মুক্তিযুদ্ধকে ভিত্তি ধরে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র তৈরিতে মত দিয়েছে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট ও লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি)।
শনিবার রাজধানীর গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত পৃথক বৈঠকে বিএনপির নেতাদের এই মত দেন ওই দুটি দলের নেতারা। তারা মনে করেন, এখন ঘোষণাপত্র নয়, জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানই মূল উদ্দেশ্য হওয়া উচিত। বিএনপির পক্ষে বৈঠকে অংশ নেন লিয়াজোঁ কমিটির সমন্বয়ক ও স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।
বৈঠক সূত্র জানায়, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধকে ভিত্তি ধরে ও বাহাত্তরের সংবিধানের বাতিল না করে জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র তৈরিতে মত দিয়েছে সমমনা জোট ও এলডিপি। এছাড়া স্বাধীনতার ঘোষণা, ৮ নভেম্বর সিপাহি-জনতার বিপ্লব, ’৯০-স্বৈরাচার এরশাদ পতনের আন্দোলন, ’৬৯ হলঅভ্যুত্থান, ’৬২ শিক্ষা আন্দোলনসহ স্বাধীনতার পর যত আন্দোলন হয়েছে ঘোষণাপত্রে তা অন্তর্ভুক্তির দাবি জানিয়েছেন নেতারা।
বৈঠকে অংশ নিয়ে নেতারা বলেন, এই দেশে তো বহু আন্দোলন হয়েছে, তখন তো কোনো ঘোষণাপত্র দিতে হয়নি। একটা আন্দোলনের ওপর নির্ভর করে কেন ঘোষণাপত্র দেওয়া লাগবে। তারপরও বিগত আন্দোলনের সংগ্রামে সব আত্মত্যাগের স্বীকৃতি দিয়ে ঘোষণাপত্র দেওয়ার ব্যাপারে তারা মতামত দেন।
জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের সমন্বয়ক ও এনপিপি চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ বলেন, আমরা সংবিধান বাতিল ও বাংলাদেশের নাম পরিবর্তন করা যাবে না বলে বিএনপিকে জানিয়েছি। ছাত্ররাসহ কেউ যদি মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত দেশের নাম পরিবর্তন করতে চায়, তাহলে আমরা তাদের সঙ্গে নেই।
তিনি বলেন, প্রয়োজনীয় সংস্কার করে নির্বাচন দিতে হবে। না হলে দেশের সংকট আরও বৃদ্ধি পাবে। জনগণের ভোটের সরকার যত দ্রুত আসবে ততই তাদের জন্য মঙ্গল।
আরেক প্রশ্নের উত্তরে ফরহাদ বলেন, আমরা বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে আছি। বিএনপি যদি নতুন কোনো কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামে তাহলে আমরা সেখানে থাকব। তবে আজকের বৈঠকে যুগপৎ কর্মসূচি নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি।
এলডিপি মহাসচিব ড. রেদোয়ান আহমেদ বলেন, শেখ হাসিনা সরকার পতনের একদফার আন্দোলন আমরা কয়েক বছর আগে থেকেই শুরু করেছি। ছাত্ররা প্রথম ৯ দফা দিয়েছিল। পরে তারা এক দফা ঘোষণা করেছে। ঘোষণাপত্রে বিগত সময়ের আন্দোলনে সংগ্রামে সবার অবদান স্বীকৃতি দেওয়ার ব্যাপার মতামত দিয়েছি।
সমমনা জোটের সমন্বয়ক ও এনপিপি চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ নেতৃত্ব প্রথম দফায় প্রায় ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক অংশ নেন জাগপার সভাপতি খন্দকার লুৎফর রহমান, বিকল্পধারা বাংলাদেশ মহাসচিব শাহ আহমেদ বাদল, গণদলের চেয়ারম্যান এ টি এম গোলাম মাওলা চৌধুরী, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির চেয়ারম্যান আবু তাহের, বাংলাদেশ ন্যাপের চেয়ারম্যান এম এন শাওন সাদেকী প্রমুখ। দ্বিতীয় দফায় এলডিপির মহাসচিব ড. রেদোয়ান আহমেদ নেতৃত্বে ৬ সদস্যর একটি প্রতিনিধি দল অংশ নেয়।