রবিবারে ঢাকার সর্বনি¤œ তাপমাত্রা ১৪ ডিগ্রিতে নেমে আসার কথা বলা হলেও বহু মানুষই এটায় সংশয় প্রকাশ করেছেন। মনে হচ্ছিলো কনকনে ঠান্ডা হাওয়ায় জমে যাব, তাই ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াসই হওয়ার কথা।
সতেরো বছর পরে ইতিহাসের মুখোমুখি
সতেরো বছর আগে যখন একপ্রকার তাকে দেশ ছাড়তে বাধ্য করা হয় সে সময়ে তিনি ছিলেন অসুস্থ। রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতনের কারণেই হুইল চেয়ারে করে তাকে বিমানবন্দরে যেতে হয়েছিল। সেদিন তাকে বিদায় জানাতে খুব বেশি লোক যাননি। পক্ষান্তরে সতেরো বছর পরে গত বৃহস্পতিবার (সেদিন ছিল বড়দিন) তিনি যখন এলেন, নামলেন বিমানবন্দরে, তখন লাখ লাখ মানুষ বিমানবন্দর সড়কে অবস্থান করছিলেন; আর তার বক্তৃতাস্থল বসুন্ধরার ৩০০ ফুট সড়কে অপেক্ষমাণ ছিল আরও কয়েক লাখ মানুষ। শুধু অভূতপূর্ব বললে কমই বলা হয়। লালসবুজে মোড়া, পিতা-মাতার প্রতিকৃতি শোভিত বুলেটপ্রুফ চমৎকার একটি বাস তার জন্য অপেক্ষমাণ ছিল। বলছি তারেক জিয়ার কথা, বেশ অনেক বছরই তাকে তারেক রহমান বলেই সম্বোধন করা হচ্ছে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে গণসংবর্ধনার আয়োজন করা হয়। তাঁকে স্বাগত জানাতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বর্ণিল সাজে ব্যানার ফেস্টুন হাতে জড়ো হয় লাখ লাখ মানুষ। ঢাকা বিমানবন্দর থেকে পূর্বাচলের ৩০০ ফুটÑ স্বাভাবিক দিনে যে পথে আধা ঘণ্টার বেশি সময় লাগে না, সেই পথেই লেগে গেল তিন ঘণ্টা। কারণ, রাস্তার দুই ধারে নেতা-কর্মী-সমর্থকদের সারি, মানুষের ঢল। কেবল নেতা-কর্মী নন, অনেকেই এসেছেন ১৭ বছর পর দেশে ফেরা তারেক রহমানকে একপলক দেখার কৌতূহল নিয়ে, কেউবা প্রত্যাবর্তনের একটি স্মরণীয় দিনের সাক্ষী হতে। বিমানবন্দর থেকে পূর্বাচলের সংবর্ধনা মঞ্চ পর্যন্ত সাড়ে ছয় কিলোমিটার পথ যেন লোকারণ্য হয়ে ওঠে। প্রায় দেড় যুগের নির্বাসন শেষে বৃহস্পতিবার সপরিবার দেশে ফেরেন তারেক রহমান। বিমানবন্দর থেকে বের হয়েই তিনি খালি পায়ে শিশিরভেজা ঘাসে দাঁড়িয়ে ১৭ বছর পর প্রথম দেশের মাটির স্পর্শ নেন।
বিমানবন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জে তারেক রহমানকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান শাশুড়ি সৈয়দা ইকবাল মান্দ বানু ও বিএনপির শীর্ষ নেতারা। সেখানে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, আবদুল মঈন খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ ও সালাহউদ্দিন আহমদ (অভ্যর্থনা কমিটির আহ্বায়ক), জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী (সদস্যসচিব) ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র শাহাদাত হোসেন। ইমিগ্রেশন শেষে বিমানবন্দর থেকে বেরিয়ে এসে হঠাৎ থেমে যান তারেক রহমান। জুতা খুলে লাগোয়া বাগানের শিশিরভেজা ঘাসে দাঁড়িয়ে দেশের মাটির স্পর্শ নেন।
এরপর এক টুকরো মাটি হাতে তুলে নেন মাতৃভূমিকে ছুঁয়ে দেখার মতো করে। বিষয়টি অনেককেই আপ্লুত করে। দীর্ঘ প্রবাস জীবন শেষে, বলা ভালো নির্বাসন শেষে স্বদেশে ফিরে এলে মানুষের আবেগ বাঁধ মানে না। দেশের মাটি ছুঁয়ে দেখেন তাদের সবাই। মনে পড়ে রবীন্দ্রনাথের গানÑ ও আমার দেশের মাটি তোমার পরে ঠেকাই মাথা।
একজন রিপোর্টার লিখেছেন, ‘প্রিয় নেতাকে সংবর্ধনা জানাতে আসা নেতা-কর্মীদের নানা রঙে আবিষ্ট হতে দেখা গেছে। অনেকের পরনে দলীয় পতাকার সঙ্গে রং মিলিয়ে জার্সি। মাথায় ক্যাপ, কপালে ব্যান্ড। অনেকের হাতে দলের পতাকা, প্ল্যাকার্ড। কেউ কেউ দলের লোগোসংবলিত ব্যাজ পরে এসেছেন। বিভিন্ন ধরনের প্লাকার্ড, ব্যানারসহ ফুল হাতে নিয়ে সড়কের দুই পাশে দাঁড়িয়ে তাঁরা ‘তারেক রহমানের আগমন, শুভেচ্ছা স্বাগতম’, ‘বাংলাদেশের প্রাণ, তারেক রহমান’ প্রভৃতি স্লোগান দেন।’
বক্তব্য শেষ করে তারেক রহমান এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মা বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে দেখতে যান। সংবর্ধনা মঞ্চ থেকে নেতা-কর্মীদের ভিড় ঠেলে হাসপাতালে পৌঁছাতে সময় লেগেছে প্রায় পৌনে দুই ঘণ্টা। অথচ হাসপাতালটিতে স্বাভাবিক সময়ে পৌঁছুতে লাগে গাড়িতে বড়জোর ১০ মিনিট।
বিমানবন্দর থেকে নেমে কেন শয্যাশায়ী মায়ের কাছে না গিয়ে আগে জনসমাবেশে এলেন, তার ব্যাখ্যা দেন তারেক রহমান। তিনি বলেন, ‘এখান থেকে আমি আমার মা দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার কাছে যাব। সন্তান হিসেবে আমার মন আমার মায়ের বিছানার পাশে পড়ে আছে সেই হাসপাতালের ঘরে। কিন্তু সেই মানুষটি যাঁদের জন্য জীবন উৎসর্গ করেছেন, অর্থাৎ আপনারাÑ এই মানুষগুলোকে। সেই মানুষগুলোকে আমি কোনোভাবেই ফেলে যেতে পারি না। সে জন্যই আজ হাসপাতালে যাওয়ার আগে আপনাদের প্রতি, টেলিভিশনগুলোর মাধ্যমে সমগ্র বাংলাদেশ থেকে যাঁরা আমাকে দেখছেন, আপনাদের সবার কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার জন্য আমি এখানে দাঁড়িয়েছি।’
তারেক রহমানের আগমনকে কেন্দ্র করে বিমানবন্দরের ভিআইপি গেটসহ আশপাশে নিরাপত্তাব্যবস্থা ছিল বেশ চোখে পড়ার মতো। নজিরবিহীনই বলা চলে।
উই হ্যাভ অ্যা প্ল্যান
প্রিয় বাংলাদেশ, শুরু করলেন ঠিক এভাবেই। যুক্তরাজ্যের লন্ডনে দীর্ঘ ১৭ বছরের নির্বাসিত জীবন কাটিয়ে দেশে ফিরে লাখ লাখ মানুষের সামনে দাঁড়িয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বললেন, ‘উই হ্যাভ অ্যা প্ল্যান। উই হ্যাভ অ্যা প্ল্যান ফর দ্য পিপল, ফর দ্য কান্ট্রি।’
দেশের মানুষের জন্য, দেশের জন্য নেওয়া সেই প্ল্যান (পরিকল্পনা) বাস্তবায়নে সবার সহযোগিতা দরকারÑ এ কথাও স্পষ্ট করেই বলেছেন তারেক রহমান। দেশের মাটিতে পা রেখে প্রথম যে বক্তব্য দিলেন, সেখানে সেই পরিকল্পনার বিস্তারিত অবশ্য উল্লেখ করেননি তিনি। শুধু বলেছেন, দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য যদি সেই প্ল্যান (পরিকল্পনা) বাস্তবায়ন করতে হয়, তাহলে প্রত্যেক মানুষের সহযোগিতা তাঁর লাগবে।
বক্তব্যে মানুষের নিরাপত্তা ও শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখার কথা একাধিকবার বলেছেন তারেক রহমান। ধর্ম-বর্ণ, শ্রেণি- পেশা নির্বিশেষে দেশের সব মানুষ যাতে নিরাপদে থাকতে পারে, সেই প্রত্যাশার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আমরা যে ধর্মের মানুষ হই, আমরা যে শ্রেণির মানুষ হই, আমরা যে রাজনৈতিক দলের সদস্য হই অথবা একজন নির্দলীয় ব্যক্তি হই, আমাদের নিশ্চিত করতে হবেÑ যেকোনো মূল্যে আমাদের এই দেশের শান্তিশৃঙ্খলাকে ধরে রাখতে হবে। যেকোনো মূল্যে যেকোনো বিশৃঙ্খলাকে পরিত্যাগ করতে হবে। যেকোনো মূল্যে আমাদের নিশ্চিত করতে হবে যাতে মানুষ নিরাপদ থাকতে পারে। শিশু হোক, নারী হোক, পুরুষ হোকÑ যেকোনো বয়স, যেকোনো শ্রেণি, যেকোনো পেশা, যেকোনো ধর্মের মানুষ যেন নিরাপদ থাকে, এই হোক আমাদের চাওয়া।’
একথা বললে অত্যুক্তি হবে না যে, তারেক রহমান দাঁড়িয়ে আছেন ইতিহাসের মুখোমুখি। যে গণসংবর্ধনা তিনি পেলেন, তাঁর প্রথম আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দেশের মানুষের কাছে যেভাবে গ্রহণযোগ্যতা পেলো, এবং দেশে ফেরার দিন সার্বিক আচরণ, সক্রিয়তা, আন্তরিকতা সবকিছুই মানুষ ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করলো তা সত্যিই দারুণ। দেশের ছেলে দেশে ফিরল অনেক কষ্ট যন্ত্রণা ও ঝড়ঝঞ্ঝা পেরিয়ে, এমনটাই ছিল গণমানুষের মনোভাব।
বিয়ের ভরাঋতুতে ভেন্যুবৈচিত্র্য
ঢাকায় বিয়ের মৌসুম শুরু হয়ে গেছে। বলা যায় এখন হচ্ছে বিয়ের ভরাঋতু। বিয়ের অনুষ্ঠান করার জন্য লাগে একটা জায়গা, মানে ভেন্যু। বিশদ বর্ণনার আগে ডিসেম্বরের শেষে সর্বশেষ বিয়ে অনুষ্ঠানে যোগদানের অভিজ্ঞতা থেকে কিছু বলি। ভেন্যু ছিলো ইউনাইটেড সিটির শেফস টেবিল কোর্টসাইড। ইতিমধ্যেই মাদানি রোডের ভেন্যুটি ফুড কোর্ট ও বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। যেখানে বিভিন্ন ধরনের খাবার, শিশুদের খেলার জায়গা এবং প্রাকৃতিক পরিবেশে পরিবার ও বন্ধুদের সাথে সময় কাটানোর সুযোগ রয়েছে। বিয়েটি ছিল আমাদের বন্ধু, খ্যাতিমান লেখক ও কর্পোরেট ব্যক্তিত্ব মাসরুর আরেফিনের বড় কন্যার।
বিয়ে অনুষ্ঠানের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি এ এক উপভোগ্য ব্যতিক্রমী বিয়ের ভেন্যু। ঢাকায় হঠাৎ তাপমাত্রা অনেকটা কমে যাওয়া হিমজর্জর রাতে খোলা আকাশের নিচে (যদিও আংশিক সামিয়ানা ছিল, আরও ছিল বেশ কিছু ফায়ার স্পট, যা কিছুটা উত্তাপ সরবরাহ করেছে, এবং বেশি শীতকাতুরেরা সেই স্পটে গিয়ে আশ্রয়ও নিয়েছেন) সার্বিক আয়োজনটি ছিল এক কথায় চমৎকার। সুবিশাল মঞ্চে বর-বঁধু বসে ছিলেন। সামনের প্রাঙ্গণে চেয়ার-সোফা ছিল যথেষ্ট, খোলা জায়গাও রাখা হয়েছিল অনেকখানি। আর খাবারের জন্যে ছিল আলাদা দুটি প্রাঙ্গণ। অতিথি সমাগমও হয়েছিল প্রচুর।
প্রত্যেকেই নিজের বা প্রিয়জনের বিয়ের অনুষ্ঠানকে স্মরণীয় করে তুলতে নানা আয়োজন করে। বিয়ের ভেন্যু নির্ধারণ, সাজসজ্জা, বিয়ের খাওয়া-দাওয়া সব কিছুই পরিপাটি করে তুলতে চান। অন্য আট-দশটা বিয়ে থেকে আলাদা করার জন্য প্রাণান্ত চেষ্টা করেন। ঢাকায় বিয়ের মৌসুমে যাতে ভেন্যু সমস্যায় না পড়েন সে জন্য অভিভাবকরা বেশ আগে থেকেই ভেন্যুর বুকিং দিয়ে রাখেন। শুক্র-শনিবার থাকে চাহিদার শীর্ষে। এসব ভেন্যুতে একই দিন দুপুর এবং রাতে দুটো বিয়ের অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। শীতেই কেন বিয়ে? অনেকেরই ধারণা, বিয়ের জন্য উপযুক্ত সময় হলো শীতকাল। কিন্তু নবেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিয়ের তথাকথিত মৌসুম এড়িয়ে অন্য সময় বিয়ের অনুষ্ঠান করলে সাজ-পোশাক থেকে শুরু করে কমিউনিটি সেন্টার- সবখানেই খরচ অনেকটাই কমে যায়!
লাখ কথা না হলে নাকি বিয়ে হয় না! এইসঙ্গে রয়েছে শত ঝামেলা। অনুষ্ঠান কেমন হবে সে অনুযায়ী ভেন্যু ঠিক করা, অতিথি তালিকা আর খাবারের মেন্যু ফাইনাল করা, বর-কনের পাশাপাশি আত্মীয়দের পোশাক কেনা, যানবাহনের ব্যবস্থা করা, দাওয়াতপত্র ছাপানো আর সেগুলো তালিকা অনুযায়ী সব আত্মীয়ের কাছে পৌঁছানো পর্যন্ত অনেক কাজ। বাজেটে প্রতিটি অনুষ্ঠানের জন্য ভেন্যু ভাড়া থেকে শুরু করে, দাওয়াতপত্র, বর-কনের পোশাক-গহনা, পরিবারের সবার পোশাক এবং অনুষঙ্গ, উপহার, মিষ্টি, খাবার, যাতায়াত, ফটোগ্রাফার, ভিডিওগ্রাফারসহ সব কিছুই তালিকাভুক্ত করতে হবে।
বিয়ের ভেন্যু নিয়ে বলছিলাম। ঢাকায় একসঙ্গে তিন থেকে পাঁচ হাজার লোকের এ্যারেঞ্জমেন্ট করতে পারে এমন ভেন্যু হলো চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্র, সেনাকুঞ্জ, রাওয়া কনভেনশন সেন্টার ও বসুন্ধরা কনভেনশন সেন্টার। আবার তিন শ’ থেকে সাত শ’ লোকের অনুষ্ঠান আয়োজন করার মতো রয়েছে শাহীন হলো, ফ্যালকন হলো, সেফরন, ম্যারিয়ট কনভেনশন সেন্টার, এ্যাবাকাস কমিউনিটি সেন্টার ইত্যাদি। চাইলে একটু ভিন্ন পরিবেশে বা ছোট পরিসরে নিজের বাসার ছাদে কিংবা বাগানে অনুষ্ঠান করা যায়। সেক্ষেত্রে ডেকোরেুটরের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে।
শামিয়ানা, চেয়ার, টেবিল, কাটলারি সেট, হটডিশ, লাইটিং, কার্পেটÑ সবই পাওয়া যায় ডেকোরেুটর হাউসগুলোতে। বিয়ের অনুষ্ঠানের জন্য কিছু এলাকা বেশ জমজমাট। সেসব এলাকাবাসীর জন্য সোনায় সোহাগা। সেরকম এলাকা হলো ধানমন্ডি ও মোহাম্মদপুর। মোটামুটি বাজেটের মধ্যে থাকে এখানকার কমিউনিটি সেন্টারগুলোর ভাড়া। উত্তরার মতো জায়গায় যেখানে বেশ কয়েক লাখ মানুষের বাস, হাতে গোনা ভেন্যু রয়েছে। তবে মধ্যবিত্তদের জন্য ভেন্যু পাওয়া একটু কঠিনই বটে। এখন পার্টি সেন্টার বা চাইনিজ রেস্টুরেন্টগুলোও আমন্ত্রিত ব্যক্তির সংখ্যা নির্ধারণ করে দেয়।
তিন শ’র নিচে তারা অর্ডার নেয় না। ফলে বর বা কনের অভিভাবক যদি হন মধ্যবিত্ত শ্রেণীর, তাহলে কমপক্ষে ৩০০ জনের খাওয়ার আয়োজন তাকে করতেই হবে। এজন্য তিন-চার লাখ টাকা বাজেট ধরে রাখাটাই বুদ্ধিমানের কাজ। উত্তরায় টিভি নাটকের শূটিংয়ের জন্য এ্যাপার্টমেন্ট ভাড়া পাওয়া যায়। হয়ত আগামীতে বিয়ের অনুষ্ঠানের জন্যও এমন কোনো বন্দোবস্ত হবে।
ক’বছর আগে বন্ধুদের আড্ডায় কিংবা কোনো বিয়ের আসরে কথাচ্ছলে বলেছিলাম, বৈচিত্র্যপিয়াসী শৌখিন বাঙালি ভবিষ্যতে যদি পিকনিক স্পটের মতো নৈসর্গিক শোভাম-িত সুপরিসর আকর্ষণীয় জায়গাজুড়ে বিয়ের অনুষ্ঠান করে তাহলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। জল ও জঙ্গলের কাব্য নামক জায়গায় বিয়ে অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ পেয়ে একবার সে কথাটিই মনে এসেছিল প্রথমে। এখানে এলে কেউ নৌকায় চড়েন, কেউ বনেবাঁদাড়ে ঘোরেন। কেউ বা প্রায় মাইলব্যাপী দিগন্ত বিস্তৃত উন্মুক্ত স্থানের স্পেসটাই উপভোগ করেন।
ইটকাঠপাথরসিমেন্টের শহর ঢাকা থেকে বেরিয়ে এমন জায়গায় গিয়ে মন উৎফুল্ল হয়ে ওঠে তা বলাই বাহুল্য। আর ছবি তোলার জন্যেও দারুণ একটা জায়গা বটে। নবদম্পতি চাইলে ভিডিওতে স্বল্পদৈর্ঘ্য সিনেমাই বানিয়ে ফেলতে পারবেন। পারিবারিক সম্মিলনের জন্যে এমন স্থানটি বৈশিষ্ট্যমন্ডিত এ কারণে যে শহরের ভেন্যুতে শুধু খাওয়া দাওয়াই হয়। ঘুরে বেড়ানোর, সবাই মিলে গল্প করার পরিবেশ কিংবা সুপরিসর জায়গা থাকে না।
মারুফ রায়হান
২৯ ডিসেম্বর, ২০২৫
[email protected]