Image description
 

রাজধানীর পল্লবী থানার যুবদলের সদস্যসচিব গোলাম কিবরিয়া (৫০) হত্যা মামলায় মো. মনির হোসেন ওরফে সোহেল ওরফে পাতা সোহেল (৩০) ও মো. সুজন ওরফে বুকপোড়া সুজন (৩৫) নামের দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব-৪)। মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) দিবাগত রাতে সাভার ও টঙ্গী থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

বুধবার (১৯ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন র‍্যাব-৪-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মাহবুব আলম।

গ্রেপ্তারদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, রাজনৈতিক কোন্দল ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে হত্যাকাণ্ডটি সংঘটিত হয়েছে। এটি একটি সুপরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড, যাতে বড় অংকের অর্থের লেনদেন হয়। আসামিরা পেশাদার হত্যাকারী এবং তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। পাতা সোহেলের নামের আসামির বিরুদ্ধে একাধিক হত্যা, ডাকাতি, মাদকসহ পল্লবী থানায় মোট আটটি মামলা রয়েছে। গ্রেপ্তার দুজন মিরপুরকেন্দ্রিক গড়ে উঠা ‘ফোর স্টার’ গ্রুপের সক্রিয় সদস্য।

‘ফোর স্টার’ গ্রুপ সম্পর্কে জানতে চাইলে মাহবুব আলম বলেন, ইব্রাহিম ও মামুন নিয়ন্ত্রিত যেসব এলাকা রয়েছে সেসব এলাকায় এ ‘ফোর স্টার’ গ্রুপের সদস্যরা সন্ত্রাসী কার্যকলাপে লিপ্ত ছিল।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সোহেল ওরফে পাতা সোহেল অর্থ সরবরাহ করেছিলেন। তবে তিনি কীভাবে অর্থ পেয়েছেন কিংবা কার কাছ থেকে পেয়েছেন সেটা এখনও পরিষ্কার না।

হত্যাকাণ্ডের মোটিভ সম্পর্কে প্রশ্নে র‍্যাব-৪-এর অধিনায়ক বলেন, মিরপুর এলাকাকেন্দ্রিক আধিপত্য বিস্তার চাঁদাবাজি-মাদক ও অন্যান্য সন্ত্রাসী কার্যকলাপ এবং দ্বিতীয়টি হলো রাজনৈতিক কোন্দল। নিহত গোলাম কিবরিয়া একটি রাজনৈতিক দলের (সংগঠনের) সদস্যসচিব এবং মিরপুর এলাকায় রাজনৈতিকভাবে তিনি খুব সক্রিয় ছিলেন। এর আগে গোলাম কিবরিয়ার যাদের সঙ্গে সখ্য ছিল রাজনৈতিক মেরুকরণের পরে তাদের বিরুদ্ধে তিনি কাজ করছিলেন। বিশেষ করে এলাকায় চাঁদাবাজি ও মাদক কারবারিতে নিহত গোলাম কিবরিয়ার সাপোর্ট ছিল না। হয়তো এ কারণে হত্যাকাণ্ড ঘটতে পারে।

গ্রেপ্তার দুই আসামি

হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মামুনের সম্পৃক্ততা আছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, মামুনের সরাসরি সম্পৃক্ততা আছে কি না তা অনুসন্ধান চলছে। হত্যাকাণ্ডে আন্ডারওয়ার্ল্ডের কানেকশন থাকতে পারে, তবে সবাইকে গ্রেপ্তার করলে রহস্য উন্মোচিত হবে।

এর আগে সংবাদ সম্মেলনে মাহবুব আলম বলেন, গত ১৭ নভেম্বর সন্ধ্যায় পল্লবী থানাধীন বিক্রমপুর স্যানিটারি ও হার্ডওয়্যার দোকানে ছয়জন অজ্ঞাতনামা সন্ত্রাসী প্রকাশ্যে পিস্তল দিয়ে বুকে ও পিঠে অতর্কিত গুলি করে পল্লবী থানা যুবদলের সদস্যসচিব গোলাম কিবরিয়াকে হত্যা করে। ঘটনাস্থল থেকে পালানোর সময় স্থানীয় জনতার ওপর অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা গুলি করে এবং এতে একজন রিকশাচালক গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর জখম হয়। পরবর্তীতে ছাত্র-জনতা তাদেরকে ধাওয়া করে জনি ভূঁইয়া নামক একজন সন্ত্রাসীকে আটক করে পল্লবী থানা পুলিশের কাছে সোর্পদ করে।

তিনি বলেন, ঘটনার পরপরই র‌্যাব-৪-এর একটি আভিযানিক দল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ এবং আনুষঙ্গিক তথ্যাদি বিশ্লেষণ করে ঘটনার রহস্য উদঘাটন এবং জড়িত আসামিদের আইনের আওতায় আনতে ছায়া তদন্ত শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) রাতে সাভার থানাধীন বিরোলিয়া এলাকা থেকে হত্যাকাণ্ডের নির্দেশদাতা ও পরিকল্পনাকারী মো. মনির হোসেন ওরফে সোহেল ওরফে পাতা সোহেল এবং টঙ্গী পশ্চিম থানাধীন মাজার বস্তি এলাকা থেকে হত্যাকাণ্ডের সন্দিন্ধ ও ১৮টি মামলার শীর্ষ ও পলাতক সন্ত্রাসী মো. সুজন ওরফে বুকপোড়া সুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

আমাদের সময়