
পায়নি নির্বাচন কমিশন। এ ছাড়াও কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছাড়াই নির্বাচিত হচ্ছেন প্রায় শতাধিক। এসব পদের অধিকাংশই ছাত্রী হলে। সাইবার বুলিংয়ের শঙ্কায় নারীদের অংশগ্রহণ কমেছে বলে জানিয়েছেন প্রার্থীরা। জাকসু নির্বাচনে ভোট দেবেন ১১ হাজার ৮১৯ জন শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে ৪৮ শতাংশ নারী ভোটার। ২১টি হলের মোট ৩১৫টি পদের মধ্যে ১৬৫ পদেই হবে না কোনো নির্বাচন।
নির্বাচনে ২১টি কেন্দ্রে সর্বমোট ২২৪টি বুথ রয়েছে। ২১ জন রিটার্নিং অফিসারের সঙ্গে ৬৭ জন করে পোলিং ও সহ-পোলিং অফিসার দায়িত্বে রয়েছেন। ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা ব্যবস্থার জোরদারের জন্য নেয়া হয়েছে নানা পদক্ষেপ। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সকল বহিরাগত, অতিথি ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের দ্রুত ক্যাম্পাস ত্যাগ করার নির্দেশনা দিয়েছে জাবি প্রশাসন। এ ছাড়াও অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে সবাই আইডি কার্ড সঙ্গে রাখার কথা জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, সাদা পোশাকে ১২শ’ পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ভোটকেন্দ্রগুলোতে আনসার সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবেন। এ ছাড়াও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে সেনাবাহিনীর উপস্থিতি চেয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে পুনরায় আবেদন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচনকে ঘিরে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে। কেন্দ্রের নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণে প্রায় ৮০টি সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের তত্ত্বাবধানে এসব সিসিটিভি ক্যামেরা দিয়ে কেন্দ্রের পরিবেশ নজরদারি করা হবে। জ্যেষ্ঠ শিক্ষকদের সমন্বয়ে একটি টিম, প্রক্টরিয়াল বডি ও ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা কর্মকর্তারা পুরো ক্যাম্পাসে দায়িত্ব পালন করবেন।
ঐক্য প্যানেলের ভিপি প্রার্থী অমর্ত্য রায় জনের প্রার্থিতা ফিরিয়ে দেয়ার দাবিতে নির্বাচন কমিশন ও ভিসিকে অবরুদ্ধ করে তার প্যানেলের অনুসারীরা। ছাত্রত্ব না থাকার অভিযোগে তার প্রার্থিতা বাতিল করে প্রশাসন। তার প্রার্থিতা ফেরনোর দাবিতে রাতভর অবরুদ্ধ ছিলেন ভিসি ও নির্বাচন কমিশনের কয়েকজন সদস্য। মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে সিনেট হলে ছাত্র ইউনিয়ন ও সাংস্কৃতিক জোট সমর্থিত সম্প্রীতির ঐক্য প্যানেলের প্রার্থীরা অবরুদ্ধ করে রাখেন। ভোর সাড়ে ৩টা পর্যন্ত গণমাধ্যমকর্মীসহ কাউকেই প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি। পরে কিছুক্ষণের জন্য প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে কথা বলতে দেয়া হয়। প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মনিরুজ্জামান বলেন, আমরা নিজের ইচ্ছায় এখানে নেই। আমাদের অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। এটা ঠিক যে নির্বাচনী কাজ করতে আমাদের কষ্ট হবে। আমরা বলেছিলাম আইনি কোনো বাধ্যবাধকতা না থাকলে অমর্ত্য রায়ের বিষয়টি সমাধান করা হবে। তিনি আরও বলেন, গভীর রাত হওয়ায় আমরা দু’জন আইনজীবীর মধ্যে একজনকে পেয়েছি। তবে, এখানে উনারা কোনোভাবেই মানবেন না। পদ ফিরিয়ে না দিলে তারা নিজেও যাবেন না, আমাদেরকেও যেতে দেবেন না বলে জানান।
এর আগে, মঙ্গলবার দুপুরে হাইকোর্টের এক বেঞ্চ জাকসু নির্বাচন কমিশনের দেয়া অমর্ত্য রায়ের প্রার্থিতা বাতিলের আদেশ অবৈধ ঘোষণা করে। পরে এর বিরুদ্ধে চেম্বার জজের আদালতে আপিল করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। চেম্বার জজ হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করে। এতে তার নির্বাচনে লড়ার পথ বন্ধ হয়। অবরুদ্ধ থাকা অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও নির্বাচন কমিশনের সদস্য সচিব অধ্যাপক রাশিদুল আলম বলেন, আমি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ও বর্তমানে একজন শিক্ষক। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আশা পূরণের জন্য জাকসু হতেই হবে। জাকসু বানচালের জন্য কেউ অপচেষ্টা করলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশন তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে।
ভোর ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা সেখানে যান। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বামপন্থি ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীদের বাকবিতণ্ডা হয়। এভাবে চলার পর ভোর ৪টার দিকে অবরুদ্ধ শিক্ষকরা মুক্ত হন।