হত্যার উদ্দেশ্যে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদির ওপর গুলিবর্ষণকে নির্বাচন বানচাল ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। দলটির নির্বাহী পরিষদ সদস্য এবং ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমির নূরুল ইসলাম বুলবুল সন্ত্রাসীদের রুখে দিতে আরেকটি অভ্যুত্থানের প্রস্তুতি নিতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
হাদীর ওপর হামলার প্রতিবাদ এবং গুলিবর্ষণকারীদের বিচারের দাবিতে শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীয় বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের উত্তর গেটে মহানগর দক্ষিণ জামায়াতের বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে এ আহ্বান জানান তিনি।
ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী হাদীকে শুক্রবার দুপুরে চলন্ত রিকশায় গুলি করে মোটরসাইকেলে আসা অজ্ঞাত হামলকারীরা। শেখ হাসিনার পতন ঘটানো জুলাই গণঅভ্যুত্থানোর সম্মুখসারির এই নেতার অবস্থা আশঙ্কাজনক। শুক্রবার বিকেলে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দেখতে যান জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমান।
শুক্রবার বিবৃতিতে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, তপশিল ঘোষণার পরদিন একজন অন্যতম জুলাই যোদ্ধা এবং এমপি প্রার্থীর ওপর প্রকাশ্যে গুলিবর্ষণ নির্বাচনকালীন নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে মারাত্মকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। সকল প্রার্থী, দলীয় কর্মী ও সাধারণ নাগরিকের নিরাপত্তায় কার্যকর ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। হামলাটি পতিত ফ্যাসিস্ট শক্তির নির্বাচন বানচালের কোনো সুপরিকল্পিত চক্রান্ত কিনা-সরকারকে তা গভীরভাবে খতিয়ে দেখার আহ্বান জানাচ্ছি।
জামায়াত সেক্রেটারি জেনারেল বলেছেন, ওসমান হাদি গত ১৩ নভেম্বর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক স্ট্যাটাসে জানান- ৩০টি বিদেশি নম্বার থেকে কল ও টেক্সট করে তাকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে এবং তার মা, বোন ও স্ত্রীকে ধর্ষণের হুমকিও দেওয়া হয়েছে। দেশবাসীর কাছে এটা পরিষ্কার, প্রশাসন তার নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। এই দায় এড়ানোর নিন্দা জানাই।
সন্ধ্যায় বিক্ষোভ মিছিলপূর্ব সমাবেশে নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেছেন, তপসিল ঘোষণার পরের দিনই টার্গেট কিলিংয়ের মাধ্যমে ওসমান হাদির ওপর গুলিবর্ষণ নির্বাচন বানচালের চক্রান্তের অংশ। হাদীকে হত্যার উদ্দেশ্যে সংঘটিত হামলার উদ্দেশ্য জুলাই যোদ্ধাদের ভয় দেখানো।
হাদীর ওপর হামলাকে নাজুক আইনশৃঙ্খলার প্রমাণ আখ্যা দিয়ে বুলবুল বলেছেন, একজন নেতার যদি নিরাপত্তা না থাকে তাহলে সাধারণ জনগণের নিরাপত্তার অবস্থা কী- সেটি বলার অপেক্ষা রাখে না। সন্ত্রাসীদের দমন এবং অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে চিরুনি অভিযান পরিচালনা করতে হবে।
সমাবেশে বক্তব্য দেন জামায়াত কর্মপরিষদ সদস্য ড. হেলাল উদ্দিন, মজলিসে শুরা সদস্য ড. আব্দুল মান্নানসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা। সমাবেশ শেষে বিক্ষোভ মিছিল প্রেসক্লাব হয়ে শাহবাগ যায়।