Image description

বাংলাদেশের রাজনীতিতে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায়ের উল্লেখযোগ্য প্রভাব রয়েছে বলে মনে করছে ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ (আইসিজি)। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে সোমবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার পর বেলজিয়ামভিত্তিক গ্রুপটি এ মন্তব্য করেছে। তারা বলেছে, এ বিচারপ্রক্রিয়া সমালোচনামুক্ত নয়। তবে এ রায়ের ফলে শেখ হাসিনার রাজনৈতিক প্রত্যাবর্তনের সম্ভাবনা খুব ক্ষীণ হয়েছে।

আইসিজির বাংলাদেশবিষয়ক জ্যেষ্ঠ কনসালট্যান্ট থমাস কিয়ান বিবৃতিতে বলেন, ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য দোষী সাব্যস্ত করার রায়কে বাংলাদেশে ব্যাপকভাবে স্বাগত জানানো হবে। কারণ, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে বিক্ষোভকারীদের ওপর সংঘটিত নৃশংসতার জন্য তাঁর দায় নিয়ে সন্দেহের অবকাশ খুব কম।’

এ প্রসঙ্গে জাতিসংঘের তথ্য-অনুসন্ধান প্রতিবেদনে গত বছর বিক্ষোভ-সহিংসতায় ১ হাজার ৪০০ মানুষ নিহত হওয়ার যে তথ্য দেওয়া হয়, সেটি উল্লেখ করেছে ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ।

এ বিচারপ্রক্রিয়া সমালোচনার বাইরে নয় উল্লেখ করে আইসিজি বলেছে, ‘(আসামির) অনুপস্থিতিতে হওয়া বিচার প্রায়ই বিতর্কের সূত্রপাত করে। এ মামলার ক্ষেত্রে যে দ্রুততার সঙ্গে শুনানি হয়েছে, সেটা এবং বিবাদী পক্ষের স্পষ্টত সুযোগ-সুবিধার ঘাটতিও সুষ্ঠু বিচার নিয়ে প্রশ্ন তৈরি করে। এসব সমালোচনা বাংলাদেশের ফৌজদারি বিচারব্যবস্থার দীর্ঘস্থায়ী চ্যালেঞ্জগুলোকে তুলে ধরছে। ২০২৪ সালের আগস্টে ক্ষমতায় আসার পর দেশটির অন্তর্বর্তী সরকার (এসব চ্যালেঞ্জ) সমাধান করতে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেয়নি। কিন্তু এসব সমালোচনা শেখ হাসিনার কর্মকাণ্ড, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বের কর্মকাণ্ড বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশের কর্মকাণ্ডকে হালকাভাবে নেওয়ার জন্য ব্যবহার করা উচিত নয়।’

এ রায়ের উল্লেখযোগ্য রাজনৈতিক প্রভাব রয়েছে বলে মনে করছে ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘(এ রায়ের ফলে) শেখ হাসিনার বাংলাদেশের রাজনীতিতে ফিরে আসার সম্ভাবনা এখন খুব কম বলে মনে হচ্ছে। তিনি যত দিন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের নিয়ন্ত্রণ ছাড়তে রাজি না হচ্ছেন, তত দিন দলটির রাজনীতির ময়দানে ফেরা সহজ হবে না।’

২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। এমন এক সময়ে সাম্প্রতিক বোমা হামলার ঘটনা এবং আওয়ামী লীগের ‘লকডাউন’ কর্মসূচি দেশটির পরিস্থিতি উত্তপ্ত করে তুলেছে বলে উল্লেখ করেছে আইসিজি। তারা বলেছে, আওয়ামী লীগের সহিংসতাপূর্ণ কার্যক্রম থেকে বিরত থাকা উচিত এবং অন্তর্বর্তী সরকারকে অবশ্যই দলটির সমর্থকদের ওপর অতিরিক্ত দমন-পীড়ন বাদ দিতে হবে।