
ইরানের পরমাণু বিজ্ঞানীরা বিজ্ঞানের জগতে এক যুগান্তকারী সাফল্য অর্জন করেছেন। সম্প্রতি তারা সারফেস ডাইলেকট্রিক ব্যারিয়ার ডিসচার্জ (এসডিবিডি) পদ্ধতি ব্যবহার করে একটি উন্নত প্লাজমা জেনারেশন ডিভাইস তৈরি করেছেন, যা চিকিৎসা, শিল্প এবং পরিবেশ ব্যবস্থাপনায় ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হতে পারে। খবর পার্স টিভির।
এসডিবিডি এমন একটি পদ্ধতি যা বায়ুমণ্ডলীয় চাপেই প্লাজমা উৎপন্ন করতে সক্ষম। এটি জীবাণুমুক্তকরণ, পৃষ্ঠতল পরিবর্তন এবং চিকিৎসা ক্ষেত্রসহ নানা গুরুত্বপূর্ণ শিল্পে ব্যবহারযোগ্য। এ ধরনের ঠান্ডা প্লাজমা কম খরচে ও সহজ নিয়ন্ত্রণে কাজ করতে পারে, যা একে অন্যান্য প্লাজমা উৎপাদন পদ্ধতির তুলনায় অনেক বেশি কার্যকর করে তোলে।
এই প্রযুক্তি ব্যবহারে প্রক্রিয়াকরণ সময় ও শক্তি খরচ অনেক কমে আসে, যা পরিবেশ ও খরচ দুই দিকেই ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
এই গবেষণার পেছনে ছিলেন ইরানের খ্যাতনামা পারমাণবিক বিজ্ঞানী আমির হোসেইন ফাগিহি। তিনি ইরানের উন্নত প্রযুক্তিগত নকশা ইনস্টিটিউটের প্রাক্তন প্রধান এবং দেশটির অন্যতম শীর্ষ পরমাণু গবেষক হিসেবে পরিচিত ছিলেন। দুঃখজনকভাবে, গেল মাসে ইসরায়েল-ইরান সংঘাতের সময় তেহরানে ইসরায়েলি হামলায় তিনি নিহত হন। তার নেতৃত্বে থাকা গবেষক দলের হাতেই এসডিবিডি ডিভাইসের উদ্ভাবন সম্পন্ন হয়।
খবরে বলা হয়, বহিরাগত চাপ, নিষেধাজ্ঞা ও হুমকির মধ্যেও ইরানি বিজ্ঞানীরা শান্তিপূর্ণ ও ব্যবহারিক পরমাণু প্রযুক্তি উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করে চলেছেন। প্লাজমা ও নিউক্লিয়ার ফিউশন গবেষণায় এই সাফল্য দেশীয় জ্ঞানের ভিত্তিতে টেকসই প্রযুক্তি তৈরির দিকেই অগ্রসর হচ্ছে।
ইরানি গণমাধ্যম বলছে, এই ডিভাইসটি কেবল একটি বৈজ্ঞানিক অর্জন নয়, বরং দেশীয় শিল্প, চিকিৎসা ও কৃষি খাতে প্রযুক্তির বাস্তবিক প্রয়োগের নতুন দিগন্তও উন্মোচন করেছে। একইসঙ্গে এটি ইরানের স্বনির্ভরতা ও বৈজ্ঞানিক সক্ষমতার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।