ইসলাম ধর্ম ও আল্লাহকে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে করা মামলায় কারাবন্দি বাউল শিল্পী আবুল সরকারের মতো বাউলদের ‘ভণ্ডামি’ ছেড়ে লালন শাহ, শাহ আবদুল করিমদের পথ অনুসরণ করতে বলেছেন সিনিয়র সাংবাদিক মানিক মুনতাসির। পাশাপাশি আবুল সরকারের অপরাধের জন্য আদালতের মাধ্যমে যথাযথ বিচার দাবিও করেছেন তিনি।
নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে ‘বাউলিয়ানার নামে ভণ্ডামি ছাড়ুন’ শিরোনামে তিনি একটি দীর্ঘ পোস্ট দেন।
মানিক মুনতাসির লেখেন, ‘বাংলাদেশ তথা ভারতীয় উপমহাদেশের সবচেয়ে বড় সাধক বাউল সম্রাট লালন শাহ কিংবা বাউল শাহ আবদুল করিম, বর্তমান সময়ের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সাধক চিশতি বাউল, ফকির শাহাবুদ্দিন– এদের মধ্যে কেউ কি কখনো সৃষ্টিকর্তাকে কটাক্ষ করে কোনো মন্তব্য করেছেন। শুধু ইসলাম নয়, পৃথিবীর কোনো ধর্ম নিয়েও কি তারা কখনো মনগড়া কোনো বক্তব্য রেখেছেন বা অলীক কোনো গান রচনা করেছেন? নিশ্চই করেন নাই। তাহলে কোথাকার কোন সাধক আবুল সরকাররা যদি এতটাই জ্ঞানী হয়ে থাকেন তবে একখান বেদ, কিংবা বাইবেল রচনা করে দেখাক না। সেটারও দরকার নাই। তারা দুখানা গান লিখুক লালন কিংবা শাহ আবদুল করিমের মতো। যৌন সুড়সুড়ি আর ধর্মকে কটাক্ষ করে উন্মাদনা তৈরি ছাড়া আর কি এমন যোগ্যতা আছে এই আবুলদের।’
তিনি লেখেন, ‘গতকাল আমি আবুল সরকার ও তার অনুসারীদের পক্ষে বলেছিলাম কারণ তারা ছিল আক্রান্ত। যেহেতু তিনি ধৃত। তিনি অপরাধ করলে বিচার হবে। বিচারাধীন কোনো বিষয়ে আদালত ব্যতিরেকে হস্তক্ষেপ করা ঠিক না। তবে আবুল সরকার কোরআন-হাদিসের উদ্ধৃতি দিয়ে যেসব ব্যাখ্যা দিয়েছেন সেগুলো আসলে অপব্যাখ্যা। কারণ কোনো বিষয়ে অল্প-স্বল্প জেনে পাবলিক প্লেসে এসে বক্তব্য দেওয়া কিংবা তা নিয়ে গান বাঁধা চরম বোকামী এবং ভণ্ডামি।’
‘সবশেষে বলি- আপনি সাধক/বাউল হতে চাইলে সবার আগে লালন শাহের জীবনী পড়ুন। শাহ আবদুল করিমকে জানুন। তাদের অনুসরণ করুন।’
তিনি আরও লেখেন, ‘বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী লালন শাহ একজন বাঙালি। যিনি ফকির লালন, লালন সাঁই, লালন শাহ, মহাত্মা লালন ইত্যাদি নামেও পরচিতি। তিনি একাধারে একজন আধ্যাত্মিক ফকির, সাধক, মানবতাবাদী, সমাজ সংস্কারক এবং দার্শনিক ছিলেন। তারা সমাজ সংস্কার করেছেন। আপনি এসেছেন প্যাঁচ লাগাতে। গিট্টু লাগাতে। কাউকে বা কোনো দলকে রাজনৈতিক দলকে ফায়দা লুটতে বা লুটাতে গিয়ে নিজেই পড়ে গেছেন গ্যাড়াকলে। এসব ভণ্ডামি বাদ দিয়ে সাধক হতে চাইলে এটলিস্ট গৌতম বুদ্ধকেও অনুসরণ করতে পারেন।’