
গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জুলাই পদযাত্রায় হামলার প্রস্তুতি চলছিল কয়েক দিন ধরেই। এ জন্য জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে আওয়ামী লীগ (কার্যক্রম নিষিদ্ধ) ও নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা আগে থেকেই এসে গোপালগঞ্জ শহরে অলিগলিতে অবস্থান নেন। এনসিপির এই কর্মসূচি ঘিরে কয়েক দিন ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও নানা হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। গত এক সপ্তাহের গোপালগঞ্জের ঘটনাপ্রবাহ ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তৎপরতা বিশ্লেষণ করে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, এনসিপির পদযাত্রা ঘিরে সংঘাতের ইঙ্গিত ছিল স্পষ্ট। এনসিপির সমাবেশ ঘিরে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা হামলা ও সহিংসতায় জড়াবেন—স্থানীয়ভাবেও এমন আশঙ্কা করা হচ্ছিল। এনসিপির স্থানীয় নেতাদের পক্ষ থেকেও এমন আশঙ্কার কথা জেলা পুলিশকে জানানো হয়। এরপরও স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পর্যাপ্ত নিরাপত্তা প্রস্তুতি গ্রহণ করতে পারেনি।
গত বুধবারের হামলার পর ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী, স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অন্তত ১৮ জনের সঙ্গে গতকাল বৃহস্পতিবার কথা বলেছে প্রথম আলো। সেখান থেকে এই হামলার বিষয়ে একটি চিত্র পাওয়া গেছে। তাঁরা বলছেন, আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের স্থানীয় নেতারা কয়েক দিন ধরেই এনসিপির কর্মসূচি ঠেকাতে কাজ করছিলেন। এ জন্য বিভিন্ন এলাকা থেকে নেতা-কর্মীদের গোপালগঞ্জ শহরে জড়ো করেন তাঁরা। পাশাপাশি গাছ কেটে সড়কে ফেলে চলাচলে প্রতিবন্ধকতা তৈরিরও পরিকল্পনা করেন তাঁরা।
গতকাল গোপালগঞ্জের গ্রাম পুলিশের এক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, আগে থেকেই এনসিপির নেতা-কর্মীদের আটকে রাখা ও মারধরের পরিকল্পনা ছিল। সেভাবে গ্রাম থেকে অনেক মানুষ এসেছিল। তারা ছোট ছোট ভাগে শহরের অলিগলিতে অবস্থান নিয়েছিল।
গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার শরফ উদ্দিন আহমেদ চৌধুরীও এক প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, ‘আমাদের কাছে তথ্য আছে, কিছু দুষ্কৃতকারী বাইরে থেকেও এসেছিল। তারা এখনো গোপালগঞ্জে অবস্থান করছে। এমন গোয়েন্দা তথ্য আছে। আমরা তাদের আইডেনটিফাই (শনাক্ত) করার চেষ্টা করছি এবং পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি।’
স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন, দলগতভাবে লোক জড়ো করার পাশাপাশি স্থানীয় লোকজনকে উত্তেজিত করতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও প্রচার চালান আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। বিশেষভাবে প্রচারণা চালানো হয়ে যে এনসিপির পদযাত্রার নামে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিসৌধে হামলা হবে। এ ছাড়া এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যুক্ত ব্যক্তিরা গোপালগঞ্জ জেলার নাম পরিবর্তন করতে চান বা এই জেলা বিলুপ্ত করে পার্শ্ববর্তী জেলার সঙ্গে মিলিয়ে দিতে চান—এমন প্রচারও করা হয়। ফলে সেখানকার অনেক সাধারণ মানুষের মধ্যেও প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়। হামলার ক্ষেত্র প্রস্তুত করার ক্ষেত্রে এই প্রচারণাও ভূমিকা রাখে।
সেখানে নিরাপত্তা প্রস্তুতি ছিল না, তা নয়। সেখানে পুলিশ সদস্য মোতায়েন ছিল। তবে এরপরও যদি কোনো গাফিলতি পাওয়া যায়, তাহলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) রেজাউল করিম মল্লিক
গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ১ জুলাই থেকে এনসিপি সারা দেশে মাসব্যাপী ‘জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচি পালন করছে। এরই অংশ হিসেবে গত বুধবার গোপালগঞ্জে কর্মসূচি ছিল। তবে এ কর্মসূচির আগের দিন থেকে ‘মার্চ টু গোপালগঞ্জ’ শীর্ষক প্রচার চালান এনসিপির নেতা-কর্মীরা। এ কারণে টুঙ্গিপাড়া বা গোপালগঞ্জের নাম পাল্টানোকেন্দ্রিক গুজব আরও তীব্র হয় বলে স্থানীয় লোকজন মনে করেন।
এমন প্রচারণা ও মাঠের বাস্তবতা সত্ত্বেও এনসিপির পদযাত্রার দিন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কেন দফায় দফায় হামলা ঠেকাতে ব্যর্থ হয়েছে—তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। বিভিন্ন জেলা ও আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আগের দিন এত লোক জড়ো হচ্ছে শহরে, সেটা কেন স্থানীয় প্রশাসনের নজরে এল না। গোপালগঞ্জের জায়গায় এমন কর্মসূচি ঘিরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পর্যাপ্তসংখ্যক সদস্য মোতায়েন বা প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি কেন ছিল কি না, সে প্রশ্নও সামনে এসেছে।
বিশ্লেষকেরা মনে করেন, এই প্রস্তুতির জন্য গোয়েন্দা তথ্যের অপেক্ষারও দরকার পড়ে না। কোন এলাকায় কোন ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে, এ বিষয়ে মাঠ প্রশাসনের সাধারণ ধারণা থাকে। এর সঙ্গে অতীত উদাহরণ থাকলে তো আরও বেশি সতর্কতার প্রয়োজন হয়। গণ-অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর সারা দেশে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা যখন পলায়নপর ছিলেন, তখনো গোপালগঞ্জে সেনাবাহিনীর ওপর হামলা করেছিলেন তাঁরা। স্বাভাবিকভাবেই এখানকার নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে বিশেষভাবে ভাবার প্রয়োজন ছিল। গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহেরও দরকার ছিল।
এ ছাড়া বুধবার সকাল সাড়ে নয়টায় পুলিশের ওপর হামলা ও তাদের গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়। এর চার ঘণ্টা পর এনসিপির সমাবেশস্থলে হামলা হয়। মাঝে চার ঘণ্টা সময় পাওয়া গেছে। এই সময়ে পার্শ্ববর্তী মাদারীপুরসহ আশপাশের এলাকা থেকে বাড়তি পুলিশ সদস্য আনার সুযোগ ছিল।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) রেজাউল করিম মল্লিক গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, সেখানে নিরাপত্তা প্রস্তুতি ছিল না, তা নয়। সেখানে পুলিশ সদস্য মোতায়েন ছিল। তবে এরপরও যদি কোনো গাফিলতি পাওয়া যায়, তাহলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স্থানীয় লোকজন জানান, সকালে পুলিশ ও ইউএনওর ওপর হামলার পর সভাস্থলে কিছুটা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এনসিপি নেতাদের সভাস্থলে আসা নিয়ে কিছুটা শঙ্কা দেখা দেয়। তখন এনসিপির পক্ষ থেকেও প্রশাসনকে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে বলা হয়। তখনো বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।
হামলার পরও ঢিলেঢালা নিরাপত্তা
এনসিপির জুলাই পদযাত্রা ঘিরে দফায় দফায় হামলা হয়েছে। এর মধ্যে সকাল সাড়ে নয়টার দিকে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার খাটিয়াগড় চরপাড়ায় পুলিশের ওপর হামলা করে তাদের গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এ খবর জেনে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এম রাকিবুল হাসান ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে ফেরার পথে বেলা সাড়ে ১১টায় তাঁর গাড়িতেও হামলা হয়। সকালের এই দুই দফা হামলার পরও কেন নিরাপত্তা প্রস্তুতি আরও বাড়ানো হয়নি, সেই প্রশ্ন উঠেছে।
স্থানীয় সূত্রগুলো বলছে, পৌনে দুইটার দিকে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের দুই-তিন শ নেতা-কর্মী বিভিন্ন ধরনের দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালান। ককটেল ও হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটান। তখন এনসিপির সদস্যদের সঙ্গে উপস্থিত পুলিশ সদস্যরাও দৌড়ে পার্শ্ববর্তী আদালত চত্বরে ঢুকে পড়েন। পরে অতিরিক্ত পুলিশ এসে হামলাকারীদের ধাওয়া দিয়ে সরিয়ে দেয়।
বেলা ২টা ৫ মিনিটে সমাবেশস্থলে পৌঁছান এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা। সেখানে ৩৫ মিনিটের মধ্যে সমাবেশ শেষে ফেরার পথে আবার হামলা হয়। এই হামলার ব্যাপ্তি ছিল অনেক বেশি। বাধা দিতে গেলে হামলাকারীদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংঘর্ষ বাধে। পরে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা জেলা প্রশাসকের বাসভবন, জেলা কারাগার চত্বরসহ পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন স্থানে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন।
এলাকায় বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এনসিপির গাড়িবহর গোপালগঞ্জ ছাড়ার পথেও প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা হয়। ঘোনাপাড়া মোড় পার হওয়ার সময়ও গাড়িবহরের পেছন দিকে হামলা চালানো হয়। ইটপাটকেলের পাশাপাশি লাঠি ছুড়ে মারা হয়। বিকেল থেকে শহরের অলিগলির মোড় ও গোপালগঞ্জ-পাটগাতী সড়কের বিভিন্ন স্থানে বাঁশ ও গাছ ফেলে এবং ইট রেখে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, বুধবার সকাল থেকে দফায় দফায় হামলাসহ যা যা হয়েছে, সেগুলো বিবেচনায় নিয়ে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেত। বিকেলে ও সন্ধ্যায় যখন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েনের ব্যবস্থা হলো, ততক্ষণে এই হামলা রক্তক্ষয়ী সংঘাতে রূপ নিয়েছে। এটি পুরোপুরি ‘অপারেশনাল ফেইলিওর’।
সংঘাত এড়াতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিরাপত্তা প্রস্তুতি ও গোয়েন্দা তথ্যের ঘাটতির বিষয়টি উঠে এসেছে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের বক্তব্যেও। এই ঘটনা সম্পর্কে পর্যাপ্ত গোয়েন্দা তথ্য ছিল কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে গতকাল স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, গোয়েন্দা তথ্য ছিল। তবে এত পরিমাণ যে হবে, ওই তথ্য হয়তো ছিল না।
যদিও গতকাল রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া বলেছেন, তিনি যতটুকু দেখেছেন, গোপালগঞ্জে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ভালো ভূমিকা পালন করেছে। তারা সফলভাবে সেখান থেকে প্রত্যেককে নিরাপদে ফিরিয়ে আনতে পেরেছে।
গোপালগঞ্জ ঘুরে যা জানা গেল
এনসিপির জুলাই পদযাত্রা ঘিরে হামলা থেকে সংঘর্ষের পরদিন এই ঘটনার নেপথ্যে কারণ সম্পর্কে জানতে স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলেছে প্রথম আলো। স্থানীয় লোকজন জানান, সকালে পুলিশ ও ইউএনওর ওপর হামলার পর সভাস্থলে কিছুটা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এনসিপি নেতাদের সভাস্থলে আসা নিয়ে কিছুটা শঙ্কা দেখা দেয়। তখন এনসিপির পক্ষ থেকেও প্রশাসনকে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে বলা হয়। তখনো বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।
এনসিপির গোপালগঞ্জ জেলার প্রধান সমন্বয়কারী মো. আরিফুল দাড়িয়া গতকাল বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, ‘গোপালগঞ্জে এনসিপির কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে হামলা বা আক্রমণ যে হতে পারে, তার আভাস আমরা পেয়েছিলাম। স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের লোকেরা কয়েক দিন ধরেই জড়ো হচ্ছিলেন। এই তথ্য আমরা স্থানীয় পুলিশ-প্রশাসন ও গোয়েন্দা সংস্থাকে জানালে তাঁরা বলেছিলেন, তেমন কিছু হবে না। কিন্তু সমাবেশের আগে যখন মঞ্চে হামলা হলো, তখন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিতি থাকলেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি।’
এলাকায় বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এনসিপির গাড়িবহর গোপালগঞ্জ ছাড়ার পথেও প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা হয়। ঘোনাপাড়া মোড় পার হওয়ার সময়ও গাড়িবহরের পেছন দিকে হামলা চালানো হয়। ইটপাটকেলের পাশাপাশি লাঠি ছুড়ে মারা হয়। বিকেল থেকে শহরের অলিগলির মোড় ও গোপালগঞ্জ-পাটগাতী সড়কের বিভিন্ন স্থানে বাঁশ ও গাছ ফেলে এবং ইট রেখে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হয়।
গতকাল দুপুরে গোপালগঞ্জ লঞ্চঘাট ব্রিজের পাশে কথা হয় হামলার ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী এক তরুণের সঙ্গে। পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কেউ কটূক্তি করলে এই অঞ্চলের মানুষ সহ্য করতে পারে না। তারা (এনসিপি) এখানে সভা না করলেই পারত। তাহলে কোনো গ্যাঞ্জাম হতো না, এই মানুষগুলো মরত না।’
স্থানীয় আরও একাধিক বাসিন্দার মতে, হামলাকারীদের মূল পরিকল্পনা ছিল এনসিপিকে সমাবেশ করতে না দেওয়া। কিন্তু বহু মানুষ জড়ো হয়ে যায়। পরে যেভাবে হামলা ও মারধর শুরু করা হয়, তাতে তারা (এনসিপি) যে গোপালগঞ্জ থেকে অক্ষত বের হতে পেরেছে, এটাই বড় ব্যাপার। হামলাকারীরা পুলিশকেও চারপাশ দিয়ে ঘিরে ফেলেছিল।
গোপালগঞ্জের ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকার বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মোহাম্মদ নুরুল হুদা প্রথম আলোকে বলেন, গোপালগঞ্জের ঘটনায় তো গোয়েন্দা তথ্যের ঘাটতি থাকার কথা নয়। কারণ, সেখানে ওপেন ইন্টেলিজেন্স (উন্মুক্ত গোয়েন্দা তথ্য) ছিল। এরপরও এমন ঘটনা প্রমাণ করে, সেখানে পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে পদক্ষেপ গ্রহণে দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের গাফিলতি ছিল।