আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে খুলনা-১ আসনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী হতে যাচ্ছেন কৃষ্ণ নন্দী। তবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) আসনটিতে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কোন প্রার্থী ঘোষণা করেনি। দাকোপ ও বটিয়াঘাটা উপজেলা নিয়ে গঠিত খুলনা-১ আসনে জামায়াতের প্রার্থীকে টেক্কা দিতে বিএনপির মনোনয়ন পেতে যাচ্ছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রদল নেতা জিয়াউর রহমান পাপুল বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
জানা যায়, পাপুল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি এবং ৯০’র ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে হাজী মুহাম্মদ মুহসীন হল ছাত্র-সংসদের নির্বাচিত ক্রীড়া সম্পাদক ছিলেন। তিনি পূর্ব থেকেই দল ও দলের বাইরে বিশাল জনগোষ্ঠীকে সেবা দিয়ে আসছেন। দলের ক্রান্তিলগ্নে তিনি নেপথ্যে থেকে সব সময়ই দলকে আর্থিক-মানসিক-মানবিক সহযোগিতা করেন। তরুণ ও সক্রিয় নেতা হিসেবে দলের মধ্যে ইতিমধ্যেই প্রশংসিত জিয়াউর রহমান পাপুল। দীর্ঘদিন ধরে দলীয় নীতি ও জনমুখী কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকার কারণে তিনি এলাকায় ব্যাপক সমর্থন অর্জন করেছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এই ছাত্রনেতা তার জনপ্রিয়তার কারণে খুলনা-১ আসনে মনোনয়ন পেতে যাচ্ছেন। সবকিছু ঠিক থাকলে জামায়াতের শক্তিশালী প্রার্থী কৃষ্ণ নন্দীর বিরুদ্ধে সাবেক ছাত্রনেতা পাপুলও শক্তিশালী প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
স্থানীয় রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, জামায়াত প্রার্থী কৃষ্ণ নন্দী শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী হলেও জিয়াউর রহমান পাপুলের স্থানীয় প্রভাব, পরিচিতি এবং সাধারণ মানুষের সঙ্গে নিবিড় সংযোগ তাকে টেক্কা দিতে সক্ষম। পাপুলের প্রতি এলাকার সমর্থন ইতিমধ্যেই দৃঢ়। এটি কাজে লাগিয়ে নির্বাচনী মাঠে একটি শক্তিশালী দিক হিসেবে কাজ করবে বিএনপি। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, যদি কেন্দ্রীয় বিএনপি আনুষ্ঠানিকভাবে তার মনোনয়ন নিশ্চিত করে, তবে খুলনা-১ আসনে দলের নেতাকর্মীরা প্রচারণায় আরও উদ্দীপনা এবং উৎসাহের সঙ্গে অংশগ্রহণ করবেন। এটি শুধু নির্বাচনী শক্তি বাড়াবে না, বরং এলাকার জনগণের মধ্যে স্বচ্ছ নীতি ও উন্নয়নের প্রতি আস্থা আরও দৃঢ় করবে।
বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী এই তরুণ নেতা এরই মধ্যে নিজের অবস্থান জানান দিতে শুরু করেছেন। আজ বুধবার (২৬ নভেম্বর) এক বিশাল শোডাউন দিয়েছেন তিনি। একইদিন দাকোপের এমএম কলেজ মাঠে অনুষ্ঠিত জনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পাপুল।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাবেক ছাত্রদল নেতা জিয়াউর রহমান পাপুল বলেন, সঠিক নেতৃত্বের অভাবে দাকোপ-বটিয়াঘাটায় কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন হয়নি। অপরিকল্পিত উন্নয়নের মাধ্যমে লুটপাট ও সরকারি অর্থ অপচয় করা হয়েছে। যা জনকল্যাণে কোন কাজে আসেনি। সেজন্য এ জনপদের মানুষের ভাগ্যের কোন উন্নয়ন ঘটেনি।
তিনি আরও বলুন, আমি দাকোপ উপজেলাকে একটি আধুনিক উপজেলা হিসাবে গড়ে তুলতে চাই। খুলনা শহর থেকে দাকোপের নলিয়ান পর্যন্ত ফোর লেন সড়ক নির্মাণের মাধ্যমে এ উপজেলাকে মূল শহরের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত করতে চাই। আধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্পন্ন পর্যটন কেন্দ্র স্থাপনের মাধ্যমে দাকোপে পর্যটন শিল্পের বিকাশ সাধন করা হবে। এই এলাকার বেকারত্ব সমস্যা দূরীভূত হবে।
৯০-এর ডাকসু নির্বাচনে হাজী মুহাম্মদ মুহসীন হলের নির্বাচিত ক্রীড়া সম্পাদক পাপুল বলেন, আধুনিক পদ্ধতিতে চাষাবাদের মাধ্যমে ফসল উৎপাদন বৃদ্ধিতে আমরা কাজ করবো। উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে পণ্য বাজারজাতকরণ সহজ হবে। কৃষক ন্যায্য মূল্য পাবে। ফলে বদলে যাবে এ জনপদের অর্থনীতি।
দাকোপে শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার প্রচেষ্টার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ উপজেলা অপার সম্ভাবনাময় একটি জনপদ। মংলা বন্দর এ উপজেলা থেকেই যাত্রা শুরু করে। তখন এটি চালনা বন্দর নামে পরিচিত ছিল। সকল সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে একটি অসাম্প্রদায়িক ও আধুনিক উপজেলা হিসাবে দাকোপকে প্রতিষ্ঠিত করাই আমার মূল লক্ষ্য।