Image description

রাজধানীর ব্যস্ততম এলাকা নিউ মার্কেট। শুক্রবার বিকেলে এখানে ফুটপাত ধরে হাঁটাচলা প্রায় অসম্ভব। ক্রেতাদের হাতে হাতে বই, কাপড় কিংবা বাসনপত্র ভর্তি ব্যাগ। রিকশাগুলো ধীরগতিতে এগোয়। ফুটপাতে বসে নানা ভাজাপোড়ার দোকান।

এ ছাড়াও ভেতরের সরু গলিগুলোতে থাকে বেশ ভিড়। সবাই ভিড়, কোলাহল আর ধুলোবালি উপেক্ষা করে বাজেট-বান্ধব পণ্যের সন্ধানে ব্যস্ত। আর এরইমধ্যে এখানে দোকানি আর ক্রেতাদের মধ্যে দরকষাকষি চলতেই থাকে।

নিউ মার্কেটে কেনাকাটা অনেকের কাছে এক ধৈর্যের পরীক্ষা। অনেকের কাছে নিউ মার্কেট মানে পরম্পরা, স্মৃতির ছোঁয়া আর ভরসার জায়গা। এটি এমন এক মার্কেট, যেখানে প্রায় সবকিছুই পাওয়া যায়।

এদিকে ৭৩ বছর আগে তৈরি হলেও ঢাকা নিউ মার্কেট এখনো শহরের অন্যতম বাণিজ্যিক কেন্দ্র। রাজধানীতে বসুন্ধরা সিটি ও যমুনা ফিউচার পার্কের মতো আধুনিক শপিংমল থাকলেও প্রতিদিন এখানে হাজারো মানুষ আসেন।

আগুন, জলাবদ্ধতা, যানজট কিংবা কখনো কখনো ক্রেতা-দোকানিদের ছোটখাটো সংঘাতও মানুষের আগ্রহ কমাতে পারেনি। নিউ মার্কেট জনপ্রিয় হওয়ার মূল কারণ হলো এর সুবিধাজনক অবস্থান, সাশ্রয়ী দাম, বিশ্বাসযোগ্যতা আর ঐতিহ্য।

ঢাকা নিউ মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতি জানিয়েছে, বর্তমানে এখানে ৪৪৪টি দোকান আছে। যেখানে তিন হাজার মানুষ কাজ করেন। এই মার্কেটে বার্ষিক লেনদেনের পরিমাণ ৫০০ কোটি টাকারও বেশি।

কথা হচ্ছিল ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সাংবাদিকতা বিভাগের সাবেক প্রভাষক সাকিব মৃধার সঙ্গে। তিনি নিউ মার্কেটের আকর্ষণ খুঁজে পান দাম ও নির্ভরযোগ্যতার মধ্যে।

এই ক্রেতা বলেন, 'আমি গত ২০ বছর ধরে এখানে আসছি।' তার কেনাকাটার তালিকায় থাকে ম্যাগাজিন, ব্যাগ, বাসনকোসন, মশলা, স্টেশনারি ও অন্যান্য গৃহস্থালী সামগ্রী।

হাজারীবাগে বাড়ি থাকলেও সাকিব এখন বসবাস করেন সাভারে। নিজের বাড়িতে যাওয়ার সময়ে প্রায়ই তিনি নিউ মার্কেটে ঢুঁ মারেন। তিনি বলেন, নির্দিষ্ট প্রয়োজন থাকলে নিউ মার্কেটই সবচেয়ে ভালো।

স্থানীয় দোকান বা অনলাইনেও পণ্য পাওয়া যায়। তবুও, আমার মনে হয় এখানে আসা লাভজনক, বলেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, 'এক মাস আগে এখান থেকে ৪৮০ টাকায় একটি সার্টিফিকেট ফাইল কিনেছিলাম। অন্য জায়গায় সেটি এক হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হয়। আবর্জনার ব্যাগের কেজি ২৪০ টাকা, মিরপুর বা সাভারে ২৬০ টাকা, মানও এক নয়।

"শ্রীলঙ্কান দারুচিনির কেজি এখানে এক হাজার ২৬০ টাকা, মিরপুরে এক হাজার ৬০০ টাকা, আর সাভারে পাওয়া যায় না।'

তার বিশ্বস্ততা কেবল সস্তা দামের জন্য নয়, ব্যক্তিগত সম্পর্কের কারণেও। 'আমি প্রতিবারই বিশ্বস্ত দোকানগুলোয় যাই। তারা কখনো খারাপ বা ত্রুটিপূর্ণ পণ্য বিক্রি করবে না। অনলাইন দোকান নিয়ে এমনটি বলা যায় না।

"আমি এখানকার লোকেদের সঙ্গে সম্পর্কটা খুব পছন্দ করি। আমি তাদের দুই দশক ধরে চিনি। আমরা কথা বলি, একে অপরের কথা শুনি। এটি গুরুত্বপূর্ণ।'

কিন্তু কিছু অসুবিধাও আছে। নিউ মার্কেট কেনাকাটার সবচেয়ে আরামদায়ক অভিজ্ঞতা দেয় না।

'এখানে সবসময় ভিড় থাকে, বিশৃঙ্খলা থাকে, সবাই বেশ জোরে কথা বলে, দর-কষাকষি চলে। পেশাদারত্বের অভাবও আছে। যাতায়াত কঠিন। তবুও, আপনার যা কিছু প্রয়োজন, সবই এখানে পাওয়া যায়। যেকোনো দিন, প্রতিদিনই,' বলেন তিনি।

নিউ মার্কেটের নিয়মিত ক্রেতাদের বড় অংশই আসে আশপাশের স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েট, ইডেন মহিলা কলেজ, ঢাকা কলেজ, ঢাকা সিটি কলেজের কাছেই এর অবস্থান। এ কারণেই এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের কাছে নিউ মার্কেট জনপ্রিয়তা পেয়েছে।

এই শতাব্দীর প্রথম দশকের শুরুর দিকে শিক্ষার্থী ছিলেন হাসান বাসির। তিনি মনে করেন, তখন নিউ মার্কেট ছিল স্বাধীনতার জায়গা, যেখানে ভালোবাসা প্রস্ফুটিত হয়।

সেসময় খুব বেশি জায়গা ছিল না, যেখানে তরুণ-তরুণীরা বিনা খেয়ালে যেতে পারতেন, বলেন তিনি।

নিউ মার্কেটের খাবারের জায়গাগুলো তাদের স্বস্তির সুযোগ দিত। সেখানকার লোকজন অতিথিপরায়ণ ছিলেন। তাদের সঙ্গে এখনো আমার সম্পর্ক আছে, বলেন তিনি।

মুখে হাসি নিয়েই তিনি বলছিলেন, 'আমার তখনকার প্রেমিকা অনেকদিন আগে চলে গেছে, তবুও আমি এখনো সেখানকার লোকেদের চিনি। যতবারই সেখানে যাই, যেন পুরোনো সময়ে ফিরে যাই। তখন এত ভিড় ছিল না। ঘণ্টার পর ঘণ্টা ঘুরে-ফিরে, খেয়ে-দেয়ে সময় কাটিয়ে দেওয়া যেত।' 

শিক্ষার্থীদের নিউ মার্কেটে আসার কারণটা সহজ। বই, কলম, কাপড়, গহনা, এমনকি তাদের হোস্টেল সামগ্রীও সেখানে সাশ্রয়ী দামে পাওয়া যায়। শুধুমাত্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েই প্রায় ৫০ হাজার শিক্ষার্থী আছেন। পার্শবর্তী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর কারণেই নিউ মার্কেটে তরুণ ক্রেতাদের ধারা সবসময় একই থাকে। আর তাই এখানকার চাঞ্চল্য সবসময় বজায় থাকে।

নিউ মার্কেটের অনেক দোকানির কাছে ব্যবসা হলো পরম্পরা। এই ব্যবসা তারা পূর্বসূরিদের কাছ থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছেন। এক নম্বর গেটের কাছে সিরাজ ম্যাগাজিন সেন্টারের স্বত্বাধিকারী জীবন শাহাদাত। ১৯৯৯ সাল থেকে তিনি তার বাবার এই দোকান চালিয়ে আসছেন। তার মতে, ব্যবসা টিকে থাকার মূল কারণ হলো বিশ্বস্ততা।

তিনি বলেন, 'ডিজিটাল মিডিয়ার কারণে গল্পের বই ও ম্যাগাজিনের চাহিদা কমেছে, কিন্তু নিয়মিত, বিশ্বস্ত পাঠকেরা এখনও ফিরে ফিরে আসেন। দুর্গাপূজার সময় একজন তার ৮৫ বছর বয়সী মায়ের জন্য সব শারদীয় ম্যাগাজিন অর্ডার করেন। মানুষ এখনও মুদ্রিত পাঠসামগ্রী পছন্দ করেন।'

অর্থনৈতিক চাপের মধ্যেও তার এই দোকান মাসে প্রায় এক লাখ টাকা আয় করে। এই চিত্র ঢাকার প্রিন্ট মিডিয়ার চ্যালেঞ্জ ও টিকে থাকার লড়াই দুই-ই তুলে ধরে।

নিউ মার্কেটের প্রাণবন্ত এক বৈশিষ্ট্য হলো দর-কষাকষি। এখানে ক্রেতা-বিক্রেতার তীব্র দর-কষাকষি যেন এক ধরনের খেলা, যা সবাই উপভোগ করেন। অনেকেই গর্ব করে বলেন কীভাবে তারা সফলভাবে ভালো দামে জিনিসপত্র কিনতে পারেন। আর সেই মুহূর্তের উত্তেজনা ও আনন্দই এই নিউমার্কেটের এক অদ্বিতীয় আকর্ষণ।

সাকিব বলছিলেন, 'আপনাকে বুঝতে হবে কীভাবে দর-কষাকষি করতে হয়। যদি পণ্য ও এর দাম নিয়ে যথাযথ ধারণা না থাকে, তবে আপনি ঠকতে পারেন। এটা অবশ্য সারা বিশ্বে একইরকম।

"আমি মালয়েশিয়া, ভারত, থাইল্যান্ড, দক্ষিণ কোরিয়ায় গিয়েছি—সব জায়গায় দর-কষাকষি চলে।'

বিক্রেতারা চান ক্রেতারা দর-কষাকষি করুক; এটি তাদের কাছে স্বাভাবিক। আব্দুল কাদের নামে এক বস্ত্র বিক্রেতা বলেন, 'দাম কখনো চূড়ান্ত নয়। আমরা সবসময় দর কষাকষির সুযোগ রাখি। যদি আপনি একেবারেই না মানেন, ক্রেতারা ক্ষেপে যান। যদি খুব দ্রুত মেনে নেন, ক্রেতারা ভাবেন পণ্যে ত্রুটি আছে।'

এই মার্কেটের বিশেষ সংস্কৃতি আর সহজলভ্যতার কারণে মানুষ বারবার এখানে ফিরে আসার আকর্ষণবোধ করে।

উৎসবের সময় অনেক মধ্যবিত্ত পরিবারের জন্য এই নিউ মার্কেট এক অপরিহার্য গন্তব্য। বাবা-মায়েরা পোশাক, প্রয়োজনীয় আনুষঙ্গিক ও উপহারসামগ্রী খুঁজে দর-কষাকষি করেন, আর শিশুরা বইয়ের দোকান ও খেলনার দোকানে ঘুরে বেড়ায়। বৈচিত্র্যের কারণে শিক্ষার্থী থেকে পেশাজীবী—প্রত্যেকেই নিজের বাজেট অনুযায়ী এখানে কিছু না কিছু খুঁজে পেয়ে যান।

ভালো মানের পণ্যই ক্রেতাদের নিউ মার্কেটে টানে। এ কারণে তারা বারবারই এখানে আসেন। ২৫ বছর ধরে ব্যবসায় যুক্ত মোহাম্মদ সেন্টু গাড়ির আনুষঙ্গিক, প্লাস্টিকের জিনিস, জন্মদিনের সরঞ্জাম ও স্টেশনারি বিক্রি করেন।

তার মতে, নিউ মার্কেটে বিত্তশালী থেকে মধ্যবিত্ত সবাই আসেন।

তিনি বলেন, 'অধিকাংশ পণ্য আসে চকবাজার ও গুলশান থেকে, কিছু আসে এজেন্টের মাধ্যমে, চীনা পণ্য। আপনাকে জানতে হবে আপনার পণ্য আসে কোথা থেকে এবং আপনার গ্রাহক কারা।'

নিউ মার্কেটে পেন্টেলের একটি শোরুম নতুন খোলা হয়েছে। এর ব্যবস্থাপক রাসেল রানা বলেন, আমরা সরাসরি জাপানি স্টেশনারি ঢাকায় আনি। আগে ক্রেতারা পেন ও ইরেজার বিদেশ থেকে আনতেন, এখন তারা একই পণ্যের জন্য আমাদের শোরুমে আসেন।

এমনকি দূরের ক্রেতারাও বিরল পণ্য পাওয়ার জন্য এখানে আসেন। শোরুম খোলার পর বিক্রি দ্বিগুণ হয়েছে, বলেন তিনি।

সিরামিক পণ্যের বিক্রেতা মোহাম্মদ অনিক খান নিউ মার্কেটের আরেকটি দিক তুলে ধরলেন।

তিনি প্রতিদিনের ব্যবহারের বাসনপত্র যেমন বাটি, প্লেট, মগ ইত্যাদি বিক্রি করেন। প্রতিটি মাত্র ১০০ টাকায় তিনি বিক্রি করেন, যা মধ্যবিত্ত পরিবার, শিক্ষার্থী এবং হোস্টেলের শিক্ষার্থীদের সাধ্যের মধ্যে।

নিউ মার্কেটে নতুন হলেও অনিক ক্রেতাদের কাছ থেকে ইতিবাচক সাড়া পেয়েছেন। তিনি মনে করেন, এর কারণ হলো বাজেট-বান্ধব দামের সঙ্গে মানসম্মত পণ্য। এ কারণেই ক্রেতারা বারবার ফিরে আসেন।

এখানেই গহনারও বাজার আছে। নিউ মিলন ও হাসেম জুয়েলার্সের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ আল আমিন ১২ বছর ধরে বিক্রয়সেবা দিচ্ছেন। তিনি বলেন, 'অধিকাংশ ক্রেতাই আবার আসেন, কারণ আমরা সততা ও পণ্যের মান বজায় রাখি।'

দাদির বয়সী একজন একবার এখানে কেনাকাটা করেছিলেন। এখন তার নাতিও এখানকার ক্রেতা, বলেন তিনি।

স্বর্ণের দাম বেড়ে যাওয়ায় ব্যবসা কঠিন হয়ে গেছে। বিক্রি প্রায় ৫০ শতাংশ কমেছে। কিন্তু মানুষ আমাদের বিশ্বাস করে, আর সেটিই তাদের ফিরে আসার কারণ।'

শাড়ি নিউ মার্কেটের অন্যতম জনপ্রিয় পোশাকসামগ্রী।

জেসিমুন শাড়ির স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ খালেদ মামুন বলেন, 'আমাদের এখানে কটন, টাঙ্গাইল এবং জামদানি শাড়ি আছে। দাম ৮০০ থেকে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত। ক্রেতারা জানেন, আধুনিক শপিংমলের তুলনায় তারা এখানে যথাযথ দামে শাড়ি পাবেন।'

এখানে ইমিটেশনের গহনারও চাহিদা আছে।

প্রাচীন শৈলীর গহনা বিক্রির দোকানের ব্যববস্থাপক রাব্বি হোসেন বলেন, 'শিক্ষার্থী, গৃহিণী, পেশাজীবী— সবাই আসেন ডিজাইন, মান এবং বিশ্বস্ততার জন্য। দৈনিক বিক্রি প্রায় ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা। গ্রাহক বাড়তে থাকায় আমরা দ্বিতীয় শাখা খুলেছি।'

অভিজাত থেকে শুরু করে সবার জন্য নিউ মার্কেট

নিউ মার্কেট প্রথম চালু হয় ১৯৫২ সালে। ১৯৫৪ সালে পুরোপুরিভাবে এর কাজ শেষ হয়।

তখন এটি ঢাকার অভিজাতদের জন্য তৈরি করা হয়েছিল। ত্রিভুজাকৃতির আধুনিক নকশা, ৩৫ একর বিস্তীর্ণ এলাকা এবং ৪৪০টি দোকান নিউ মার্কেটকে পুরান ঢাকার সরু গলিগুলোর একটি আধুনিক বিকল্পে পরিণত করেছে।

শুরুতে মাত্র ২৫ থেকে ৩০টি দোকান খোলা থাকায় ঘুরে দেখার পর্যাপ্ত স্থান ছিল। মূলত আমদানি করা পণ্য, বিলাসবহুল সামগ্রী এবং পোশাকই এখানে পাওয়া যেত।

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নিউ মার্কেটের রূপ পাল্টেছে। আশির দশকে এটি মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোর দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় সামগ্রী প্রাপ্তির কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়। এখন শিক্ষার্থী থেকে ব্যবসায়ী, মধ্যবিত্ত থেকে অভিজাত-সবাই এখানে আসেন।

বিশ্ববিদ্যালয়, অফিস এবং হাসপাতালের কাছাকাছি অবস্থানের কারণে এখানে সর্বদা মানুষের ভিড় থাকে।

আশেপাশের গাউছিয়া, গ্লোব, চন্দ্রিমা, নূরজাহান ও নীলক্ষেত বুক মার্কেট এলাকাটিকে একটি বড় শপিং হাবে পরিণত করেছে, যেখানে প্রায় সব জিনিসই সস্তায় পাওয়া যায়।

ঢাকায় এখন অনেক শপিং মল। আর প্রযুক্তির যুগে আছে নানা অনলাইন শপিং প্ল্যাটফর্ম। কিন্তু নিউ মার্কেটের আবেদন আলাদা। ক্রেতারা চামচ থেকে শুরু করে পুরো ডিনার সেট, পুরোনো বই কিংবা নতুন ফ্যাশনের সামগ্রী— সবই এখানে পান।

ইচ্ছে হলে তারা ঘণ্টার পর ঘণ্টা ঘুরেও দেখতে পারেন, কিংবা মিনিটের মধ্যেই প্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে পারেন। শিক্ষার্থী, গৃহিণী এবং ছোট ব্যবসায়ীরাও এখানে তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী কিছু না কিছু পেয়ে যান।

ঢাকার বাসিন্দাদের জন্য নিউ মার্কেট শপিং কমপ্লেক্সের চেয়েও বেশি কিছু। এটি এমন এক জায়গা, যেখানে ঐতিহ্যের ধারা বয়ে চলে। অনেকে শিক্ষার্থী জীবনে আসা শুরু করেন। কর্মক্ষেত্রে চলে গেলেও তারা বারবার ফিরে আসেন।

এখানেই অনেক পরিবার বিভিন্ন প্রজন্মের জন্য স্কুলের ইউনিফর্ম থেকে বিয়ের শাড়ি পর্যন্ত সবকিছু কিনেছে। কোলাহল, বিশৃঙ্খলা কিংবা অব্যবস্থাপনা থাকা সত্ত্বেও নিউ মার্কেট অনন্য। ৭৩ বছরেও এর জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়েনি।