সাভারে তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়েছেন দেশ টিভির ঢাকা জেলা প্রতিনিধি ও সাভার উপজেলা জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান ইমন এবং তার ক্যামেরা পার্সন জাহিদুল ইসলাম খান।
সোমবার (৮ ডিসেম্বর) দুপুর ১টা ৩০ মিনিটের দিকে সাভার আলমননগর সেটেলমেন্ট অফিসে দুর্নীতির তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অফিসের পেশকার মো. শফিকের বক্তব্য নেওয়ার একপর্যায়ে হঠাৎ করে অফিস চত্বরের ভেতর থাকা দালাল চক্র সাংবাদিকদের ওপর চড়াও হয়। উপ-সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার মো. সাইফুল ইসলামের ইন্ধনেই হামলাকারীরা মব তৈরি করে সাংবাদিকদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এতে সাংবাদিক দেওয়ান ইমন শারীরিকভাবে হেনস্তার শিকার হন। এসময় ক্যামেরা পার্সন জাহিদুল ইসলামের কাছ থেকে ক্যামেরা ছিনতাই ও ভাঙচুরেরও চেষ্টা করা হয়।
হামলার ঘটনার পর অন্যান্য সাংবাদিকরা ঘটনাস্থলে পৌঁছালে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। একই সঙ্গে অভিযুক্ত কর্মকর্তারাও দ্রুত অফিস বন্ধ করে সটকে পড়ে। এতে বিপাকে পড়েছেন সেসব জমির মালিকেরা, যারা অভিযোগ করছেন, এই কর্মকর্তারা তাদের কাছ থেকে মোটা অংকের ঘুষ আদায় করে পছন্দমতো রায় দেওয়া, বিলম্ব করানো ও নানামুখী সেবা দিবে বলে টাকা নিয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিক রফিক নামে এক ব্যক্তি অভিযোগ করে বলেন, “আমার পক্ষে রায় ঠিক করে দেবেন বলে পেশকার শফিক ২৬ হাজার টাকা নিয়েছিল। এখন সাংবাদিকদের মেরে পালিয়ে গেছে। ফোন বন্ধ। আমার টাকা আমি কিভাবে ফেরত পাব।
স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন ধরে এ অফিসে ভূমি সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রতারণা, পক্ষপাতমূলক রায় প্রদান ও দালাল সিন্ডিকেটের মাধ্যমে অর্থ লেনদেন চলছিলো। সাংবাদিকদের অনুসন্ধানে ক্ষুব্ধ হয়ে দালাল চক্র সংগঠিত হয়ে হামলা চালায়।
এ ঘটনায় সাভার উপজেলা জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে। তারা অবিলম্বে পেশকার সাইফুল ও পেশকার শফিকসহ সংশ্লিষ্ট সকল হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও আইনগত ব্যবস্থার দাবি জানিয়েছেন।
দেওয়ান ইমন বলেন, “সংবাদ সংগ্রহ করা সাংবাদিকের সাংবিধানিক অধিকার। অথচ সরকারি কর্মকর্তাদের নির্দেশে মব তৈরি করে আমাদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে—এটি মুক্ত সাংবাদিকতার ওপর সরাসরি আঘাত। প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।”
এ ঘটনায় সাভার মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছে ভুক্তভোগী সাংবাদিকেরা। অভিযোগে উল্লেখ রয়েছে, পেশকার শফিক, উপ-সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার মো. সাইফুল ইসলাম, সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার সোহেল আহমেদসহ অজ্ঞাত ১৫–২০ জন হামলায় অংশ নেয়। তারা চেয়ারের আঘাতে হামলার চেষ্টা, অকথ্য গালিগালাজ, ক্যামেরা ভাঙচুরের চেষ্টা এবং মামলা দিয়ে হয়রানির হুমকি প্রদান করে।
সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরমান আলি বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। দ্রুত সময়ের ভেতর আইনগতভাবে ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে।
শীর্ষনিউজ