদের একটা অবস্থান তৈরি করে ফেলতে পারে, যা সবার জন্যই ঝুঁকিপূর্ণ । জামায়াত এবং এনসিপিসহ কিছু রাজনৈতিক দল স্থানীয় নির্বাচন নিয়ে যে মনকলা খাচ্ছেন, তা মারাত্মক ভ্রম বলে পরিগণিত হতে পারে। এমতাবস্থায় ফ্যাসিবাদবিরোধী সব রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যে ঐক্যের সুর শোনা যাচ্ছে, তাকে ব্যাহত করা কারো জন্যই ঠিক হবে না!

অন্তর্বর্তী সরকারের কিছু কাজ নিয়ে তিনি সমালোচনা করলেও তা ছিল অত্যন্ত ভারসাম্যপূর্ণ। শব্দচয়নে তার সতর্কতাও অনেকের মনোযোগ কেড়েছে! প্রতিপক্ষের নাম বা কীর্তি উচ্চারণের সঙ্গে শেখ হাসিনার মুখাবয়বে যে পরিবর্তন ফুটে উঠত, এমনকি সাম্প্রতিক সময়ে ড. ইউনূসের মুখেও যে অভিব্যক্তি দেখা গেছে, তা তারেক রহমানের চেহারায় দেখা যায়নি। এই ম্যাচিওরড অভিব্যক্তি বাংলাদেশের পলিটিক্যাল কালচারে নতুন মাত্রা যোগ করতে পারে! আওয়ামী লীগের রাজনীতি অপ্রাসঙ্গিক করার ব্যাপারে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ না নিয়ে বর্তমান সরকার শুধু ব্লেইম গেম খেলছে। এ ব্যাপারে সরকারের আন্তরিকতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন!

আওয়ামী সরকার ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪-এর বিতর্কিত নির্বাচনের মাধ্যমে সংবিধান স্পষ্টতই লঙ্ঘন করেছে। সেই সংবিধান লঙ্ঘনের দায়েই এসব নির্বাচনে নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের এবং তাদের পোষ্যদের কমপক্ষে আগামী তিনটি নির্বাচনের জন্য নিষিদ্ধ করা যায়। এই সহজ কাজটি না করে শুধু বিএনপির ঘাড়ে ব্লেইম চাপানো হচ্ছে বলে তিনি ইঙ্গিত করেছেন। আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধের ব্যাপারে এনসিপি তাদের আন্দোলন জোরদার করেছে। তারেক রহমানের বক্তব্য থেকে মনে হলো, তিনিও এই আইডিয়াটির বিরোধী নন। বরং এ কাজটি বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার না করলে পরবর্তী রাজনৈতিক সরকারকে করতে হবে, সেই কথাটিও তিনি স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন!

কাজেই আমার মনে হচ্ছে, ব্লেইম গেম বাদ দিয়ে সবাই একসঙ্গে আলোচনায় বসলে একটা সমাধান হয়তোবা বেরিয়ে আসবে।

সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এবং আল্লাহতায়ালার বিশেষ সহযোগিতায় স্বৈরাচারের পতন হয়েছে। এখন শুধু নিজেদের কৃতিত্ব দেখাতে গিয়ে অপরাপর সবার অবদানকে অস্বীকার করে না বসি! ‘সবই আমরা করেছি’ এই বদরোগটি সবার মধ্যেই মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তিগুলোর মধ্যে পারস্পরিক কাদা ছোড়াছুড়ি ফ্যাসিবাদী শক্তিকে ফিরে আসার স্বপ্ন দেখায় এবং জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করে!

আমরা যদি ন্যূনতম আইনের শাসন করতে পারি এবং দুর্নীতিকে সহনীয় পর্যায়ে নামিয়ে আনতে পারি, তবে হাসিনা বা তার লেসপেন্সারদের আর ফিরে আসার সম্ভাবনা থাকবে না। এটাকে চেক দেওয়ার জন্য বিএনপির ন্যায়পাল নিয়োগের প্রস্তাবটি খুবই কার্যকর একটা পদক্ষেপ হবে বলে মনে হচ্ছে!

বাংলাদেশের সংবিধানের ৭৭ অনুচ্ছেদে ন্যায়পালের কথা বলা হলেও এখন পর্যন্ত এ পদটি গঠিত হয়নি। বিএনপি তাদের ৩১ দফার রূপরেখায় প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যে তারা সরকারে গেলে এ পদটি প্রতিষ্ঠা করবে, যাতে প্রশাসনিক দুর্নীতি, অনিয়ম ও ক্ষমতার অপব্যবহার প্রতিরোধ করা যায় এবং জনগণের কাছে সরকারি কর্মকাণ্ডের জবাবদিহি নিশ্চিত হয়।

আমি কেন ন্যায়পাল হওয়ার খায়েশ করছি?

স্কুলে থাকতে যেমন লিখতাম আমি দেশের রাষ্ট্রপতি হলে কী করব, এই খায়েশটিও তেমনি একটি নিরীহ ও নির্দোষ খায়েশ! আশা করব, আমার এই পদাঙ্ক অনুসরণ করে স্কুল-কলেজে রচনা লেখা হবে, ‘আমি কেন ন্যায়পাল হতে চাই’ শিরোনামে!

আমার এই খায়েশ কোনো ব্যক্তিগত উচ্চাকাঙ্ক্ষা নয়—এটি এক দ্রোহ, আমাদের কালেকটিভ মেমরিতে জমে থাকা অনিয়মের বিরুদ্ধে ন্যায়ের চূড়ান্ত ফয়সালা! বাংলাদেশে আপনি যদি ন্যায় খুঁজতে চান, তাহলে আপনাকে প্রথমেই প্রস্তুত থাকতে হবে প্রতিরোধের জন্য। আজ আমাদের রাষ্ট্র যেন দুর্নীতির এক মহাব্যাধিতে আক্রান্ত। ভূমি অফিস থেকে আদালত, স্বাস্থ্য খাত থেকে শিক্ষা—সবখানেই ঘুষ, লেনদেন, প্রভাব খাটানো, দলীয় আনুগত্য—এই চারটি বিষের মধ্যে কোনো না কোনোটিতে আপনি আক্রান্ত হবেনই।

আমরা কি এমন বাংলাদেশ চেয়েছিলাম? এ ব্যাপারে আমরা শুধু চিন্তার বিলাসিতা থেকে প্রশ্ন করি কিন্তু কার্যকর উদ্যোগ ও উদ্যম নিয়ে কেউ এগিয়ে আসি না।

ভারত, পাকিস্তান এমনকি আফ্রিকার ছোট দেশগুলোতেও ন্যায়পাল (Ombudsman) রয়েছে। তারা দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করে। জনগণ অবিচারের শিকার হলে সেখানে অভিযোগ করে। আমাদের সংবিধানেও এই দফা রয়েছে, কিন্তু বাস্তবে নেই।

প্রশ্ন একটাই : নেই কেন?

উত্তরটা কষ্টদায়ক—কারণ দুর্নীতিবাজরা চায় না তাদের বিচার হোক।

আমি কলাম লিখি সত্যের পক্ষে। আমার লেখনীতে উঠে আসে সেই কথাগুলো, যা বললেই অনেকে দেশছাড়া হয়, আমাকে যেমন হতে হয়েছিল। আমি বলেছি ভারত কীভাবে আমাদের রাষ্ট্রকে নিয়ন্ত্রণ করে। বলেছি কীভাবে আমলারা জনগণের পেছনে শিকারির মতো ঘুরে বেড়ায়। বলেছি কীভাবে রাজনৈতিক নেতৃত্ব দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেয়। এদেশের একজন বিবেকবান নাগরিক হিসেবে আমার দায়িত্ব এখন শুধু কলাম লেখা নয়—প্রয়োজনে রাষ্ট্রীয় কাঠামোতে ঢুকে লড়াই করা। এটাকে যদি পলিটিকস বলেন then this is my politics. শুধু ক্ষমতা হারানো পুরোনো পাপীদের পাকড়াও করলেই চলবে না, নতুন ক্ষমতা পাওয়া পাপীদের পাকড়াও করতে হবে, মন্ত্রী-এমপি, সেক্রেটারি, ডিসি-এসপির বাছবিচার করা যাবে না।

আমি চাই, দুর্নীতির অভিযোগ যেন এক মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি হয়। সরকারি কর্মকর্তাদের সম্পদের হিসাব নিয়মিত প্রকাশিত হয়। কোনো আমলা, বিচারক বা মন্ত্রী যেন নিজেকে ‘অপরাধের ঊর্ধ্বে’ মনে না করে। জনগণ যাতে ভয় না পায় অভিযোগ করতে।

ক্ষমতা নয়, দায়িত্ব চাই

আমি রাষ্ট্রপতি কিংবা প্রধানমন্ত্রীর দয়ায় নয়, বরং জনগণের দাবি ও সাংবিধানিক বিধান অনুযায়ী ন্যায়পাল হতে চাই। যেখানে আমিই জবাবদিহি চাইব রাষ্ট্রের সর্বস্তরের কাছ থেকে। আমি চাই একটি ইতিহাস সৃষ্টি করতে—যেখানে বাংলাদেশ সত্যিই ন্যায়ের দেশ হয়ে উঠবে।

একটি নতুন সকাল দরকার আমাদের

ন্যায়পাল কোনো অলঙ্কারিক পদ নয়। এটি হতে পারে দুর্নীতির বিরুদ্ধে এক নতুন রাজনৈতিক বিপ্লবের সূচনা। আমি জানি, এই পথ কণ্টকাকীর্ণ। তবে আমি প্রস্তুত।

আজ যারা হার মানতে মানতে ক্লান্ত—তাদের জন্যই এই খায়েশ, এই ডাক : ‘এদেশ বদলাতে হলে, দুর্নীতি ভাঙতে হলে—ন্যায়পাল চাই, আর চাই একজন সাহসী মানুষ যিনি এর দায়িত্ব নিতে পারেন।’

আমি প্রস্তুত।

তারেক রহমানের ৩১ দফা : দুর্নীতির বিরুদ্ধে স্পষ্ট যুদ্ধ ঘোষণা

আমার এই ন্যায়পাল হওয়ার আকাঙ্ক্ষা আজ আর ব্যক্তিগত কোনো চিন্তা নয়। কারণ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) তাদের ঘোষিত ৩১ দফা রোডম্যাপে দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধের একটি স্পষ্ট রূপরেখা দিয়েছে। দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান অত্যন্ত সচেতনভাবে ‘ন্যায়পাল প্রতিষ্ঠা’র বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করেছেন। এটি নিছক প্রতীকী কোনো ঘোষণাও নয়—এটি এক নতুন রাজনৈতিক দর্শনের সূচনা, যেখানে রাষ্ট্রের প্রতিটি স্তরে জবাবদিহির গঠনমূলক কাঠামো তৈরি করার সংকল্প রয়েছে।

যেখানে আওয়ামী লীগ সরকার গত ১৫ বছরে দুর্নীতিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছে—সেখানে বিএনপির এই ঘোষণাটি একটি বিপরীতমুখী আদর্শিক অবস্থান। এটি দেশের জনগণের কাছে একটি স্পষ্ট বার্তা যে, তারা ক্ষমতায় এলে আর ‘দুর্নীতির অবাধ সুযোগটি’ থাকবে না।

আমরা কী করব? শুধু দেখব? নাকি এগিয়ে আসব? এই শুভচিন্তা বাস্তবায়নের জন্য শুধু রাজনৈতিক দলের সদিচ্ছা যথেষ্ট নয়—এটি বাস্তবায়িত হতে হলে সচেতন নাগরিক সমাজ, বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক, আইনজীবী এবং তরুণ প্রজন্মকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। বিএনপি কিছু ভালো কথা বলেছে। এখন আমার-আপনার দায়িত্ব হলো সেই ভালো কাজটি করতে বাধ্য করা।

আমি ব্যক্তিগতভাবে এই প্রচেষ্টাকে সমর্থন করি এবং বলছি—এই মুহূর্তে বিএনপির এই শুভ উদ্যোগকে সাহসিকতার সঙ্গে জনসমক্ষে তুলে ধরতে হবে।

আমি সেই হতাশাবাদীদের দলে থাকতে চাই না, যারা বলে—‘বাংলাদেশে কিছুই হবে না, কেউই দুর্নীতি থামাতে পারবে না।’

এই মানসিকতা নিজেই দুর্নীতিকে রক্ষা করে, লালন করে।

বরং আমি চাই, সারা দেশে—পাড়ায়, মহল্লায়, মাদরাসায়, বিশ্ববিদ্যালয়ে—এই ন্যায়পাল ও দুর্নীতিবিরোধী চিন্তা নিয়ে আলোচনা চলুক, বিতর্ক হোক এবং জনগণ তাদের প্রত্যাশার কথা জানাক।

জনগণের অংশগ্রহণেই আসবে পরিবর্তন। গ্যালারিতে বসে শুধু খেলোয়াড়দের সমালোচনা করলে হবে না। নিজে মাঠে নামুন!

যদি সত্যিকার অর্থে একটি শক্তিশালী ন্যায়পাল অফিস গড়ে ওঠে—যেখানে রাষ্ট্রীয় দুর্নীতির বিরুদ্ধে সাধারণ নাগরিক সরাসরি অভিযোগ করতে পারে এবং সেই অভিযোগের প্রতিকারও পায়—তবে বাংলাদেশ বদলে যাবে।

এই বদলের রূপরেখা বিএনপি দিয়েছে। এখন সময় এসেছে আমরা যারা কলম ধরি, কথা বলি, লিখি—তারা নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করি।

আমি সে কারণেই ন্যায়পাল হতে চাই। যেন এই কাঠামো একদিন বাস্তব রূপ পায় এবং ভবিষ্যতের প্রজন্ম বলতে পারে—‘একদল মানুষ ছিল, যারা শুধু স্বপ্ন দেখেনি, সেই স্বপ্নকে বাস্তব করেছিল।’