Image description

বাংলাদেশ নারী ফুটবলে নতুন এক সংকটের জন্ম হয়েছে। মাঠের লড়াইয়ে দক্ষিণ এশিয়া কাঁপানো সাফজয়ী মেয়েরা এবার লড়ছেন নিজেদের আত্মসম্মানের জন্য। কোচ পিটার বাটলারের বিরুদ্ধে অসম্মানজনক আচরণ, কটূক্তি এবং মানসিক চাপে রাখার অভিযোগ এনে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন নারী ফুটবলাররা। সরাসরি জানিয়ে দিয়েছেন, এই কোচের অধীনে তারা আর খেলতে চান না!

বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) বাফুফে ভবনের নিচে দাঁড়িয়ে ক্যামেরার সামনে কান্নাজড়িত কণ্ঠে অধিনায়ক সাবিনা খাতুন বলেন, ‘আমাদের কিছু প্রমাণের নেই। এটা আত্মসম্মানের বিষয়। আমরা দেশের জন্য খেলি, কিন্তু সেই (কোচ) আমাদের নিয়ে কটূক্তি করে! মেয়েদের জন্য এটা মেনে নেওয়া অসম্ভব।’

নারী ফুটবলের অন্যতম অভিজ্ঞ খেলোয়াড় কৃষ্ণা রানী সরকার জানান, কোচের কথাবার্তায় তারা নিয়মিত মানসিক চাপে থাকেন। ‘আমরা তো খেলোয়াড়, একটু ক্যাজুয়াল থাকতেই পারি। কিন্তু আমাদের চলাফেরা নিয়ে কটূক্তি করা হয়, যা মানসিকভাবে ভেঙে দেয়।’

জাতীয় দলের গোলরক্ষক রূপ্না চাকমা, যিনি দক্ষিণ এশিয়ার সেরা গোলরক্ষকের স্বীকৃতি পেয়েছেন, তাকেও আক্রমণ করেছেন কোচ! অভিযোগ উঠেছে, বাটলার তার উচ্চতা নিয়ে ব্যঙ্গ করেছেন। শুধু তাই নয়, ব্যক্তিগত জীবনেও অযাচিত হস্তক্ষেপ করছেন তিনি।

সাফ ফাইনালের নায়িকা ঋতুপর্ণা চাকমা বলেন, ‘আমরা এখন প্রাপ্তবয়স্ক। ছুটির দিনে কোথাও ঘুরতে যেতেই পারি। কিন্তু কোথায় গেলাম, কার সঙ্গে সময় কাটালাম—এসব নিয়েও তিনি চাপে রাখেন!’

জাতীয় দলের ডিফেন্ডার মাসুরা পারভীন জানান, কোচের এমন আচরণে ফুটবলারদের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙেছে। তিনি বলেন, ‘আমরা কিন্তু একবারও কাউকে বলিনি আমরা অনুশীলন করব না। আমরা বলেছি ওই কোচের অধীনে করব না। কোচ যখন দেশের বাইরে ছিলেন, তখন তার শিডিউল মাফিক আমরা অনুশীলন করেছি। আমরা কিরন আপাকে বলেছি, যতদিন পর্যন্ত সভাপতি দেশে না আসেন ততদিন পর্যন্ত এভাবেই চলুক।’

অভিজ্ঞ মিডফিল্ডার মারিয়া মান্ডা জানান, সাফ চলাকালীন কোচ তার টুপি পরার বিষয়টি নিয়ে আপত্তি তোলেন এবং অনুশীলন থেকে বাদ দেওয়ার হুমকি দেন। মারিয়া বলেন, ‘আমরা এতদিন জানতাম, মাঠের পারফরম্যান্সটাই আসল। কিন্তু তার সময় সবকিছু বদলে গেছে!’

নারী ফুটবল দলের এই বিদ্রোহ সামনে বড় সংকট ডেকে আনতে পারে। দল ও খেলোয়াড়দের ভবিষ্যৎ এখন নির্ভর করছে বাফুফের সিদ্ধান্তের ওপর।