
গাজায় পুষ্টি সহায়তা নিতে লাইনে দাঁড়ানো শিশু ও নারীদের ওপর ইসরায়েলি বিমান হামলায় অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার সকালে দেইর আল-বালাহর আল-আকসা শহীদ হাসপাতাল নিশ্চিত করেছে যে, নিহতদের মধ্যে আটজন শিশু ও দুজন নারী রয়েছেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
মার্কিন ত্রাণ সংস্থা প্রজেক্ট হোপ পরিচালিত অলতাইয়ারা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সামনে পুষ্টিসামগ্রী বিতরণের সময় এই হামলার ঘটনা ঘটে। হাসপাতালের ভিডিওতে দেখা যায়, নিহতদের দেহ মেঝেতে সারি করে শুইয়ে রাখা হয়েছে এবং চিকিৎসকরা রক্তাক্ত শিশুদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিতে ব্যস্ত।
প্রজেক্ট হোপের প্রেসিডেন্ট রাবিহ তোরবে এই হামলাকে আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের "চরম লঙ্ঘন" বলে আখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলেন, "আজ সকালে নিরীহ পরিবারগুলো লাইনে দাঁড়িয়ে চিকিৎসাকেন্দ্র খোলার অপেক্ষায় ছিল, আর তখনই তাদের ওপর নির্মমভাবে হামলা চালানো হলো। এটি মর্মান্তিক ও ভয়াবহ।"
প্রত্যক্ষদর্শী ইউসুফ আল-আইদি ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানান, "হঠাৎ ড্রোনের শব্দ শুনি, তারপরই বিস্ফোরণ। এরপর মাটিতে কম্পন অনুভব করি, চারপাশে শুধু রক্ত আর কানফাটানো চিৎকার।" সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এবং বিবিসি কর্তৃক যাচাইকৃত একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, রাস্তার পাশে রক্তাক্ত শিশু ও প্রাপ্তবয়স্করা নিথর পড়ে আছেন, কেউ কেউ মুমূর্ষু অবস্থায় ছটফট করছেন।
হাসপাতালের হিমঘরে স্বজনেরা নিহত শিশুদের সাদা কাফনে মুড়িয়ে কাঁদতে কাঁদতে জানাজার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এক নারী শোকাচ্ছন্ন কণ্ঠে জানান, তার অন্তঃসত্ত্বা ভাগনি মানাল এবং তার মেয়ে ফাতিমা নিহত হয়েছেন, আর মানালের ছেলে এখন আইসিইউতে রয়েছে। তিনি আরও বলেন, "তারা লাইনে দাঁড়িয়েছিল শিশুদের জন্য পুষ্টিসামগ্রী নেওয়ার জন্য। হঠাৎই হামলা হলো।" আরেক নারী ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, "কোন অপরাধে তাদের হত্যা করা হলো? সারা বিশ্বের চোখের সামনে আমরা মরছি। কেউ হামলায়, কেউ সহায়তা নিতে গিয়ে।"
অন্যদিকে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে দাবি করেছে যে, তারা হামাসের 'রুখবা ফোর্স'-এর এক সদস্যকে লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে, যিনি ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের হামলায় জড়িত ছিলেন। বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, "ওই এলাকায় বেসামরিক হতাহতের খবর সম্পর্কে আমরা অবগত এবং ঘটনার তদন্ত চলছে।"
সূত্র: বিবিসি