
মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপের হুমকি দিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাকে নিয়ে সংবাদপত্রটিতে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) এ হুমকি দেন তিনি।
সংবাদপত্রটি সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে দাবি করে, ট্রাম্প নারী নিপীড়নে অভিযুক্ত কুখ্যাত ধনকুবের জেফরি এপস্টেইনকে একটি আপত্তিকর চিঠি পাঠিয়েছিলেন, যেখানে একজন নগ্ন নারীর ছবি আঁকা ছিল। এই প্রতিবেদন প্রকাশের পরই ওয়াশিংটনজুড়ে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল জানায়, ২০০৩ সালে জেফরি এপস্টেইনের ৫০তম জন্মদিনে যেসব শুভেচ্ছাবার্তা এসেছিল, ট্রাম্পের স্বাক্ষর করা এই চিঠিটি তার মধ্যেই একটি ছিল। যদিও তারা চিঠির কোনো ছবি প্রকাশ করেনি, তবে এর বিষয়বস্তু নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে।
তবে ট্রাম্প এই দাবি সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন। তিনি তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে এক পোস্টে লিখেছেন, চিঠিটি ‘সম্পূর্ণ ভুয়া’ এবং ‘মানহানিকর’। তিনি উল্লেখ করেন, হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট এবং তিনি নিজেও ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের সম্পাদককে সরাসরি জানিয়েছেন যে চিঠিটি ভিত্তিহীন।
ট্রাম্প আরও বলেন, তিনি খুব শিগগির ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল’র মালিকানা প্রতিষ্ঠান নিউজকর্প এবং ধনকুবের রুপার্ট মারডকের বিরুদ্ধে মামলা করবেন।
ট্রাম্প সংবাদমাধ্যমটিকে সতর্ক করে বলেছেন, তাদের এখন সত্য বলা শিখতে হবে এবং এমন উৎসের ওপর ভরসা করা উচিত নয়, যেগুলোর আদৌ অস্তিত্ব আছে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদনে বর্ণিত চিঠিটিতে একজন নগ্ন নারীর অবয়ব মার্কার দিয়ে আঁকা এবং টাইপরাইটারে কিছু বাক্য লেখা ছিল। চিঠির শেষে লেখা ছিল, ‘শুভ জন্মদিন—প্রতিটি দিনই যেন আরেকটি সুন্দর গোপন রহস্য হয়ে ওঠে’। ট্রাম্প দৃঢ়ভাবে দাবি করেছেন, তিনি এই চিঠি লেখেননি বা ছবিটি আঁকেননি।
জেফরি এপস্টেইন ২০১৯ সালে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে বিচার চলাকালে নিউইয়র্কের একটি জেলে আত্মহত্যা করেন। তার বিরুদ্ধে অপ্রাপ্তবয়স্ক নারীদের পাচার এবং প্রভাবশালী ব্যক্তিদের কাছে সরবরাহ করার অভিযোগ ছিল। ট্রাম্পের প্রথম প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন সময়েই এই ঘটনা ঘটে।
ট্রাম্প অবশ্য এপস্টেইনের সঙ্গে তার পুরনো সম্পর্কের জন্য আগেও সমালোচিত হয়েছেন। অনেকের অভিযোগ ছিল, ট্রাম্প প্রশাসন এপস্টেইনের অপরাধের তথ্য গোপন রাখছে। তবে চলতি মাসের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ ও কেন্দ্রীয় তদন্ত ব্যুরো (এফবিআই) একটি প্রতিবেদনে জানিয়েছে, এপস্টেইন কোনো গ্রাহক তালিকা রাখতেন বা ক্ষমতাবান ব্যক্তিদের ব্ল্যাকমেল করতেন এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তারা আরও নিশ্চিত করেছে যে, এপস্টেইন আত্মহত্যাই করেছেন এবং এ বিষয়ে আর কোনো তথ্য প্রকাশ করা হবে না।
এর মধ্যেই বৃহস্পতিবার কয়েকটি মার্কিন সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, এপস্টেইনের মামলা দেখভালকারী একজন কেন্দ্রীয় কৌঁসুলিকে হঠাৎ বরখাস্ত করা হয়েছে। তিনি সাবেক এফবিআই পরিচালক জেমস কোমির মেয়ে, যিনি ট্রাম্পের একজন কট্টর সমালোচক হিসেবে পরিচিত। এই ঘটনা নতুন করে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।