Image description

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, নেতৃত্বের ফয়সালা আসমান থেকেই আসে, জমিনে বসে কেউ তা ঠিক করতে পারে না। যারা নেতৃত্ব গড়ে দিতে চায়, তারা শত চেষ্টা করলেও স্থানীয় নেতৃত্ব নির্ধারণ করতে পারবে না; আমরা কেবল উসিলা।

বুধবার (৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৭টার দিকে কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নের ছোটনা গ্রামের একটি পথসভায় তিনি এসব কথা বলেন।

হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, নির্বাচনে আমি ১০ ভোটও পেলেও দেবিদ্বার ছেড়ে যাব না। হেরলেও আমি দেবিদ্বারের মানুষের সঙ্গে থাকব। দেবিদ্বার আমার অস্তিত্ব, খানকার মাঠ-ঘাট, আলো-বাতাস আমার অক্সিজেন।

তিনি আরও বলেন, যুগ যুগ ধরে এই দেশের নেতৃত্ব গড়েছে খেটে খাওয়া মানুষ। যারা শ্রমিক, যারা তার মতো রাজমিস্ত্রি, কাঠমিস্ত্রি ছিলেন, তারাই নেতা তৈরি করেছেন। অথচ সমাজের উচ্চশ্রেণির কিছু মানুষ এসব পরিশ্রমী মানুষকে মানুষই মনে করেন না, কামলা বলে অপমান করেন। আমি সেই অবহেলিত, বঞ্চিত মানুষের সন্তান হিসেবে নির্বাচনে দাঁড়িয়েছি। আজ থেকে আমার দায়িত্ব আপনাদের। এখানে মায়েরা আছেন; তাদের দোয়ার শক্তিতেই আমরা এগিয়ে চলেছি। জুলাই আন্দোলনের সময় এই মায়েরা জায়নামাজে দাঁড়িয়ে আমাদের জন্য দোয়া করেছিলেন; সেই মায়েদের দায়িত্বও আমার। যারা মাঠ-ঘাটে কাজ করে সংসার চালিয়েছেন, যারা প্রবাসে থেকে পরিবার চালিয়েছেন, আমার বাবার মতো রাজমিস্ত্রি, কাঠমিস্ত্রি হিসেবে জীবন কাটিয়েছেন — যাদের কোনো বংশ পরিচয় নেই এবং যাদেরকে উঁচু শ্রেণির মানুষ মানুষই স্বীকৃতি দেয় না, আজ আমি তাদের প্রতিনিধি হয়ে আপনাদের সামনে দাঁড়িয়েছি।

হাসনাত বলেন, আপনারা যাকে পছন্দ করবেন তাকেই ভোট দেবেন, কিন্তু ভোটকে ঘরে ঘরে বিভেদ সৃষ্টি করতে দেবেন না। ভোট একদিন, কিন্তু বিভেদ দীর্ঘসময় সহিষ্ণুতায় রূপ নেবে।

তিনি আরও জানান, এখানে অনেক মা-বোন উপস্থিত আছেন। এক মা তাকে হাতে কিছু টাকা দিয়ে বলেছেন, “বাবা নির্বাচনে খরচ করো।” এ ধরনের সমর্থনই তার শক্তি-সাহস। বিদেশে থাকা অনেক ভাই ফোন করে বলেছেন, টাকা নিয়ে চিন্তা করবেন না, নির্বাচন চালাতে হবে। হাসনাত বলেন, “মাগো, আপনাদের দেওয়ার মতো আমার কিছু নেই; আমি নিতে এসেছি। যেখানেই যাই, মায়ের হাতে মাথায় হাত বুলিয়ে নির্বাচনে হারি বা জিতি তাতে কোনো দুঃখ নেই।”

 

এর আগে বুধবার সকাল ৭টা থেকে সুলতানপুর ইউনিয়নের গজারিয়া এলাকা থেকে পদযাত্রা শুরু করেন হাসনাত আবদুল্লাহ। দিনব্যাপী তিনি সুলতানপুর ও মোহনপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের পথঘাট ও বাড়ি বাড়ি ঘুরে সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলেন।