Image description
 

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন পরিচালিত ‘বাংলাদেশ রেফারেন্স ইনস্টিটিউট ফর কেমিক্যাল মেজারমেন্টসের (বিআরআইসিএম) আর্থিক অনিয়মের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মালা খানকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। 

বিআরআইসিএমের ১৩৩ কোটি টাকার ‘কেমিক্যাল মেট্রোলজি অবকাঠামো সমৃদ্ধকরণ’ শীর্ষক প্রকল্পে গুরুতর অনিয়মের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় রোবার (২৮ ডিসেম্বর) বিআরআইসিএম-এর মহাপরিচালক অনুপম বড়ুয়া স্বাক্ষরিত চিঠিতে মালা খানের বরখাস্তের বিষয়ে জানানো হয়।

চিঠিতে উল্লেখ করা হয় বিআরআইসিএমের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মালা খানের বিরুদ্ধে ‘কেমিক্যাল মেট্রোলজি অবকাঠামো সমৃদ্ধকরণ’ প্রকল্পে গুরুতর আর্থিক অনিয়মের বিষয়ে চলতি বছরের ২২ ডিসেম্বর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ে একটি অভিযোগপত্র জমা হয়। 

এ পরিপ্রেক্ষিতে ২৩ ডিসেম্বর গঠিত তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে। কমিটি তাকে চাকরি থেকে সাময়িক বহিষ্কারের সুপারিশ করেছে। তদন্ত কমিটির চিঠিতে উল্লেখ করা হয় বিআরআইসিএম-এর পরিচালনা পর্ষদের গৃহীত সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে পিসিআর দাখিলের পর লেনদেন সম্পন্ন হয়েছে যা গুরুতর আর্থিক অনিয়ম তথা তহবিল তছরুপ বা প্রতারণার সামিল। 

অনিয়ম সংঘটন ও তহবিল তছরুপ হয়েছে বিবেচনায় নিয়ে ‘কেমিক্যাল মেট্রোলজি অবকাঠামো সমৃদ্ধকরণ’ প্রকল্প পরিচালক (সাবেক) এবং প্রকল্পের একক ব্যাংক হিসাব পরিচালনাকারী মালা খানের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে।চিঠিতে বলা হয় অভিযোগটি অত্যন্ত গুরুতর আর্থিক অনিয়ম ও সরকারি অর্থ আত্নসাত সংশ্লিষ্ট এবং স্পর্শকাতর, তাই আপনাকে (মালা খান) আপনার দায়িত্ব পালনে বিরত করা না হলে।

অভিযোগ সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ নথি, দলিলাদি, তথ্যাদি ও প্রমাণকসমূহের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে। ফলে বিআরআইসিএম-এর কর্মচারী চাকরি প্রবিধানমালা ২০২২ এর ৫৫ (১) প্রবিধান অনুযায়ী চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো। সাময়িক বরখাস্তকালীন আপনি (মালা খান) সরকারি বিধি মোতাবেক খোরাকি ভাতা পাবেন। কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ব্যতিরেকে তিনি কর্মস্থল ত্যাগ করতে পারবেন না।

সূত্র জানায়, ২০১৮ সালে শুরু হয়ে ২০২২ সালে শেষ হওয়া প্রকল্পটির অডিট হয় এপ্রিল ২০২৪-এ। অডিট রিপোর্টে অব্যয়িত অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়ার সুপারিশ থাকলেও তা মানা হয়নি। অডিট অনুযায়ী প্রকল্প অ্যাকাউন্টে ৩ কোটি ৫৬ লাখ টাকা থাকার কথা থাকলেও বর্তমানে রয়েছে প্রায় ২ কোটি ৫৬ লাখ টাকা।

অভিযোগ রয়েছে, প্রকল্প শেষের প্রায় তিন বছর পর পুরোনো চেক ব্যবহার করে একটি নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানে প্রায় ৭২ লাখ টাকা স্থানান্তর করা হয়। প্রতিষ্ঠানটির অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি বলে তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া আরও দুটি প্রতিষ্ঠানের অ্যাকাউন্টে প্রায় ১৫ লাখ টাকা পাঠানো হয়েছে।

সূত্র জানায়, বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞানী পরিষদের সভাপতি মালা খানের বিষয়টি তদন্তাধীন।  তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।