বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর একক প্রচেষ্টায় এক কোটি ১০ লক্ষ প্রবাসীর ভোটাধিকার নিশ্চিত হয়েছে বলে দাবি করেছেন দলের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমির ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য নুরুল ইসলাম বুলবুল। দলটি আগামী দিনে সরকার গঠনের পরিকল্পনা নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
সম্প্রতি রাজধানীর একটি মিলনায়তনে ঢাকাস্থ চাঁপাইনবাবগঞ্জবাসীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তিনি। বুলবুল চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ (সদর) আসনে জামায়াত মনোনীত প্রার্থী।
মতবিনিময় সভায় নুরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, ‘এক কোটি ১০ লক্ষ প্রবাসী দেশের বাইরে আছেন, তারা হচ্ছেন আমাদের রেমিট্যান্স যোদ্ধা। দেশের অর্থনীতির চাকা তারা ঘুরিয়ে থাকেন। জীবন দিয়ে, ঘাম দিয়ে, শ্রম দিয়ে বিদেশে পরিবার-পরিজন ছাড়া বিদেশে অবস্থান করেন, আর বাংলাদেশে টাকা পাঠিয়ে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক চাকাকে তারা গতিশীল রাখেন। অথচ ৫৪ বছরে তাদের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়নি। এইবার জামায়াতে ইসলামী সরকারের কাছে এবং নির্বাচন কমিশনের কাছে দাবি জানিয়েছিল- যারা দেশের বাইরে অবস্থান করছেন তাদেরকে এবার ভোট দেওয়ার সুযোগ দিতে হবে। আলহামদুলিল্লাহ, নির্বাচন কমিশন সেই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। বলা যায় যে জামায়াতে ইসলামীর একক দাবি এবং প্রচেষ্টা ছিল এটি।’
বিগত আওয়ামী আমলে দলের উপর হওয়া নিপীড়নের বিবরণ দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের কাছ থেকে দাঁড়িপাল্লা কেড়ে নেওয়া হয়েছিল, আমাদের নিবন্ধন কেড়ে নেওয়া হয়েছিল, আমাদেরকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল, আমাদের শীর্ষ ১১ জন নেতৃত্বকে হত্যা করা হয়েছিল, আমাদের পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মীকে খুন করা হয়েছে, আমাদের শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দের সন্তান-পরিবারের সদস্যদেরকে গুম করা হয়েছে, আমাদের ২০ হাজারের অধিক মিথ্যা মামলা দিয়ে লক্ষ লক্ষ নেতাকর্মীকে ঘর ছাড়া করা হয়েছে, বাড়ি ছাড়া করা হয়েছে, অফিস ছাড়া করা হয়েছে, চাকরি ছাড়া করা হয়েছে, খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবন যাপন করতে হয়েছে। তাদের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য ছিল জামায়াতে ইসলামীকে নিশ্চিহ্ন করা।’
তবে জামায়াতে ইসলামী ফুলে-ফলে সুশোভিত হয়েছে দাবি করে বুলবুল বলেন, ‘জামায়াত গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে, এদেশের ১৮ কোটি মানুষের অন্তরে জায়গা করে নিয়েছে। আগামী দিনে জামায়াতে ইসলামীকে ঘিরে এ দেশের মানুষ স্বপ্ন দেখে। দাঁড়িপাল্লাকেই এদেশের মানুষ ক্ষমতায় দেখতে চায়। আমরা আগামী দিনে সরকার গঠনের পরিকল্পনা নিয়ে অগ্রসর হচ্ছি। মানুষের আস্থা এবং ভালোবাসা প্রতিনিয়ত উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমাদের সার্ভে যেগুলো হচ্ছে, প্রতিটি সার্ভেতে তরুণ-যুবকরা জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে তাদের সমর্থন জানাচ্ছে, আমাদের নারী সমাজ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে সমর্থন জানাচ্ছে, এদেশের খেটে খাওয়া গরীব-অসহায় মানুষ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে সমর্থন জানাচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা জুলাই সনদের আইনি ভিত্তির জন্য জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট নির্বাচনসহ পাঁচ দফা দাবি নিয়ে আন্দোলন করছি। এ আন্দোলনে আটটি দল একসাথে আমরা কাজ করছি। আন্দোলনরত আটটি দল এবং আরও যে সমস্ত দল আমাদের সাথে আসবেন, তাদেরকে নিয়ে সমঝোতার ভিত্তিতে আগামী দিনে আমরা নির্বাচন করব। সবাই মিলে আগামী দিনে এদেশের জনগণ ইসলামের পক্ষে ভোট দিয়ে সুখী-সমৃদ্ধশালী একটা নতুন মানবিক ন্যায় এবং ইনসাফের বাংলাদেশ গড়ে তুলব।’