Image description

রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধের প্রায় চার বছর পর এসে নাটকীয়ভাবে বেড়েছে শান্তিচুক্তির চাপ। যুক্তরাষ্ট্র স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, রাশিয়ার সঙ্গে তৈরি ২৮ দফার শান্তি পরিকল্পনা এখনই না মানলে ইউক্রেনকে সামনে আরও কঠিন শর্ত মেনে নিতে হবে।

ওয়াশিংটন ও মস্কো মিলে করা খসড়া পরিকল্পনায় স্পষ্ট বলা হয়েছে, যুদ্ধ থামাতে হলে ইউক্রেনকে পূর্বাঞ্চলের কিছু অঞ্চল রাশিয়ার হাতে তুলে দিতে হবে। সামরিক বাহিনী ছোট করতে হবে এবং মার্কিন সামরিক সহায়তাও কমবে। অর্থাৎ যুদ্ধের ভার আরও বেশি পড়বে কিয়েভের ওপর।

এই পরিকল্পনাকে ‘মানতেই হবে’ বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেন, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি আলোচনার জন্য প্রস্তুত নন। পরিকল্পনা না মানলে তাকে ‘একা লড়াই করতে হবে’ বলেও সতর্ক করেন ট্রাম্প।

জেলেনস্কি জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে এই সংকট স্বীকার করে বলেন, ইউক্রেন এখন এক কঠিন বাস্তবতার মুখে—মিত্র যুক্তরাষ্ট্রকে হারানো অথবা রাশিয়ার দাবির সামনে নতি স্বীকার করা। 

যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন হারালে বিপদ আরও বাড়তে পারে। অস্ত্র, গোয়েন্দা তথ্য ও অর্থনৈতিক সহায়তার বড় অংশ আসে ওয়াশিংটন থেকে। এগুলো বন্ধ হলে সেনা সংকট, দুর্বল অর্থনীতি এবং ক্লান্ত সামরিক বাহিনী নিয়ে আরও বড় বিপদের মুখে পড়তে পারে কিয়েভ।

আজ রবিবার জেনেভায় যুক্তরাষ্ট্র–রাশিয়ার পরিকল্পনা নিয়ে বসছে ইউক্রেন, ইউরোপীয় মিত্র এবং আমেরিকার প্রতিনিধিরা। বৈঠকে যোগ দিয়েছেন ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ও ইউরোপের নিরাপত্তা উপদেষ্টারা।

যুক্তরাষ্ট্রের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, শান্তিচুক্তির চূড়ান্ত খসড়া তৈরি নিয়ে আজ গুরুত্বপূর্ণ আলাপ হবে। তবে দুই প্রেসিডেন্ট—ট্রাম্প ও জেলেনস্কি—সরাসরি আলোচনায় না বসা পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হচ্ছে না।

ইতিমধ্যে জার্মানি, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য ও ইতালিসহ ইউরোপের প্রতিনিধিরাও নিজেদের একটি আলাদা খসড়া পরিকল্পনা যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউক্রেনের কাছে পাঠিয়েছে। পশ্চিমা দেশগুলোর ধারণা—যুক্তরাষ্ট্র–রাশিয়ার পরিকল্পনাই আলোচনার ভিত্তি, কিন্তু এতে আরও পরিবর্তন প্রয়োজন। ইউক্রেনের জন্য তাই আজকের বৈঠক—এক ধরনের শেষ সুযোগ।