সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে বাংলাদেশের মতো পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়িতেও নেমে এসেছে শোকের ছায়া। বাংলাদেশের তিনবারের এ প্রধানমন্ত্রীর জন্ম হয়েছিল জলপাইগুড়ির নয়াবস্তি পাড়ায়। তার মৃত্যুতে এখন শোকার্ত নয়াবস্তি পাড়ার মানুষ। সেখানকার মানুষের কাছে তিনি মূলত পুতুল নামে পরিচিত ছিলেন।
জানা যায়, খালেদা জিয়ার বাবা মুহাম্মাদ ইসকান্দর জলপাইগুড়িতে একটি কোম্পানির শেয়ার কেনাবেচা সংস্থায় চাকরি করতেন। খালেদা জিয়া ১৯৪৫ সালে জলপাইগুড়ি পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের নয়াবস্তি পাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন । ছোটবেলায় তিনি স্থানীয় স্কুল সুনীতাবালা সদর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন।
জলপাইগুড়ির সাহিত্যিক প্রয়াত কামাখ্যা চক্রবর্তীর ‘সেকালের জলপাইগুড়ি শহর এবং সামাজিক জীবনের কিছু কথা’বইয়ের তথ্য অনুযায়ী, ভারত ও পাকিস্তান ভাগ হওয়ার পর খালেদা জিয়ার বাবা স্থানীয় মুখার্জি পরিবারের সঙ্গে জমি বিনিময় করে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে চলে আসেন। এরপর আর জলপাইগুড়িতে ফেরেননি তারা। তবে তাদের আত্মীয়দের নিয়মিত আসা-যাওয়া রয়েছে।
নয়াবস্তি পাড়ায় জন্ম নেওয়া পুতুলকে এখনো ভুলে যাননি সেখানকার মানুষ। খালেদা জিয়ার স্কুল সুনীতাবালা সদর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শোক প্রকাশ করা হবে বলে জানা গেছে।
সুনীতাবালা সদর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আরূপ দে বলেন, খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে আমরা গভীরভাবে শোকাহত। স্কুলের তরফ থেকে তার পরিবারকে সমবেদনা জানাই।
তিনি জানান, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রীর স্মরণসভা নিয়ে কর্তৃপক্ষ ও অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে একটি দিন ঠিক করা হবে।
নয়াবস্তি পাড়ার স্থানীয় বাসিন্দা এবং খালেদা জিয়ার বান্ধবীর কন্যা চামিলি বিশ্বাস বলেন, আমাদের এই নয়াবস্তিতেই খালেদা জিয়া থাকতেন। আমার মা থাকলে আরো ভালো বলতে পারতেন। কারণ তখন আমার মা এখানেই ছিলেন। মায়ের মুখে শুনেছি তারা এখানে থাকতেন। আমার মায়ের সঙ্গে ওঠাবসা ছিল।
স্থানীয় বাসিন্দা উৎপল গোপ বলেন, এ গলিতেই খালেদা জিয়ার বেড়ে ওঠা; তার শৈশবটা এখানেই কেটেছে। তার মৃত্যু আমাদের কাছে একটা বেদনা এবং দুঃখের ব্যাপার। তার আত্মার শান্তি কামনা করি।
খালেদা জিয়ার পরিবারের জমির এক অংশে এখন থাকেন চক্রবর্তী ও গোপ পরিবার। সব মিলিয়েই ছিল খালেদা জিয়ার পরিবারের বাড়ি। বর্তমানে খালেদার পরিবারের জলপাইগুড়ির বাগানবাড়ির একটা অংশ কিনে বাড়ি বানিয়েছে গোপ পরিবার। ওই পরিবারের দুই সদস্য ঝর্না গোপ এবং নীলকণ্ঠ গোপ খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে তাকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করে গভীর শোক প্রকাশ করেন।