Image description
 

পাকিস্তানের মডেল ও অভিনেত্রী হুমাইরা আসগরকে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে তার নিজ ফ্ল্যাটে। গত মঙ্গলবার (৮ জুলাই) করাচির বাসা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তবে কীভাবে এবং কখন তার মৃত্যু হয়েছে, তা নিয়ে তৈরি হয়েছে রহস্য ও উদ্বেগ। পুলিশ ধারণা করছে, মৃত্যুর সময় পেরিয়ে গেছে অন্তত ১৫ থেকে ২০ দিন।

 

প্রতিবেশীদের ভাষ্যমতে, অনেক দিন ধরে হুমাইরাকে দেখা যায়নি। তার ফ্ল্যাট থেকে দুর্গন্ধ বের হতে শুরু করলে সন্দেহ জাগে। বাসাভাড়া বাবদ মালিক একাধিকবার ফোন দিলেও সাড়া না মেলায় বিষয়টি সামনে আসে। এরপরই পুলিশ এসে ফ্ল্যাটের ভেতরে ফ্লোরে পড়ে থাকা মরদেহ উদ্ধার করে।

এই মৃত্যুর ঘটনায় হুমাইরার একটি পুরনো ইনস্টাগ্রাম পোস্ট আবারো আলোচনায় এসেছে। গত বছর ৯ জুলাই, ঠিক তার মৃত্যুর ৩৬৪ দিন আগে, তিনি পোস্ট করেছিলেন একটি আবেগঘন ক্যাপশনসহ আটটি ছবি। ক্যাপশনে তিনি লিখেছিলেন, ‘তোমার মুখ সব সময় সূর্যের দিকে রাখো, তাহলেই ছায়াগুলো তোমার পেছনে পড়বে।’

এই পোস্টের সময় তার ক্যারিয়ার ছিল অনিশ্চয়তায়। নতুন কাজ পাচ্ছিলেন না, মডেলিং ছাড়া আর তেমন কোনো কাজ তার হাতে ছিল না। এমনকি জানা যায়, তিনি তখন অনেক পরিচিতজনের সঙ্গেও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছিলেন।

হুমাইরার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উপস্থিতি ছিল সীমিত। তবে প্রতি মাসে অন্তত একটি করে পোস্ট দিতেন ইনস্টাগ্রামে, যার বেশিরভাগই মডেলিং সংশ্লিষ্ট। একবার একটি পোস্টে তিনি লিখেছিলেন, ‘আমি নিখুঁত ভয়হীন থাকি প্রতিদিন। যেন দারুণ একটা মেয়ের ভাইব।’

হুমাইরা প্রায় এক যুগ ধরে পাকিস্তানের বিনোদন জগতে কাজ করছিলেন। শুরু করেছিলেন মডেলিং দিয়ে, এরপর জনপ্রিয়তা পান টেলিভিশন রিয়েলিটি শো ‘তামাশা ঘর’-এ অংশগ্রহণের মাধ্যমে। তিনি ২০১৫ সালের আলোচিত সিনেমা ‘জালিবি’-তেও অভিনয় করেছিলেন। তবে সেই আলো ছড়ানো ক্যারিয়ার পরবর্তী সময় আর এগিয়ে নিতে পারেননি।

পুলিশ জানিয়েছে, তারা ঘটনাটি তদন্ত করছে এবং এটি রহস্যজনক বলে মনে করছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত তারা কোনো কিছু নিশ্চিতভাবে বলতে পারছে না। স্বাভাবিক মৃত্যু নাকি এর পেছনে কোনো অপরাধ লুকিয়ে আছে, সে প্রশ্নের উত্তর এখনও মেলেনি।

এই ঘটনায় করাচির স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। একা থাকা, যোগাযোগ বিচ্ছিন্নতা, পেশাগত অনিশ্চয়তা এবং মানসিক চাপ—সব মিলিয়ে হুমাইরার মৃত্যু ঘিরে তৈরি হয়েছে নানা প্রশ্ন, যার উত্তর এখন ময়নাতদন্ত ও তদন্ত প্রতিবেদনের অপেক্ষায়।