জুলাই অভ্যুত্থানকালীন ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলার রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে গতকাল ধানমণ্ডির ৩২ নম্বর এলাকা ছিলো উত্তপ্ত। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর অবস্থানের মধ্যেই সেখানে উপস্থিত হয়েছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) কার্যনির্বাহী সদস্য উম্মা উসওয়াতুন রাফিয়া। তবে পুলিশের সঙ্গে বাদানুবাদের একপর্যায়ে চিত্রনায়িকা 'পরীমনির' সঙ্গে তুলনা করা একটি মন্তব্যে তিনি তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
গত ১৭ তারিখ শেখ হাসিনার রায়ের দিন একদল জনতা ধানমণ্ডির ৩২ নম্বরে শেখ মুজিবের বাড়ি ভেঙ্গে দিতে বুলডোজার নিয়ে আসে। বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দিতে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করলে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় পুলিশের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়েন রাফিয়া। ভিড়ের মধ্য থেকে কেউ একজন তাকে উদ্দেশ্য করে বলে ওঠেন, ''পরীমনির মতো ভাইরাল হতে এসেছেন এখানে।" প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এই মন্তব্য শুনেই মেজাজ হারান রাফিয়া। তিনি পুলিশের দিকে এগিয়ে গিয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে বারবার জানতে চান, মন্তব্যটি কে করেছেন এবং কেন তাকে দেখে মনে হলো যে তিনি পরীমনির মতো ভাইরাল হতে এসেছেন।
ঘটনাস্থলের উত্তাপ শেষে রাফিয়া নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একটি দীর্ঘ পোস্ট দেন। সেখানে তিনি নিজের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক পরিকল্পনা এবং বর্তমান দলগুলোর প্রতি তার দৃষ্টিভঙ্গি পরিষ্কার করেন। তিনি সাফ জানিয়ে দেন, ভবিষ্যতে কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়ানোর সম্ভাবনা তার নেই বললেই চলে। পোস্টে তিনি লেখেন, ''একটা স্পষ্ট কথা বলি, জামায়াত, বিএনপি, সবেতেই আমি ডিজাপোয়েন্টেড (হতাশ)। এনসিপির প্রতি আশা ছিল, সেই আশা আস্তে আস্তে নিভতেছে। 'মন্দের ভালো' বলে কোনো দলের সাথে আমি যাব না।" কোনো দলের স্বার্থে নয়, বরং অন্যায়ের বিরুদ্ধেই তার অবস্থান, এমনটা উল্লেখ করে ডাকসুর এই সদস্য বলেন, ''যত দিন মজলুমের ওপর লাঠিচার্জ হবে, যত দিন স্বৈরাচারের প্রেতাত্মা সিন্দাবাদের ভূতের মতো আমাদের রাষ্ট্রযন্ত্রের ঘাড়ে সাওয়ারি হয়ে থাকবে, তত দিন আমি জালিমের বিরুদ্ধে দাঁড়াব। আমার কোনো দল নাই, রাজনৈতিক কোনো স্বার্থ নাই।"
পরবর্তীতে পুলিশ সদস্যের এমন মন্ত্যব্যের জন্য ডাকসু কার্যনির্বাহী সদস্য উম্মা উসওয়াতুন রাফিয়ার কাছে ক্ষমা চেয়েছেন ধানমন্ডি থানার ওসি।