নাটোরের লালপুর উপজেলার রামকৃষ্ণপুরে গোঁসাইজীর আশ্রমের নবান্ন উৎসব শেষ হয়েছে। এ উৎসবে ঢল নামে মানুষের। কেউ আসেন ঘুরতে; কেউ আসেন আশাপূরণে মানত করতে। গোঁসাইজীর আশ্রমের শতবর্ষী বটগাছের নিচে নারীরা মানত করেন সন্তান লাভের আশায়।
নিঃসন্তান নারী স্নান শেষে ভেজা কাপড়ে শতবর্ষী বটগাছের নিচে আঁচল পেতে সন্তান লাভের আশায় প্রার্থনা করছেন- এমন দৃশ্য দেখা যায়। তাদের বিশ্বাস, গাছের ফল বা পাতা যদি তাদের আঁচলে পড়ে, তবে তারা সন্তান লাভ করবেন।
রোববার (২৩ নভেম্বর) সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত নবান্ন উৎসবে এমন দৃশ্য দেখা গেছে।
গোঁসাইজীর আশ্রমের বটগাছের নিচে নারী ভক্তরা রঙিন শাড়ির আঁচল বিছিয়ে গাছ থেকে ফল বা পাতা পড়ার অপেক্ষায় ছিলেন। আশ্রমের এক নারী বৈষ্ণব তাদের দেখভাল করছিলেন, আর আশপাশে ভিড় জমিয়েছিলেন অসংখ্য নারী-পুরুষ। প্রতি বছরই দেশের নানা প্রান্ত থেকে নিঃসন্তান নারীরা এই আশ্রমে এসে সন্তানের জন্য প্রার্থনা করেন।
বগুড়া থেকে আসা এক নারী জানান, দীর্ঘ ১০ বছর ধরে বিয়ে হয়েছে। এখনো আমার সন্তান হয়নি। বহু চিকিৎসা করেও কিছু হয়নি। লোকমুখে শুনে এখানে এসেছি একটি সন্তান লাভের আশায়।
রাজশাহীর বাঘা উপজেলার নারায়ণপুর থেকে আসা আরেক নারী বলেন, আমার বাড়ির পাশের দুই নারী এখানে মানত করে সন্তান লাভ করেছেন। তাই তিনিও এসেছেন।
আশ্রমের প্রধান সেবাইত শ্রী পরমানন্দ সাধু বলেন, নবান্নকে কেন্দ্র করে প্রতি বছর দূরদূরান্ত থেকে সন্তান না হওয়া অনেক নারী মানত করতে আসেন এখানে।
আশ্রম কমিটির সভাপতি শ্রী সঞ্জয় কুমার জানান, নবান্ন উৎসবে নিঃসন্তান নারীরা মানত করেন, পরে ভক্তদের কলাপাতায় খিচুড়ি প্রসাদ হিসেবে খাওয়ানো হয়।
লালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মনজুর রহমান এ ব্যাপারে বলেন, এভাবে সন্তান লাভের প্রার্থনা কুসংস্কার। চিকিৎসা বিজ্ঞানে এর কোনো ভিত্তি নেই। গাছের পাতা বা ফলের প্রভাবে সন্তান উৎপাদন সম্ভব নয়। এজন্য মানুষের উচিত ফকির বা সাধুদের পিছে না ঘুরে চিকিৎসকের কাছে যাওয়া।