Image description

কৃষক আবজাল খানকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে আদালত ভবনে চেয়ারের সঙ্গে রশি দিয়ে বেঁধে বেধড়ক পেটানোর অভিযোগ উঠেছে রাজবাড়ী আমলি আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ সুমন হোসেনের বিরুদ্ধে। নির্যাতনের শিকার আবজাল খান (৩০) রাজবাড়ী সদর উপজেলার চন্দনী ইউনিয়নের বাড়াইজুড়ি গ্রামের মৃত আনছের খানের ছেলে। তাঁকে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

গতকাল শনিবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে রাজবাড়ীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালত-১-এর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ সুমন হোসেনের এজলাসে এ ঘটনা ঘটে।

নির্যাতিত কৃষক আবজাল খান বলেন, ম্যাজিস্ট্রেট সুমন হোসেনের শ্বশুরবাড়ি আমার এলাকায়। গত ৩০ জানুয়ারি পরিবার নিয়ে তিনি শ্বশুরবাড়ি এলাকায় হাঁটাহাঁটি করার সময় একটি বেওয়ারিশ কুকুর তাঁকে ধাওয়া করে। কুকুরটি আমার বাড়ি এলাকায় ঘোরাঘুরি করে। ম্যাজিস্ট্রেট সুমন রাজবাড়ী সদর থানার এসআই আসাদকে কুকুরের মালিককে ধরে আনতে নির্দেশ দেন।

এরপরই থানার এসআই আসাদ আমাকে দেখা করতে বলেন। আমি ভয়ে দেখা না করে পালিয়ে বেড়াচ্ছিলাম। পরে স্থানীয় মেম্বারকে দিয়ে এসআই আসাদের সঙ্গে কথা বলি। শনিবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে মেজো ভাই সাহেব আলী খানকে সঙ্গে নিয়ে থানায় যাই।
 
পরে আমাদের রাজবাড়ী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালত-১-এর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ সুমন হোসেনের এজলাসে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে গিয়ে কুকুরটি আমার নয় বলে জানানো ছাড়াও ক্ষমা প্রার্থনা করি। তার পরও কোনো কথা না শুনে আমাকে চেয়ারের সঙ্গে পিঠমোড়া করে বেঁধে কাঠের রুলার দিয়ে পশ্চােদশ ও পিঠে অন্তত ৩০টি আঘাত করে। এতে আমার পশ্চােদশ ও পিঠে রক্ত জমাট বেঁধে নিল হয়ে যায়। আমাকে পেটানোর সময় তিনি হুমকি দিয়ে বলতে থাকেন, ওই কুকুরটি যদি আর এলাকায় দেখা যায় এবং এ বিষয়ে আমি যদি কাউকে কিছু বলি তবে মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলের ভাত খাওয়াবেন।
 
পরে আমি অসুস্থ হয়ে পড়লে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নেই। পরিবারের লোকজনের সঙ্গে আলোচনা করে রাত ৮টার দিকে রাজবাড়ী সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করি।

রাজবাড়ী সদর থানার ওসি মোহাম্মদ মাহমুদুর রহমান গতকাল রাত সাড়ে ৮টার দিকে মুঠোফোনে অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ বিষয়ে জানতে গতকাল রাত ৮টা ৪৫ মিনিটের দিকে রাজবাড়ী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালত-১-এর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ সুমন হোসেনের মুঠোফোনে ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি।