Image description

জেন-জি বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে দক্ষিণ আমেরিকার দেশ পেরু। বিক্ষোভের জেরে রাজধানী লিমা ও আশপাশের এলাকায় ৩০ দিনের জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন দেশটির অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট হোসে জেরি। টেলিভিশনে দেওয়া এক জরুরি ভাষণে তিনি বলেন, দেশের পরিস্থিতি এখন শুধু কথা দিয়ে সামাল দেওয়া সম্ভব নয়, বরং কঠোর বাস্তব পদক্ষেপ নিতে হবে।

জরুরি অবস্থা ঘোষণায় রাস্তায় সেনাবাহিনী নামানোর পাশাপাশি নাগরিকদের সমাবেশ, বিক্ষোভ ও মতপ্রকাশের সাংবিধানিক অধিকার সীমিত করার কথা বলা হয়েছে। প্রেসিডেন্ট জেরি ঘোষণা করেন, এখন থেকে রাষ্ট্র ‘প্রতিরক্ষামূলক অবস্থান থেকে আক্রমণাত্মক নীতি’ গ্রহণ করবে, অর্থাৎ অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান শুরু হবে।

পেরুতে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে জেন-জি সদস্যদের অংশগ্রহণে দুর্নীতি ও সংগঠিত অপরাধের বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ চলছে। বিশেষ করে তরুণদের নেতৃত্বে হওয়া এই আন্দোলন দেশটির রাজনৈতিক অস্থিরতাকে নতুন মাত্রা দিয়েছে। গত বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত এক বিক্ষোভে সহিংসতা দেখা দিলে একজন নিহত ও প্রায় ১০০ জন আহত হওয়ার ঘটনা উদ্বেগ বাড়ায়।

 

পরিসংখ্যান বলছে, চলতি বছর পেরুতে চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। ইতোমধ্যে ১৮ হাজারের বেশি চাঁদাবাজির ঘটনা রেকর্ড করেছে কর্তৃপক্ষ, যা গত বছরের তুলনায় প্রায় ৩০ শতাংশ বেশি। একই সময়ে হত্যাকাণ্ডের সংখ্যাও বেড়েছে উল্লেখযোগ্যভাবে।

 
 

সরকারের সাম্প্রতিক পদক্ষেপের উদ্দেশ্য অপরাধ দমন হলেও সমালোচকরা বলছেন, জরুরি অবস্থা কার্যকর হলে জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার হুমকির মুখে পড়বে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ঘোষণার ফলে বিক্ষোভ কার্যত নিষিদ্ধ হয়ে যাবে, যা তরুণ প্রজন্মের ক্রমবর্ধমান ক্ষোভকে আরও তীব্র করতে পারে।

 

গত ১০ অক্টোবর দুর্নীতি ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার অভিযোগে সাবেক প্রেসিডেন্ট দিনা বোলুয়ার্তেকে কংগ্রেস অভিশংসনের মাধ্যমে অপসারণ করে। এর পরই সংসদের স্পিকার হোসে জেরি অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেন। তিনি জানিয়েছিলেন, জুলাই পর্যন্ত অন্তর্বর্তীভাবে দেশ পরিচালনা করবেন এবং নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি নেবেন।

এর মধ্যেই জেন-জি তরুণদের নেতৃত্বে নতুন এই বিক্ষোভের ঢেউ তৈরি হয়েছে। তারা শুধু দুর্নীতির বিরুদ্ধে নয়, বরং রাজনৈতিক স্বচ্ছতা ও সামাজিক ন্যায়বিচারের দাবি তুলছে। বিশেষ করে সংগঠিত অপরাধ চক্র ও মাদক ব্যবসার সঙ্গে রাজনৈতিক ব্যক্তিদের যোগসাজশের অভিযোগ জনগণের ক্ষোভকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে।

সূত্র : ফ্রান্স টোয়েন্টিফোর