২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত টানা প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন শেখ হাসিনা। তার এ শাসনামলে মোট আটজন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তাদের প্রত্যেকেই বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের জন্য বিতর্কিত হয়েছেন। রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালনের পরিবর্তে গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত ইচ্ছা-অনিচ্ছাকেই তারা প্রাধান্য দিয়েছেন বেশি। এর প্রতিদান হিসেবে বিভিন্নভাবে পুরস্কৃতও হয়েছেন সরকারের সাবেক এ কর্মকর্তারা। আবার কারো কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ, ওয়ান-ইলেভেনের আগে থেকেই আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আনার জন্য সক্রিয় নানা ভূমিকা রেখেছিলেন তারা।আওয়ামী লীগের শাসনামলে যে আট আমলা প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন; তারা হলেন মো. আব্দুল করিম, শেখ মো. ওয়াহিদ-উজ-জামান, আবদুস সোবহান সিকদার, আবুল কালাম আজাদ, কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী, নজিবুর রহমান, আহমদ কায়কাউস ও মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া। আনুগত্যের পুরস্কার হিসেবে পরে তাদের কাউকে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের চেয়ারম্যান করা হয়েছে। আবার মন্ত্রী পদমর্যাদার উপদেষ্টা, এমপি বা রাষ্ট্রদূতও হয়েছেন।
মো. আব্দুল করিম স্বরাষ্ট্র সচিবের দায়িত্ব পান ২০০৬ সালের ৭ ডিসেম্বর। দেশে তখন সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার রাষ্ট্র পরিচালনায়। ওই সময় রাজনৈতিক মহলে আলোচনা ছিল, পরবর্তী সময়ে রাষ্ট্রক্ষমতায় যাচ্ছে আওয়ামী লীগ। তাই দলটির শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলেন আব্দুল করিম। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বরাষ্ট্র সচিব হিসেবে তিনি আওয়ামী লীগকে বাড়তি সুবিধা দিয়েছিলেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। তাই শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পরও কিছুদিন স্বরাষ্ট্র সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন আব্দুল করিম। ২০০৯ সালের ২৪ জানুয়ারি নিয়োগ পান প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব হিসেবে।এর পর ২০১১ সালের ২ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব হন শেখ মোহাম্মদ ওয়াহিদ উজ জামান। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সরাসরি কাজের সুবাদে তিনি প্রশাসনে শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করেন। মুখ্য সচিব হিসেবে আনুগত্য ও বিশ্বস্ততার পুরস্কার হিসেবে ২০১৪ সালের ৮ ডিসেম্বর শেখ মো. ওয়াহিদ-উজ-জামানকে রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ব্যাংকের চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ দেন শেখ হাসিনা। ২০১৭ সালের ৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত তিন বছর এ পদে ছিলেন তিনি। তার মেয়াদেই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকটি সবচেয়ে বেশি লুটপাটের শিকার হয়। দেশের এক সময়ের সেরা এ ব্যাংকটির খেলাপি ঋণ এখন ৭৫ হাজার কোটি টাকারও বেশি, যা ব্যাংকটির বিতরণকৃত ঋণের প্রায় ৭৪ শতাংশ।জনতা ব্যাংক কর্মকর্তাদের ভাষ্য, জনতা ব্যাংকের লুটপাট শেখ মো. ওয়াহিদ-উজ-জামানের সময়ে এসে তীব্র হয়। ওই সময় ব্যাংকটিতে এননটেক্স ও ক্রিসেন্ট গ্রুপের প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকার কেলেঙ্কারি ঘটে। বেক্সিমকোসহ আওয়ামীঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী ও অলিগার্করা জনতা ব্যাংক থেকে ঋণের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা বের করে নেয়। সে সময়ে দেয়া ঋণই পরবর্তী সময়ে খেলাপি হয়ে যাওয়ায় জনতা ব্যাংক অস্তিত্বের সংকটে পড়েছে।
আবদুস সোবহান সিকদারকে ২০১৪ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব নিযুক্ত করা হয়। দায়িত্ব পালনকালে শেখ হাসিনার সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলেন তিনি। অবসরের পর ২০১৬ সালের মে মাসে তাকে ইতালিতে রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ দেয় সরকার। মুখ্য সচিব পদের আগে তিনি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সোবহান শিকদার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব ছিলেন। পরে মন্ত্রণালয়ের সচিবের দায়িত্ব পান। সে সময় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দেয়ার মাধ্যমে দলটির দায়িত্বশীলদের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর আবদুস সোবহান সিকদার ২০০৯ সালের ৮ মার্চ স্বরাষ্ট্র সচিবের দায়িত্ব পান।এসব আমলাদের মুখ্য সচিব হিসেবে নিয়োগের ক্ষেত্রে দুর্নীতি ও আনুগত্যকেই প্রধানতম যোগ্যতা হিসেবে দেখা হয়েছে বলে মনে করেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার। বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, ‘সে সময় তারা সব জায়গায় দুর্নীতিবাজ, দলবাজদের নিয়োগ দিয়েছিল, যাতে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর নিজস্ব এবং কোটারি (অভিন্ন স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের গোষ্ঠী) স্বার্থ তারা পূরণ করতে পারে। এটাই ছিল তাদের নিয়োগের প্রধান যোগ্যতা ও শর্ত। এর পরিণতিতেই শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে বিতাড়িত হতে হয়েছে। কিন্তু দেশ তাদের কারণে চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রাষ্ট্র তখন জনগণের কল্যাণে পরিচালিত হয়নি। রাষ্ট্র পরিচালিত হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর নিজের স্বার্থে ও দলীয়, পারিবারিক এবং কোটারির স্বার্থে।’
দেশের বিদ্যুৎ খাতের বর্তমান অব্যবস্থাপনা ও আর্থিক চাপ তৈরির জন্য অনেকাংশেই দায়ী করা হয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য সচিব ও সাবেক বিদ্যুৎ সচিব আবুল কালাম আজাদকে। শেখ হাসিনা সরকারের আমলে সরকারের সবচেয়ে প্রভাবশালী আমলাদের অন্যতম ছিলেন তিনি। ২০০৯ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত সরকারের বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব হিসেবে কাজ করেন তিনি। ২০১৪ সালের ১৩ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব হিসেবে নিয়োগ পান। পরে ২০১৫ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব হিসেবে নিয়োগ পান আবুল কালাম আজাদ। এছাড়া ইআরডি সচিব ও এসডিজি-বিষয়ক সমন্বয়ক হিসেবেও নিয়োজিত ছিলেন তিনি। দেশের বিদ্যুৎ খাত আইপিপি-নির্ভর হয়ে উঠেছিল তার হাত ধরেই। শেখ হাসিনা সরকারের প্রতি আনুগত্যের পুরস্কার হিসেবে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে জামালপুর-৫ আসনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পেয়ে এমপি হয়েছিলেন তিনি। ২৮ সেপ্টেম্বর রাতে সাবেক মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদকে রাজধানীর ধানমন্ডি থেকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা পুলিশ।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সাবেক এক মন্ত্রিপরিষদ সচিব বণিক বার্তাকে বলেন, ‘যারা মুখ্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তাদের অনেকেই আমার ঘনিষ্ঠ। তাদের নিয়ে কিছু বলতে চাই না। তবে চাকরিতে থেকে দলীয় বিষয়ে যুক্ত হওয়া অপরাধ। অবশ্য চাকরি শেষে রাজনীতিতে যুক্ত হতে কোনো সমস্যা নেই।’শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী শাসনামলে সবচেয়ে প্রভাবশালী আমলাদের অন্যতম কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী। ২০১৬ সালের ২৭ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব হিসেবে নিয়োগ পান এইচটি ইমামের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত এ কর্মকর্তা। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে নিয়োগের পর শেখ হাসিনার আস্থাভাজন হিসেবে পরিচিতি পান। চাকরি থেকে অবসরের পর শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় কমিটি বাস্তবায়নের প্রধান সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব পান তিনি। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর শেখ হাসিনা সরকার গঠন করলে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ পান তিনি। গত ১ অক্টোবর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা ও সাবেক মুখ্য সচিব কামাল আবদুল নাসের চৌধুরীকে গ্রেফতার করা হয়।
নজিবুর রহমান ২০১৮ সালের ১ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব হন। ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত তিনি এ দায়িত্ব পালন করেন। এর আগে এনবিআরের চেয়ারম্যান ও অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। মুখ্য সচিবের দায়িত্ব পালনকালে বিভিন্ন কোম্পানি থেকে প্লেসমেন্ট শেয়ার গ্রহণসহ শেয়ারবাজার থেকে নানা ধরনের সুবিধা নেন বলে অভিযোগ রয়েছে। পরবর্তী সময়ে তাকে সিএমএসএফের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেয়া হয়। গত ৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিনি এ দায়িত্বে ছিলেন।বেস্ট হোল্ডিংস নামে একটি কোম্পানির শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তি এক সময় ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয়। ২০১৯ সালের মাঝামাঝি সময়ে দুই ছেলের নামে কোম্পানিটির ১০ লাখ শেয়ার নেন নজিবুর রহমান। অভিযোগ রয়েছে, প্রভাবশালীদের উপঢৌকন হিসেবে তাকে শেয়ার দেয়া হয়। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর গত ৬ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক এ মুখ্য সচিবকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
আহমদ কায়কাউস বিগত সরকারের প্রশাসনের অন্যতম শীর্ষ কর্মকর্তা। বিদ্যুৎ বিভাগে ২০১৬ সালে তিনি ভারপ্রাপ্ত সচিব হিসেবে যোগ দেন। সচিব হিসেবে নিয়োগ পান ২০১৭ সালে। অভিযোগ রয়েছে, ভারতীয় কোম্পানি আদানির সঙ্গে ১ হাজার ৪৯৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির চুক্তিতে প্রত্যক্ষ ভূমিকা রেখেছিলেন আহমদ কায়কাউস। আবার অপ্রয়োজনীয় অনেক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের লাইসেন্স দেয়ার ক্ষেত্রেও ভূমিকা রাখেন। পরে এসব বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কয়েকটি উৎপাদনেই আসতে পারেনি।বেসরকারি এসব বিদ্যুৎ কেন্দ্রের (আইপিপি) উচ্চ ক্যাপাসিটি চার্জের বোঝা এখনো বয়ে চলেছেন দেশের বিদ্যুৎ খাত। ২০১৬ সালে আহমেদ কায়কাউস বিদ্যুৎ সচিব থাকাকালে বিদ্যুৎ খাতের একটি মাস্টারপ্ল্যান অনুমোদন করে সরকার। সে সময় এটি অনুমোদনের বিপক্ষে অনেক বিশেষজ্ঞই মতামত দিয়েছিলেন। বাস্তবতা পর্যালোচনা ছাড়াই এতে মোট উৎপাদিত বিদ্যুতের ৩৫ শতাংশ কয়লা ও ৩৫ শতাংশ এলএনজি-নির্ভর করে প্রণীত এ মহাপরিকল্পনা দ্রুতই ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। উল্টো ডলার সংকটে এখন নিয়মিত কয়লা ও এলএনজি আমদানি করতে না পারায় বেশ কয়েকটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র অলস বসিয়ে রাখতে হয়। ২০১৯ সাল পর্যন্ত বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব ও সিনিয়র সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ওই বছরের ৩১ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিবের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এ দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রশাসনে শক্ত অবস্থান গড়ে তোলেন তিনি। এ সময়ে হওয়া বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ নিয়োগ ও পদোন্নতিতে প্রত্যক্ষ ভূমিকা রাখেন তিনি। সরকারি চাকরি থেকে অবসর গ্রহণের পর যোগ দেন বিশ্বব্যাংকে। পরে মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই তার নিয়োগ বাতিল করা হয়।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব হিসেবে ২০২২ সালের ৭ ডিসেম্বর নিয়োগ পান তোফাজ্জল হোসেন মিয়া। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মাঠ প্রশাসনে নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন প্রধানমন্ত্রীর তৎকালীন এ মুখ্য সচিব। আওয়ামী লীগের থিংকট্যাংক হিসেবে পরিচিত প্রয়াত এইচটি ইমামের পর তিনিই মাঠ প্রশাসনের অন্যতম নিয়ন্ত্রক হিসেবে আবির্ভূত হন। আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতায় নিয়ে আসতে সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে ঐক্য ধরে রাখতে শক্তিশালী ভূমিকা পালন করেন তোফাজ্জল হোসেন। দ্বাদশ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর গত ২৬ জুন তার চুক্তির মেয়াদ আরো এক বছর বাড়ায় সরকার। সর্বশেষ কোটা সংস্কার ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন চলাকালে শিক্ষার্থীদের ওপর দমন-পীড়ন ও হত্যাকাণ্ডে শেখ হাসিনার অন্যতম সহযোগী হিসেবে তিনি নীতিনির্ধারণী ভূমিকা পালন করেন বলে অভিযোগ।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বণিক বার্তাকে বলেন, ‘শেখ হাসিনার আমলে কর্তৃত্ববাদী শাসন ব্যবস্থাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়া হয়েছিল এবং তার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও তার মুখ্য সচিবরা। কর্তৃত্ববাদী সরকারের যে ১৫ বছরের শাসন, সেখানে পুরো রাষ্ট্রকাঠামো ব্যক্তিকেন্দ্রিক হয়ে গিয়েছিল। পুরো রাজনৈতিক এবং গভর্ন্যান্সের স্ট্রেসটা মনোপোলাইড বা একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করা হয়েছিল। এতে কর্তৃত্ববাদী প্রধানমন্ত্রী ও তার দোসররা যেমন দায়ী, তেমনি বিতর্কিত মুখ্য সচিবদেরও দায় ছিল। এসব আমলা জবাবদিহিতার ঊর্ধ্বে নন, তাদেরও জবাবদিহির আওতায় নিয়ে আসা প্রয়োজন বলে আমি মনে করি।’দীর্ঘদিন ধরে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কাজ করা ইফতেখারুজ্জামান আরো বলেন, ‘আমাদের জন্য দুঃখজনক বিষয় যে তারা (মুখ্য সচিব) বিভিন্নভাবে পুরস্কৃত হয়েছিলেন। এর মাধ্যমে তাদেরকে উৎসাহিত করা হয়েছে চক্রের সঙ্গে থাকার জন্য। এভাবে অন্যদেরও উৎসাহিত করা হয়েছে। ফলে আমলাদের জনগণের সেবক হিসেবে কাজ করার চেয়ে ব্যক্তি বা দলকে সুবিধা দেয়ার কাজটিই করেছেন তারা।’