Image description
 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদে (ডাকসু) বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঐতিহাসিক বিজয়ে অভিনন্দন জানিয়েছেন জামায়াত-ই-ইসলাম পাকিস্তানের আমির হাফিজ নাঈমুর রহমান। বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) সংগঠনের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে তার বক্তব্য প্রকাশ করা হয়।

 

হাফিজ নাঈমুর রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশে নতুন ইতিহাস রচিত হয়েছে। আলহামদুলিল্লাহ! বাংলাদেশের সর্বোচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির বড় বিজয় অর্জন করেছে। পুরো প্যানেলই বিশাল ব্যবধানে জয়ী হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো এমন একটি ঘটনা। উল্লেখযোগ্য যে, প্রতিযোগী অন্যান্য প্যানেলগুলোকে সমর্থন করেছিলো ভারতপন্থি শক্তিগুলো। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচনে এই সাফল্যের জন্য ইসলামী ছাত্রশিবিরকে আন্তরিক অভিনন্দন জানাই। ইনশাআল্লাহ, এই বিজয় কেবল শিক্ষার্থী ও যুবসমাজের অধিকার রক্ষার সংগ্রামে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে না, বরং বাংলাদেশের জনগণকে ভারতের ষড়যন্ত্র থেকে মুক্ত করার ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা রাখবে এবং দেশকে উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির নতুন দিগন্তে এগিয়ে নিয়ে যাবে।’

তবে তিনি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারকেও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য কৃতিত্ব দিয়েছেন। তার ভাষ্য, ‘বিপর্যয়ের মধ্যেও দেশের নার্সারি অব ডেমোক্রেসি হিসেবে খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচন তারা স্বচ্ছ ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সফলভাবে আয়োজন করতে সক্ষম হয়েছে।’

কিন্তু কিছুক্ষণ পরেই পোস্টটি আর ফেসবুক পেজে দেখা যায়নি। পরে হাফিজ নাঈমুর রহমানের এক্স একাউন্ট থেকেও এই পোস্ট মুছে ফেলা হয়। তবে এখনো দলটির অফিসিয়াল এক্স হ্যান্ডলে পোস্টটি দেখা যাচ্ছে।

দীর্ঘ ৬ বছর পর অনুষ্ঠিত হয় মিনি পার্লামেন্ট খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন। মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের আটটি কেন্দ্রে ৮১০টি বুথে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।

নির্বাচনে ভিপি, জিএস, এজিএসসহ ২৮টি পদের মধ্যে ২৩টিতেই বিজয়ী হয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট প্যানেলের প্রার্থীরা। ভিপি পদে ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেলের মো. আবু সাদিক (সাদিক কায়েম) পেয়েছেন ১৪ হাজার ৪২ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদলের আবিদুল ইসলাম খান পেয়েছেন ৫ হাজার ৭০৮ ভোট।

জিএস পদে ১০ হাজার ৭৯৪ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন এসএম ফরহাদ। তিনিও ছাত্রশিবির সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট প্যানেল থেকে লড়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদল নেতা তানভীর বারী হামীম পেয়েছেন ৫ হাজার ২৮৩ ভোট। এছাড়া এই পদে প্রতিরোধ পর্ষদের মেঘমল্লার বসু ৪ হাজার ৯৪৯ ভোট পেয়ে তৃতীয় হয়েছেন।

এজিএস পদেও বিজয়ী হয়েছেন ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেলের প্রার্থী মহিউদ্দীন খান। তিনি ১১ হাজার ৭৭২ ভোট পেয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদলের এজিএস প্রার্থী তানভীর আল হাদী মায়েদ পেয়েছেন ৫ হাজার ৬৪ ভোট।

এছাড়া আরও ২০ পদে বিজয় লাভ করেছেন ছাত্রশিবির সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোটের প্রার্থীরা। 

ডাকসুতে এবার মোট ভোটার ছিলেন ৩৯ হাজার ৮৭৪। এর মধ্যে পাঁচটি ছাত্রী হলে ১৮ হাজার ৯৫৯ জন আর ১৩টি ছাত্র হলে ২০ হাজার ৯১৫ জন ভোটার ছিলেন।