Image description
 

গত ১০ নভেম্বর রাজধানীর বাংলামোটরে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পালানোর সময় দুইজনকে আটক করে দলটির নেতাকর্মীরা। পরে তাদেরকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। এই ঘটনার পর আমার দেশ পত্রিকার লোগো ব্যবহার করে একটি ভুয়া ফটোকার্ড ফেসবুকে ভাইরাল হয়, যেখানে দাবি করা হয় আটককৃতদের একজন নাকি শিবির নেতা।

ভুয়া ফটোকার্ডটি ভাইরাল হওয়ার পর আমার দেশ পত্রিকার পক্ষ থেকে দ্য ডিসেন্ট-কে জানানো হয়, এরকম কোন খবর তারা প্রচার করেননি। এরপর নিজেদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেইজে পোস্ট করেও কার্ডটি যে ভুয়া তা জানানো হয়।

পাশাপাশি রমনা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম ফারুক দ্য ডিসেন্ট-কে বলেন, “আমরা জিজ্ঞাসাবাদে তাদের শিবির সংশ্লিষ্টতার কোনো তথ্য পাইনি”।

দ্য ডিসেন্ট-সহ একাধিক ফ্যাক্ট চেকিং প্রতিষ্ঠান এবং আমার দেশ পত্রিকা নিজে এই ফটোকার্ডটি ভুয়া হিসেবে চিহ্নিত করে প্রতিবেদন প্রকাশের পরও ১১ নভেম্বর দৈনিক কালের কণ্ঠের একটি অনলাইন টকশোতে বিএনপির স্বনির্ভর বিষয়ক সহ-সম্পাদক ও সাবেক এমপি নিলুফার চৌধুরী এই ভুয়া ফটোকার্ডের রেফারেন্স দিয়ে কথা বলেছেন।

তিনি বলেন, “এনসিপির কার্যালয়ের সামনে যে ককটেল ফুটিয়েছে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে, পরে জানা গেছে সে শিবিরের কর্মী। তাহলে আমি কি ধরে নিব, এতদিন এনসিপির কার্যালয়ের সামনে যতগুলো ককটেল ফুটিয়েছে, সবগুলো শিবিরই করেছে?”

টকশোতে ভুল দাবি করেন বিএনপি নেত্রী নিলুফার চৌধুরী

টকশোতে ভুল দাবি করেন বিএনপি নেত্রী নিলুফার চৌধুরী | ইউটিউব

শুধু নিলুফার চৌধুরী নন, এই ভুয়া খবরটির ওপর ভিত্তি করে ১৫ নভেম্বর বক্তব্য দিয়েছেন বিএনপির আরেক কেন্দ্রীয় নেতা শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানীও। লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার দত্তপাড়া ইউনিয়নের বিএনপি ও মহিলা দলের যৌথ উদ্যোগে একটি উঠান বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির এই যুগ্ম মহাসচিব বলেন, “এনসিপির অফিসের সামনে একজনকে হাতেনাতে গ্রেফতার করেছে, পরে দেখা গেল তিনি শিবির কর্মী।”।

এ্যানীর বক্তব্যের ভিডিওটি প্রচার করেছিল  “লক্ষ্মীপুর সান” নামক একটি স্থানীয় নিউজভিত্তিক ফেসবুক পেইজ। পেইজের মালিক ও দৈনিক জনকণ্ঠ পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি ফরহাদ হোসাইন দ্য ডিসেন্ট-কে বিএনপি নেতার এই বক্তব্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

শুধু বিএনপির দুই নেতা একটি ভুয়া ফটোকার্ডের ওপর ভিত্তি করে বক্তব্য দিয়েছেন তা নয়, সাম্প্রতিক সময়ে ফেসবুকের ভুয়া খবরের রেফারেন্স দিয়ে টকশোতে বা রাজনৈতিক সভা-সমাবেশে কথা বলার ঘটনা বাড়ছে। রাজনৈতিক নেতাদের পাশাপাশি টকশোতে সাংবাদিক এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষকরাও প্রায়ই এমন ভুয়া খবরের রেফারেন্স দিয়ে কথা বলছেন।

দ্য ডিসেন্ট এমন কিছু সাম্প্রতিক উদাহরণ সংকলন করেছে এই প্রতিবেদনে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের দ্বারা ভুয়া খবর ছড়ানো সমাজে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

ইউনিভার্সিটি অব লিবারাল আর্টস এর সোশাল সায়েন্সেস অনুষদের ডিন এবং মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের প্রধান অধ্যাপক সুমন রহমান বলেছেন, “তারা হলো ইনফ্লুয়েন্সিয়াল ব্যক্তি। তাদের কথা অনেকে শুনে, বিশ্বাস করে এবং মানে। কিন্তু তাদের কথার মাধ্যমে মানুষ ভুল তথ্য পাচ্ছে। তাদেরকে উচিত সচেতন হওয়া এবং যথাযথ প্রশিক্ষণ নেওয়া। অন্যথায় কর্তৃপক্ষের তাদেরকে বাধ্যতামূলক টেংনি করানো দরকার।”

এএফপি ফ্যাক্ট চেক এর বাংলাদেশ সম্পাদক মোহাম্মদ ইয়ামিন সাজিদ বলেন, “প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দল ও ব্যক্তি বিশেষকে হেয় করা, জনমতের উপর প্রভাব বিস্তারের লক্ষ্যে ভিত্তিহীন ও অসত্য তথ্য দিয়ে জেনে বুঝে কনটেন্ট বানিয়ে অপপ্রচার চালানো হয়। কিন্তু সাধারণ জনগণ এসব কনটেন্টকে সরল মনে বিশ্বাস করে অপতথ্যের শিকার হন।”

 

ভুয়া খবর ছড়াচ্ছেন জামায়াত নেতারাও

গত ১২ নভেম্বর জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা-১২ আসনের এমপি প্রার্থী সাইফুল আলম খান মিলন রাজধানীর তেজগাঁও পশ্চিম তেজতুরী বাজারে একটি উঠান বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের সমালোচনা করে বলেন, “আপনার জীবনে কী করলেন? প্রায় ৮০ বছর হয়ে গিয়েছে। একবারও নির্বাচনে জিততে পারেননি। এলাকায় গিয়ে বলছেন, ‘বাবারে, আমার বয়স হয়ে গিয়েছে, এইবার ভোটটা দাও। আর দাঁড়াবো না।”

পরে এই বক্তব্যের ভিডিও মিলন তার অফিসিয়াল ফেসবুক পেইজেও প্রচার করেন, যেখানে নেটিজেনদের বিভিন্ন ধরনের মন্তব্য করতে দেখা যায়।

মির্জা ফখরুল কখনো এমপি হতে পারেননি বলে দাবি করেন জামায়াত নেতা সাইফুল আলম

মির্জা ফখরুল কখনো এমপি হতে পারেননি বলে দাবি করেন জামায়াত নেতা সাইফুল আলম | ফেসবুক

তবে নির্বাচন কমিশনের তথ্যমতে, মির্জা ফখরুল ইসলাম মোট তিনবার জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন —১৯৯৬ সালের ফেব্রুয়ারি ও ২০০১ সালের অক্টোবর নির্বাচনে ঠাকুরগাঁও-১ আসন থেকে এবং ২০১৮ সালে বগুড়া-৬ আসন থেকে।

চলতি বছরের ২৯ আগস্ট জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. রেজাউল করীমের একটি বক্তব্য ফেসবুকে ভাইরাল হয়। একুশে টেলিভিশনের ফেসবুক পেইজে পোস্ট করা একটি ভিডিও ক্লিপে দেখা যায় টিভি চ্যানেলটির টকশোতে হাজির হয়ে ড. রেজাউল করীম রাজাকারের তালিকা বিষয়ে কথা বলছেন।

তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগ যে দশ হাজারের তালিকা করেছিল, দ্বিতীয় অবস্থানে তো আপনারা (বিএনপি)। তালিকায় আওয়ামী লীগের ৮ হাজার ৩০০, আপনারা (বিএনপি) ২০০ আর আমরা (জামায়াতে ইসলামী) ৩৭ জন।”

এর আগে, জিটিভির ‘নাটাই সুতো কার হাতে’ শিরোনামের টকশোতে হাজির হয়ে গত ৪ সেপ্টেম্বর জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা দক্ষিণের নায়েবে আমীর হেলাল উদ্দীন একই রকম বক্তব্য দেন রাজাকারের তালিকা ইস্যুতে।

তিনি বলেছিলেন, “আওয়ামী লীগ ১০ হাজার রাজাকারের তালিকা দিয়েছে। সেখানে ১ নম্বরে আছে আওয়ামী লীগ, ২ নম্বরে বিএনপি, ৩ নম্বরে জাতীয় পার্টি এবং লাস্টে আমরা জামায়াত।”

তবে দ্য ডিসেন্ট-এর অনুসন্ধানে দেখা গেছে, জামায়াত নেতাদের প্রচার করা এই তথ্য অসত্য ও বিভ্রান্তিকর।

মূলত ২০১৯ সাল থেকে ফেসবুকে জামায়াতপন্থী বিভিন্ন পেইজ ও একাউন্টের প্রচার করা একটি ভুয়া খবর এটি। ওই বছরই ভুয়া খবরটি খণ্ডন করে রিপোর্ট প্রকাশ করেছিল বিডি ফ্যাক্টচেক নামের একটি প্রতিষ্ঠান।

সম্প্রতি দ্য ডিসেন্ট আবারও ভুয়া দাবিটি খণ্ডন করে প্রতিবেদন প্রকাশ করে যার শিরোনাম, “রাজাকারের তালিকায় জামায়াতের মাত্র ৩৭ জন থাকার পুুরনো অসত্য নতুন করে প্রচার”।

প্রকৃতপক্ষে, ২০১৯-এ আওয়ামী লীগ সরকারের প্রকাশিত ১৯৭১ সালের রাজাকারের তালিকায় ‘জামায়াত’ পরিচয় দেয়া ছিল অন্তত ৭৮ জনের নামের পাশে। তবে বেশিরভাগ ব্যক্তির নামের পাশে কোন রাজনৈতিক পরিচয় উল্লেখ করা ছিল না। ফলে, ওই তালিকায় ‘জামায়াতের মাত্র ৩৭ জনের নাম আছে’ দাবি করাটা অসত্য।

এর আগে জামায়াতে ইসলামী আরেক এমপি প্রার্থী মাওলানা আমির হামজা ফেসবুকে ছড়ানো ভুয়া খবরের বরাতে একাধিকবার বক্তব্য দিয়েছিলেন। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি হল ২০২৪ সালের নভেম্বর মাসে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা হিসেবে মোস্তফা সরয়ার ফারুকী শপথ নেয়ার পরদিন ফেসবুকে বিভিন্ন মিম পেইজ থেকে ভুয়া খবর ছড়ায় যে, ‘সমকামিতার পক্ষে অবস্থান নেয়ার কারণে ফারুকীকে উপদেষ্টা পদ থেকে সরিয়ে দিয়ে এলজিবিটির বিরুদ্ধে ক্যাম্পেইন করা আসিফ মাহতাবকে উপদেষ্টা করা হয়েছে’। ফেসবুকে ছড়ানো এই গুজবকে আমলে নিয়ে তা ওয়াজ মাহফিলে প্রচার করেছিলেন আমির হামজা। 

এ নিয়ে ফ্যাক্ট চেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল একাধিক ফ্যাক্ট চেক প্রতিষ্ঠান।

 

এআই ভিডিওকে ‘পাবলিকের বক্তব্য’ হিসেবে প্রচার ইসলামী আন্দোলনের নেতার

চলতি বছরের জুলাই মাসে ফেসবুকে একটি এআই জেনারেটেড ভিডিও ভাইরাল হয় যেখানে দেখা যায়, একজন এআই চরিত্র (যুবক) বাজারে অবস্থান করা আরেকজন এআই চরিত্রকে (বয়স্ক লোক) মাইক হাতে প্রশ্ন করেন, ‘বিএনপির গুন কী কী’? উত্তরে বয়স্ক চরিত্রটি বলেন, “বিএনপির অনেক গুণ, ৯ মাসে দেড়শো (১৫০) খুন; চাঁদা তুলে পল্টনে, ভাগ যায় লন্ডনে।”

এই ভিডিওর বক্তব্যকে ‘পাবলিকের বক্তব্য’ হিসেবে একাধিক রাজনৈতিক সমাবেশে প্রচার করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নায়েবে আমির মুফতি ফয়জুল করিম।

গত ১০ জুলাই ঢাকা পোস্টে প্রকাশিত একটি ভিডিওতে দেখা যায় বিএনপির সমালোচনা করতে গিয়ে ফয়জুল করিম বলেছেন, “দেখেন পাবলিক বলতেছে, আমি বলতেছি না “বিএনপি’র কী গুণ? নয় মাসে দেড়শ খুন, চাঁদা তুলে পল্টনে চলে যায় লন্ডনে”।

এআই ভিডিওকে ‘পাবলিকের মন্তব্য’ হিসেবে রেফারেন্স দেন মুফতি ফয়জুল

এআই ভিডিওকে ‘পাবলিকের মন্তব্য’ হিসেবে রেফারেন্স দেন মুফতি ফয়জুল | ইউটিউব


ভুয়া খবরের রেফারেন্স দেন টকশো বিশ্লেষকরা

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক ড. নাহরীন আই. খান– যিনি বিএনপিপন্থী শিক্ষক এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষক হিসেবে পরিচিত– গত ২৫ অক্টোবর জি টিভির একটি টকশোতে বলেন, “জামায়াতের সিরাজগঞ্জের সেক্রেটারি বলেছেন, আওয়ামী লীগের যারা পালিয়ে গেছে, তাদের স্ত্রীদের প্রতি জামায়াতের হক আছে।”

তবে বাস্তবে বাংলাদেশের গণমাধ্যমে সিরাজগঞ্জ জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি অধ্যাপক মুহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম দাবি করেছেন, তিনি এ ধরনের কোনো বক্তব্য দেননি।

এই বিষয়ক একটি ভুয়া ফটোকার্ড ফেসবুকে ছড়িয়েছিল এবং একাধিক ফ্যাক্ট চেকিং প্রতিষ্ঠান সেটি তাৎক্ষণিকভাবে খণ্ডন করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল। কিন্তু এরপরও ড. নাহরীন আই খান ভুয়া বক্তব্যটির রেফারেন্স দিয়ে টকশোতে কথা বলেছেন।

তার বিরুদ্ধে ভুয়া খবর ছড়ানোয় গত ৪ নভেম্বর সিরাজগঞ্জ সদর থানা আমলি আদালতে জামায়াত নেতা জাহিদুল ইসলাম ড. নাহরীন খানের বিরুদ্ধে মানহানির মামলাও দায়ের করেন।

টকশোতে জামায়াত নেতার বিরুদ্ধে ভুল দাবি করেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নাহরীন ইসলাম

টকশোতে জামায়াত নেতার বিরুদ্ধে ভুল দাবি করেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নাহরীন ইসলাম | ইউটিউব

আরেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আবু হেনা রাজ্জাকী গত ৭ নভেম্বর একুশে টিভির একটি টকশোতে দাবি করেন, “বিএনপি থেকে মনোনয়নপ্রাপ্ত ২৩৭ জনের মধ্যে ১১৩ জনকে রদবদল করা হয়েছে।”

পরে টকশোর অন্য এক অতিথি এ তথ্যের উৎস জানতে চাইলে রাজ্জাকী বলেন, এনপিপি নামের একটি নিউজ পোর্টালে খবর প্রকাশ করেছে।

দ্য ডিসেন্ট এনপিবির প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে দেখেছে প্রতিবেদনের শিরোনামটি বিভ্রান্তিকর হলে ভেতরে আবু হেনা রাজ্জাকী যা দাবি করেছেন তেমন তথ্য নেই। একইসাথে এনপিবি কোনো মূলধারার অথবা নির্ভরযোগ্য সংবাদমাধ্যম হিসেবে পরিচিত নয়। তবু নিজের অবস্থানের পক্ষে যাওয়ায় সেটির বিভ্রান্তিকর শিরোনামের রেফারেন্স তিনি ব্যবহার করেছেন।

 

ভুয়া খবরকে ‘প্রমাণ’ হিসেবে ব্যবহার করেন সাংবাদিকরাও

গত ১৩ নভেম্বর কালের কণ্ঠের একটি টকশোতে উপস্থাপক সাদমান সাকিব ফেসবুকে ছড়ানো একটি ভুয়া স্ক্রিনশটের ভিত্তিতে টকশোর অতিথি মাসুদ কামালকে প্রশ্ন করেন, “প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা যে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দিয়েছেন সেটা শোনার জন্যই নাকি মানুষ ঘর থেকে বের হননি — বিষয়টা আপনি কীভাবে দেখেন?”

উত্তরে সিনিয়র সাংবাদিক মাসুদ কামাল বলেন, “উনাকে পাবনা পাঠিয়ে দেন। উনার মাথা খারাপ হয়ে গেছে।”

এরপর প্রেস সচিব শফিকুল আলম নিজে তার ফেসবুকে পোস্ট করে জানান এমন বক্তব্য তিনি দেননি এবং ফ্যাক্ট চেকিং প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতিবেদনেও উঠে আসে এই স্ক্রিনশটটি ভুয়া।

প্রেস সেক্রেটারির নামে ভুল মন্তব্য করেন মাসুদ কামাল

প্রেস সেক্রেটারির নামে ভুল মন্তব্য করেন মাসুদ কামাল | ইউটিউব

এরপরও ওই রাতে মাসুদ কামাল তার ইউটিউব চ্যানেলে “লকডাউন নয়, ভাষণ শুনতে রাস্তা ফাঁকা” শিরোনামে একটি ভিডিও আপলোড করেন, যেখানে টকশোতে প্রচারিত ওই ভুয়া স্ক্রিনশটের বক্তব্য তিনি পুনরায় প্রচার করেন। 

এ নিয়ে সমালোচনা হলেও ১৮ নভেম্বর পর্যন্ত তিনি ভিডিওটির শিরোনাম পরিবর্তন করেননি। 

অন্যদিকে কালের কণ্ঠও ভুয়া স্ক্রিনশট প্রচারের কারণে ক্ষমা প্রার্থনা করেনি, কিংবা ভিডিওটি প্রত্যাহারও করেনি।