
পতিত হাসিনার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে। প্রসিকিউটররা হাসিনার বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছেন যে, তিনি গত বছরের বিক্ষোভ চলাকালীন সময়ে বিক্ষোভকারীদের উপর হামলার হুকুম দিয়েছেন।
গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগের বিদায়ের পর বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, হাসিনা ও তার দলের অন্যান্য মূল আসামিদের বিচারের মুখোমুখি করবেন।
মোহাম্মদ জামজুমের উপস্থাপনায় আল জাজিরার ইনসাইড স্টোরি অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ ও স্বাধীন দক্ষিণ এশিয়া গবেষক আব্বাস ফাইয, ও.পি. জিন্দাল গ্লোবাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শ্রীরাধা দত্ত এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সহ-সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা।
গবেষক আব্বাস ফাইয বলেন, বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনাকে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত করেছে। আর গত বছরের জুলাই মাসে হাসিনার বিরুদ্ধে বিক্ষোভকারীদের ওপর কঠোর দমন অভিযান শুরু করে তিনি। জাতিসংঘের মতে, সে সময় প্রায় ১, ৪০০ মানুষ নিহত হয়েছে। শেখ হাসিনার শাসনামলে যত অবিচার ও নির্যাতন হয়েছে তার সবই বিচারের অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। সেই সঙ্গে হাসিনাসহ সব অপরাধীদের কঠিন বিচার হওয়া উচিত। তবে সবই হতে হবে আন্তর্জাতিক আইন অনুসরণ করে।
শ্রী রাধা বলেন, ভারতের পক্ষ থেকে শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে প্রত্যর্পণ করার সম্ভাবনা কম। যদিও দুই দেশের মধ্যে একটি প্রত্যর্পণ চুক্তি রয়েছে, তবুও ভারত রাজনৈতিক বাস্তবতা বিবেচনায় সিদ্ধান্ত নিতে পারে। ভারতের দৃষ্টিতে বাংলাদেশে একটি নিরপেক্ষ বিচারপ্রক্রিয়া চলছে না এবং পরিস্থিতি পক্ষপাতদুষ্ট-এই যুক্তিতেই তারা প্রত্যর্পণ থেকে বিরত থাকতে পারে।
রুমিন বলেন, বিচারপ্রক্রিয়া এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। বাংলাদেশে সাধারণত একটি মামলা শেষ হতে বহু বছর সময় লাগে। তাই এখনই চূড়ান্ত মন্তব্য করা কঠিন। শেখ হাসিনা ও তার সহযোগীদের দেশে ফিরিয়ে আনা হবে কিনা, সেটাই এখন বড় প্রশ্ন। কারণ, তারা অধিকাংশই ভারতে অবস্থান করছেন।
বিশ্লেষকদের মতে, শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচার করার প্রক্রিয়া কেবল রাজনৈতিক বা কূটনৈতিক বিষয় নয়, এটি একটি আন্তর্জাতিক আইনগত ও মানবাধিকারের বিষয়েও পরিণত হয়েছে।