Image description

মানিকগঞ্জে বিএনপি নেতার মেয়েকে ধর্ষণ, ভিডিও ধারণ ও ব্ল্যাকমেইলের অভিযোগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখা ছাত্রদলের সাবেক সদস্য সচিব এবং সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আমান উল্লাহ আমান বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ৫ নভেম্বর (বুধবার) মানিকগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। আদালত মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছে পিবিআইকে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্ত আমান উল্লাহ আমান নিজেকে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও জাতীয় পর্যায়ের নেতা হিসেবে পরিচয় দিয়ে ওই মহিলাদল নেত্রীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ান। পরে প্রেমের প্রলোভন দেখিয়ে বিয়ের আশ্বাস দেন। একপর্যায়ে বিভিন্ন স্থানে নিয়ে গিয়ে তার সঙ্গে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।

অভিযোগকারী নারী বলেন, তিনি জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের মানিকগঞ্জ জেলা শাখার প্রচার সম্পাদক ও সাটুরিয়া উপজেলা শাখার সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। কিন্তু ঘটনার পর আমানের ষড়যন্ত্রে তার সব দলীয় পদ স্থগিত করা হয়েছে।

ওই নারীর অভিযোগ, আসামি তার প্রেমের প্রস্তাব বারবার প্রত্যাখ্যান করায় প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে ওঠে। ২০২৫ সালের ৩ জুন নবীনগরের স্মৃতি সৌধে বেড়াতে যাওয়ার প্রস্তাব দিলে তিনি সরল বিশ্বাসে রাজি হন। কিন্তু আমান প্রাইভেটকারে তুলে তাকে নেশাজাতীয় পদার্থ প্রয়োগ করে অচেতন অবস্থায় ঢাকার আজিমপুর এলাকার একটি অজ্ঞাত বাসায় নিয়ে ধর্ষণ করেন এবং ভিডিও ধারণ করেন।

জ্ঞান ফেরার পর প্রতিবাদ করলে আসামি ভিডিওটি ফেসবুকসহ অন্যান্য মাধ্যমে প্রকাশের হুমকি দেয় এবং পরে বাদিনীকে মানিকগঞ্জে ফেলে পালিয়ে যায়। ঘটনার পর বিষয়টি জানার পর বাদিনীর পিতা মানসিক আঘাতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন বলেও এজাহারে উল্লেখ আছে।

অভিযোগে আরও বলা হয়, ২০২৫ সালের ১০ অক্টোবর রাত ১০টার দিকে আসামি আবার মানিকগঞ্জে বাদিনীর বাড়িতে প্রবেশ করে ভয় দেখিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন। পরে বাদিনী সাটুরিয়া থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা না নিয়ে আদালতে যাওয়ার পরামর্শ দেয়।

ভুক্তভোগীর অভিযোগ, শারীরিক সম্পর্কের পর বিয়ের কথা তুললে অভিযুক্ত নানা অজুহাতে তা এড়িয়ে যান এবং বিষয়টি গোপন রাখতে হুমকি দেন। এতে প্রতারিত ও আতঙ্কিত হয়ে ভুক্তভোগী আদালতে মামলা দায়ের করেন এবং অভিযুক্তের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। বাদিনীর পক্ষে আদালতে পাঁচজন প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সাক্ষীর নাম দেওয়া হয়েছে। আদালত বিষয়টি আমলে নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

অভিযুক্ত নারী দ্যা ঢাকা ডায়েরিকে বলেন, “আমি এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আসামি রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে আমাকে হুমকি দিচ্ছে। আমি ন্যায়বিচার চাই।”

এ বিষয়ে আসামির বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে স্থানীয় বিএনপির এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “বিষয়টি ব্যক্তিগত, দলীয় নয়। আদালত যেভাবে রায় দেবেন, সেটিই মেনে নেওয়া হবে।”

তবে এ বিষয়ে জানতে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আমান উল্লাহ আমানের সঙ্গে একাধিক মাধ্যমে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।