কারাগারে বা আইনি হেফাজতে থাকা ব্যক্তিরাও এবার আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট দেওয়ার সুযোগ পাবেন। এছাড়া একইদিনে অনুষ্ঠিত গণভোটেও অংশ নিতে পারবেন বন্দিরা। ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশন (ইসি) এ বিশেষ নির্দেশিকা জারি করেছে।
বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) নির্বাচন কমিশনের নির্বাচন পরিচালনা-২ অধিশাখার উপ-সচিব মোহাম্মদ মনির হোসেন স্বাক্ষরিত এই নির্দেশনা কারা মহাপরিদর্শকের কাছে প্রেরণ করা হয়েছে।
নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালা ২০০৮ (সংশোধন ২০২৫)-এর বিধি ১০ক অনুযায়ী, ‘ইন-কান্ট্রি পোস্টাল ভোটিং’ (আইসিপিভি) পদ্ধতির মাধ্যমে এই প্রথমবার জেলখানায় থাকা ব্যক্তিরা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন।
ইসির নির্দেশনায় বলা হয়েছে, প্রতিটি জেলখানার বন্দিদের ভোটার নিবন্ধনের জন্য একটি বিশেষ ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম উন্মুক্ত করা হবে। প্রতিটি জেলখানার পক্ষ থেকে কারা কর্তৃপক্ষ দুইজন প্রতিনিধি মনোনয়ন দেবেন, যারা বন্দিদের নিবন্ধনের কাজ পরিচালনা করবেন। আগ্রহী ভোটারদের মুদ্রিত তালিকা সিল ও স্বাক্ষরসহ নির্বাচন কমিশনে পাঠাতে হবে। একই সঙ্গে মনোনীত প্রতিনিধিরা নির্ধারিত পোর্টালে ভোটারদের প্রয়োজনীয় তথ্য (.xls/.csv ফরম্যাট) আপলোড করবেন।
নিবন্ধিত ভোটাররা কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে ‘বহির্গামী খাম’ (ফরম-৯ক) পাবেন। খামের ভেতরে থাকছে:
১. জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের জন্য দুটি আলাদা ব্যালট পেপার।
২. ভোট প্রদানের নির্দেশাবলি ও একটি ঘোষণাপত্র (ফরম-৮)।
৩. রিটার্নিং অফিসারের ঠিকানা সংবলিত একটি ফেরত খাম (ফরম-১০খ)।
সংসদ নির্বাচনের ব্যালট পেপারে কোনো প্রার্থীর নাম থাকবে না; শুধু বরাদ্দকৃত প্রতীক এবং প্রতীকের পাশে খালি ঘর থাকবে।
নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, জেলখানার ভেতর ভোট প্রদানের জন্য কারা কর্তৃপক্ষকে গোপন কক্ষ বা উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। ভোটাররা ব্যালট পেপারে তাদের পছন্দের প্রতীকের পাশে টিক (√) বা ক্রস (x) চিহ্ন দিয়ে ভোট দেবেন। ভোট দেওয়ার আগে ঘোষণাপত্রে নাম ও এনআইডি নম্বর লিখে স্বাক্ষর করতে হবে। স্বাক্ষর অক্ষম হলে অন্য একজন ভোটার তা সত্যায়ন করবেন।
ভোট প্রক্রিয়া শেষে ভোটাররা দুটি ব্যালট ছোট খামে ভরে এবং স্বাক্ষরিত ঘোষণাপত্রসহ একটি বড় হলুদ খামে সিলগালা করবেন। এই খামগুলো সেলফ অ্যাডহেসিভ, তাই কোনো ডাক মাশুল বা স্ট্যাম্প লাগবে না।
ভোট গ্রহণের পর কারা কর্তৃপক্ষ খামগুলো সুরক্ষিতভাবে সংগ্রহ করবে এবং দ্রুততম সময়ের মধ্যে স্থানীয় ডাক বিভাগের কাছে হস্তান্তর করবে। ডাক বিভাগ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে খামগুলো সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা নেবে।