Image description

শরীয়তপুরের জাজিরায় মাহিমা আক্তার নামে এক এইচএসসি পরীক্ষার্থীকে কুপিয়ে জখম করার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা হাবিব জমাদ্দার ও তার অনুসারীদের বিরুদ্ধে।

রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) আহত শিক্ষার্থীর মামা মো. নাসির জমাদ্দার বাদী হয়ে হাবিব জমাদ্দারসহ পাঁচজনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা ৪/৫ জনকে আসামি মামলা দায়ের করেছেন।

এর আগে শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জাজিরা পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের আহাদ্দি বয়াতি কান্দি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহত শিক্ষার্থী পালেরচরের বাসিন্দা মাইনদ্দিন মোল্লার মেয়ে মাহিমা আক্তার। তিনি বিকেনগর বঙ্গবন্ধু কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী। জাজিরা পৌরসভার আহাদ্দি বয়াতি কান্দি মামার বাড়িতে থেকে পড়াশোনা করছেন তিনি।

জানা গেছে, হামলায় নেতৃত্ব দেওয়া হাবিব জমাদ্দার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ঢাকার যাত্রাবাড়ী থানার একজন এজাহারভুক্ত আসামি।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, কিছুদিন আগে হাবিব জমাদ্দার এলাকার নিরীহ মানুষদের হয়রানি করতে বিভিন্ন নিরপরাধ ব্যক্তিদের নামে আদালতে একটি চাঁদাবাজি মামলা করেন। সে মামলায় থানা পুলিশকে তদন্তের দায়িত্ব দেয় আদালত। আদালতের নির্দেশে পুলিশ এলাকায় তদন্তে গেলে মামলা সম্পর্কে এলাকার অধিকাংশ মানুষ পুলিশকে সঠিক তথ্য জানায়। সে সময় হামলায় আহত শিক্ষার্থীর কাছেও পুলিশ জানতে চাইলে কলেজশিক্ষার্থী মাহিমা সঠিক তথ্য তুলে ধরে। এরপর পুলিশের তদন্তে হাবিব জমাদ্দারের আদালতে করা মামলার অভিযোগের সত্যতা না পেয়ে পুলিশে প্রতিবেদন দাখিল করে। এতে হাবিব জমাদ্দারের দায়ের করা মামলা খারিজ হয়ে যায়। এতে তিনি যারা তদন্তের সময় পুলিশের কাছে সাক্ষী দেন সবার ওপর ক্ষুব্ধ হোন। শনিবার দুপুরের দিকে হাবিব জমাদ্দার দেশীয় অস্ত্রসহ তার ছেলে ও অনুসারীদের নিয়ে কলেজশিক্ষার্থীর মামার বাড়িতে হামলা চালায়। এ সময় নিরাপত্তার জন্য এলাকার সাবেক কাউন্সিলরের বাড়িতে গেলে সেখান থেকে তাকে ধরে এনে বেধড়ক মারধর করা হয় কলেজশিক্ষার্থী মাহিমাকে। এ সময় তাকে বাঁচাতে তার মামা এগিয়ে আসলে তাদের উপরও হামলা চালায়। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় আহত শিক্ষার্থী ও তার মামাকে জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।

কলেজশিক্ষার্থী মাহিমার বাবা মাইনদ্দিন মোল্লা কালবেলাকে বলেন, আমাদের বাড়ি থেকে কলেজে যাতায়াতে সমস্যা হয় তাই আমার মেয়ে তার মামার বাড়িতে থেকে পড়াশোনা করছে। এ বছর এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে। টেস্ট পরীক্ষা চলছে। এ সময়ে আমার মেয়েটাকে নৃশংসভাবে মারধর করা হলো। আমি এর সঠিক বিচার চাই।

স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য সেরু জমাদ্দার বলেন, হাবিব জমাদ্দার তার লোকজন নিয়ে মেয়েটাকে বেধড়ক মারধর করেছে। মেয়েটি প্রাণ বাঁচাতে আমার বাড়িতে আশ্রয় নিতে গেলে সেখানে গিয়েও মেয়েটিকে মারধর করে। এর সঠিক বিচার হওয়া উচিত।

আহত মাহিমার মামা ও মামলার বাদী নাসির জমাদ্দার বলেন, আমার ভাগ্নি পুলিশের কাছে সত্য কথা বলার কারণে ওরা তাকে মেরে ফেলতে চেয়েছিল। আল্লাহ্ বাঁচাইছে। আমি হাবিব জমাদ্দারসহ হামলাকারীদের কঠিন বিচার চাই।

ঘটনার বিষয়ে জানতে হাবিব জমাদ্দারের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আমি এ বিষয়ে কিছু জানি না। ওরা আমার বাবাকে অনেক মারধর করেছে। এখন আমার বাবাকে নিয়ে আমি হাসপাতালে আছি।

জাজিরা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুস সালাম বলেন, থানায় মামলা হয়েছে। তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।