Image description

ইউরোপের অভিবাসন নীতি কঠোর করার পক্ষে অবস্থান নিয়েছে ইউরোপীয়ান কাউন্সিল। এ লক্ষ্যে ৮ ডিসেম্বর দুটি প্রস্তাব পাস করেন আইনপ্রণেতারা। যেখানে ডানপন্থী ও কট্টর ডানপন্থী জোটের আইনপ্রণেতারা ভোট দিয়েছেন। পাস হওয়া প্রস্তাবের লক্ষ্য হলো- ‘নিরাপদ দেশ’ এবং ‘নিরাপদ তৃতীয় দেশ’ সংক্রান্ত ধারণাগুলোর বাস্তব প্রয়োগ জোরদার করা। নতুন এই আইনগুলোর মাধ্যমে ইইউ’তে যাদের আশ্রয় পাওয়ার যোগ্যতা নেই, তাদের আবেদন দ্রুত ও কার্যকরভাবে বাতিল করার সম্ভবনা তৈরি হয়েছে। ইউরোপীয়ান কাউন্সিলের ওয়েবসাইটে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ইউরোপের অভিবাসন নীতি কঠোর করার সিদ্ধান্তে বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য সেখানে আশ্রয় পাওয়ার পথ আরও কঠিন হলো। কেননা ইউরোপীয়ান কাউন্সিল কর্তৃক নিরাপদ দেশের তালিকায় বাংলাদেশের নাম রয়েছে। এ তালিকায় রয়েছে আরও ছয়টি দেশ। সেগুলো হলো- কোসোভো, কলম্বিয়া, মিশর, ভারত, মরক্কো ও তিউনিশিয়া। তালিকার অর্থ হচ্ছে ইইউ এসব দেশকে নিরাপদ হিসেবে বিবেচনা করবে। এ কারণে কেউ আশ্রয় লাভের আবেদন করলে তা বিবেচিত হওয়ার প্রক্রিয়া বেশ কঠিন হবে। 

ডেনমার্কের অভিবাসনমন্ত্রী রাসমুস স্টোকলুন্ড বলেন, ইউরোপ বর্তমানে বিপুলসংখ্যক অনিয়মিত অভিবাসীর চাপে রয়েছে। ভূমধ্যসাগরে বহু মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে। আর মানবপাচারকারীরা বিপুল অর্থ উপার্জন করছে। তার মতে, বর্তমান ব্যবস্থায় ঝুঁকিপূর্ণ যাত্রায় উৎসাহ বাড়ছে। নতুন সংশোধিত আইনে ‘নিরাপদ তৃতীয় দেশ’ ধারণার আওতা বাড়ানো হয়েছে। এর ফলে কোন পরিস্থিতিতে আশ্রয় আবেদন অগ্রহণযোগ্য বলে বাতিল করা যাবে, তা আরও স্পষ্ট করা হয়েছে। 

 

কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, তিন ক্যাটাগরিতে এই ধারণা প্রয়োগ করা যাবে। এক- আশ্রয়প্রার্থীর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট তৃতীয় দেশের কোনো সংযোগ থাকলে। দুই- আবেদনকারী ইইউ’তে পৌঁছানোর আগে ওই তৃতীয় দেশ দিয়ে অতিক্রম করলে। তিন- কোনো নিরাপদ তৃতীয় দেশের সঙ্গে এমন চুক্তি বা সমঝোতা থাকলে, যেখানে আবেদনকারীর আশ্রয় আবেদন সেই দেশেই পরীক্ষা করা হবে।

তবে একা আসা অপ্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে এই চুক্তিভিত্তিক ব্যবস্থা প্রযোজ্য হবে না। এছাড়া, ‘নিরাপদ তৃতীয় দেশ’-এর ভিত্তিতে আবেদন বাতিল হলে, আপিল চলাকালীন স্বয়ংক্রিয়ভাবে ইইউ’তে থাকার অধিকার আর থাকবে না। যদিও আদালতের কাছে থাকার অনুমতি চাওয়ার সুযোগ বজায় থাকবে।
সিদ্ধান্ত দুটির ফলে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সঙ্গে চূড়ান্ত আইনি কাঠামো নিয়ে আলোচনা শুরু করতে পারবে কাউন্সিল। একই সঙ্গে মাইগ্রেশন ও অ্যাসাইলাম প্যাক্টের কিছু ধারা ২০২৬ সালের জুনের আগেই কার্যকর করার পথও খুলে গেল। ইইউ কর্তৃপক্ষের মতে, এই সংস্কারের মাধ্যমে অভিবাসন নীতিতে গতি ও কার্যকারিতা বাড়বে। পাশাপাশি বিপজ্জনক অভিবাসন যাত্রা নিরুৎসাহিত করা সম্ভব হবে।