Image description

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের ফাঁসির রায় ঘোষণা করা হয়েছে। তবে আইনবিদ, শিক্ষার্থী ও আন্দোলনকারীদের মতে, ফাঁসির রায় কার্যকর করাটা এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।

গতকাল সোমবার রায় ঘোষণার পর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল, হাইকোর্ট এলাকা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র-জনতার উচ্ছ্বাস দেখা যায়। শহীদ পরিবারগুলো রায়ের প্রতি সন্তুষ্টি জানালেও তাদের দাবি— দণ্ডপ্রাপ্তদের দ্রুত দেশে ফিরিয়ে এনে যেন রায় কার্যকর করা হয়।

শহীদ আবু সাঈদের ভাই রমজান আলী বলেন, আমরা রায় দ্রুত কার্যকর দেখতে চাই।

তার বাবা মকবুল হোসেন বলেন, শুধু রায় ঘোষণাই যেন শেষ না হয়।

মা মনোয়ারা বেগম বলেন, আর কোনো মায়ের বুক যেন খালি না হয়- এজন্য দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে, ফাঁসির রায় কার্যকর করতে হবে।

জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ অনেকে সকাল থেকেই ট্রাইব্যুনাল এলাকায় আসেন। উত্তরার আহত জুলাই যোদ্ধা মুস্তাঈন বিল্লাহ বলেন, নয় মাস হাসপাতালে কাটিয়েছি। এখন চাই- দ্রুত রায় কার্যকর হোক।

আন্দোলনকারী সালমান হোসেন বলেন, হাজারো মানুষের রক্ত ঝরানো অপরাধীরা যেন বিদেশে আরামে না থাকতে পারে। তাদের ফিরিয়ে এনে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

রিকশাচালক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান বলেন, রায় ঘোষণা করা সহজ, কার্যকর করা কিন্তু বেশ কঠিন। রাজনৈতিক আশ্রয়দাতা দেশগুলো হাসিনা ও তার দোসরদের ফেরত দেবে না।

স্বাধীন বাংলাদেশ ছাত্র সংসদের আহ্বায়ক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জামালউদ্দিন মোহাম্মদ খালিদ বলেন, গণহত্যার রায় স্বস্তির, তবে কার্যকর হওয়া নিয়ে সন্দেহ আছে। হত্যাকাণ্ড ঘটালে যে বিচারের মুখোমুখি হতে হয়, তা দেখে স্বস্তি পাচ্ছি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদল নেতা মেহেদী হাসান মুন্না বলেন, ভারত, কানাডা, আমেরিকায় আশ্রয় নেওয়া দণ্ডপ্রাপ্তদের ফিরিয়ে আনা কঠিন। ভারত হাসিনাকে সহজে দেবে না।

আইন বিভাগের অধ্যাপক কাজী মাহফুজুল হক শোপন বলেন, এক দেশ আরেক দেশের কাছে অপরাধী হস্তান্তর করতে বাধ্য- এমন আন্তর্জাতিক আইন নেই। ভারত না দিলে অপরাধীদের বাংলাদেশে আনার উপায় নেই।

তিনি আরো বলেন, ইংল্যান্ড, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়াসহ অনেক দেশে আশ্রয় নিয়ে থাকে অপরাধীরা। আন্তর্জাতিক এক্সট্রাডিশন ব্যবস্থা এখনো দুর্বল। ফলে রায় কার্যকরই বড় চ্যালেঞ্জ।