Image description

ভালো শিক্ষক মানে কেবল পাঠদান করা নয়, বরং তিনি একজন দিকনির্দেশক, অনুপ্রেরণাদাতা এবং সমাজ গড়ার কারিগর। যশোরের শার্শা উপজেলার বাগুড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা মোছা. খাদিজা খাতুন যেন তারই জীবন্ত উদাহরণ। বিশ্ব শিক্ষক দিবস উপলক্ষে প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যায়ে যশোর জেলার ‘শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক’ নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। সম্প্রতি খুলনা বিভাগীয় উপপরিচালক (প্রাথমিক শিক্ষা) প্রেরিত নির্দেশনার আলোকে যশোর জেলা শিক্ষা অফিসার মো. আশরাফুল আলম স্বাক্ষরিত তালিকায় তার নাম ঘোষণা করা হয়। 

বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত এক দশক ধরে খাদিজা খাতুন বিদ্যালয়টিকে কেবল একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নয়, বরং শিশুদের স্বপ্ন দেখার ক্ষেত্র হিসেবে গড়ে তুলেছেন। তার নেতৃত্বে বিদ্যালয়ে উপস্থিতির হার বেড়েছে, শিক্ষার্থীদের ফলাফল উন্নত হয়েছে এবং প্রতিষ্ঠার দীর্ঘ ৪২ বছর পর বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রথমবারের মতো বৃত্তি অর্জন করেছে। স্থানীয় অভিভাবকদের মাঝেও তৈরি হয়েছে শিক্ষার প্রতি সচেতনতা। 

সূত্র আরও জানায়, বিদ্যালয়ের পরিবেশ এখন গোছানো ও প্রাণবন্ত। খেলার মাঠে দৌড়ঝাঁপ, গানে-অভিনয়ে অংশ নেওয়া কিংবা পাঠচক্রে ব্যস্ত শিক্ষার্থীদের চোখেমুখে ফুটে ওঠে আত্মবিশ্বাস। স্থানীয়রা বলছেন, এই পরিবেশ গড়ে ওঠার নেপথ্যে আছেন প্রধান শিক্ষিকা মোছা. খাদিজা খাতুনের অক্লান্ত পরিশ্রম। শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী নাজিব হাসান উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে খাদিজা খাতুন বলেন, আমি যখন বিদ্যালয়ে যোগদান করি, তখন এটি যেন ভেঙে পড়া এক ঘর। শিক্ষকরা বেশিদিন থাকতেন না, শিক্ষার্থীরাও পাশের স্কুলে চলে যেত। আমি কায়িক পরিশ্রম করেছি, শিক্ষার্থীদের পাশে থেকেছি। প্রতিষ্ঠার ৪২ বছর পর আমাদের স্কুল থেকে শিক্ষার্থীরা প্রথম বৃত্তি পায়। শিক্ষা দপ্তর আমার এই প্রচেষ্টা মূল্যায়ন করায় আমি আনন্দিত ও কৃতজ্ঞ। তবে জরাজীর্ণ স্কুল ভবনটি ভেঙে নতুন ভবন নির্মাণ হলে আরও ভালোভাবে সন্তানদের মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে পারব।