
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ ও দপ্তরের ৩৯ শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে শোকজ নোটিশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তাদের বিরুদ্ধে বিগত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী আমলে অনিয়ম ও দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ আনা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) এ নোটিশ দেওয়া হয়। অভিযুক্তদের মধ্যে ১৯ জন শিক্ষক এবং ২০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন। তাদের ১০ কর্মদিবসের মধ্যে লিখিত ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।
অভিযুক্ত শিক্ষকরা হলেন ফোকলোর বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. মোহাম্মদ মেহেদী উল্লাহ। যিনি আবেদনের যোগ্যতা পূরণ না করে আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে শিক্ষক হওয়ার এবং নম্বর টেম্পারিংয়ের মাধ্যমে এক ছাত্রীকে প্রথম বানিয়ে নিজ বিভাগে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগের গুরুতর অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এছাড়া আরও শোকজ পেয়েছেন থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের মো. মুশফিকুর রহমান, নুসরাত শারমিন তানিয়া, ড. মো. কামাল উদ্দীন; সঙ্গীত বিভাগের ড. মো. জাহিদুল কবীর, ড. মুশাররাত শবনম; চারুকলা বিভাগের নগরবাসী বর্মণ, মাসুম হাওলাদার; দর্শন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মো. তারিফুল ইসলাম, মো. খাইরুল ইসলাম; বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের ড. মার্জিয়া আক্তার, ড. মো. সাহাবউদ্দীন, ড. মো. মাহবুব হোসেন; হিউম্যান রিসোর্স অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ড. মাসুদ রানা, অন্তরা মাহবুব; হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য পদ্ধতি বিভাগের ড. মোল্লা আমিনুল ইসলাম; কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ড. মো. সেলিম আল মামুন; ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের ফারজানা খানম এবং ফিল্ম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের ড. মো. তুহিনুর রহমান।
অভিযুক্ত কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা হলেন সাবেক রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ ড. হুমায়ুন কবির; অর্থ ও হিসাব দপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক মো. নজরুল ইসলাম; প্রকৌশল দপ্তরের উপ প্রধান প্রকৌশলী মো. মাহবুবুল ইসলাম; অতিরিক্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. আব্দুল হালিম; পরিকল্পনা, উন্নয়ন ও ওয়ার্কস দপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক কাজী মাহবুব ইলাহী; প্রকৌশল দপ্তরের কেয়ারটেকার মো. আসাদুজ্জামান; ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের পারসোনাল অফিসার রেবেকা সুলতানা; ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের পার্সোনাল অফিসার রোজিনা বেগম; হল সুপার সোহেল রানা; ডেপুটি চিফ মেডিকেল অফিসার ডা. মমতাজ বেগম; উপ রেজিস্ট্রার (স্টোর) নাজমুল হুদা; সহকারী প্রকৌশলী জান্নাতুন নাঈম; শরীরচর্চা শিক্ষা দপ্তরের উপ পরিচালক মো. ওমর ফারুক সরকার; উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক রেবেকা সুলতানা; সহকারী পরিচালক (অর্থ) এস এম কাউসার আহমেদ; সাবেক পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক নির্মল চন্দ্র সাহা; অর্থ ও হিসাব দপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক রাধেশ্যাম; সঙ্গীত বিভাগের ডেমোন্সট্রেটর মো. মশিউর রহমান; সিনিয়র প্লাম্বার মোহাম্মদ আসাবুল হক এবং কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের পার্সোনাল অফিসার খালেদা জেসমিন।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের সদস্যদের সমন্বয়ে তিনটি পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। প্রশাসনিক অনিয়ম ও দুর্নীতিসংক্রান্ত তদন্ত কমিটি, একাডেমিক অনিয়ম ও দুর্নীতিসংক্রান্ত তদন্ত কমিটি ও বিভিন্ন সময়ে ক্যাম্পাসে সংঘটিত বিভিন্ন ঘটনার তথ্য যাচাই-বাছাইসংক্রান্ত তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এসব কমিটির প্রধান হিসেবে আছেন সিন্ডিকেট সদস্য মাহবুবুর রহমান, জাকির হোসেন খান ও অধ্যাপক আকতার হোসেন মজুমদার।