অনেক দিন পর পুরোনো চেহারায় ফিরছে ভোটের মাঠ। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তফসিল ঘোষণার আগেই মাঠে নেমেছে বেশিরভাগ দল। নানান প্রতিশ্রুতি নিয়ে ভোটারদের দোরগোড়ায় যাচ্ছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা। রাজনীতিতে সরব থাকলেও ভোটের মাঠে কিছুটা পিছিয়ে বিএনপির সঙ্গে আসন সমঝোতায় আগ্রহী দলগুলো।
২৩৭ আসনে ধানের শীষের সম্ভাব্য প্রার্থী ঘোষণার পর বাকি ৬৩ আসন নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা-কল্পনা। বিএনপির তরফ থেকে ঘোষণা রয়েছে, যুগপৎ আন্দোলনে থাকা সমমনা এবং ফ্যাসিবাদবিরোধী অন্যান্য দলকে নিয়ে নির্বাচন ও সরকার গঠনের। এসব দলের সঙ্গে একাধিক বৈঠকও করেছে বিএনপি। তবে, আরপিও সংশোধনীতে অন্য দলের প্রতীক নিয়ে ভোট করার সুযোগ বন্ধ হওয়ার পরই জটিল হয়েছে সমীকরণ।
আট দলের জোট গণতন্ত্র মঞ্চের তরফ থেকে ৪০টি আসন চাওয়া হয়েছে বিএনপির কাছে। একইভাবে প্রত্যাশা জানিয়েছে ১২ দলীয় জোট, জমিয়ত, গণঅধিকারসহ অন্যান্য দল।
চলতি সপ্তাহেই আসন ভাগাভাগি নিশ্চিত হতে পারে উল্লেখ করে গণতন্ত্র মঞ্চভুক্ত বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক জানান, বিএনপি ২৩৭টি আসনে প্রার্থিতার প্রাথমিক ঘোষণা দিয়েছে। আরও ৬৩ আসন খালি রয়েছে। কিন্তু নির্বাচন কমিশনের আরপিও সংশোধনী হঠাৎ করে এক ধরনের চাপিয়ে দেয়া। আমাদের জন্য এখন একটা দিনও অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কালক্ষেপণ করার কোনো সময় নেই।’
বিএনপির সঙ্গে আসন সমঝোতায় আগ্রহী জমিয়তে উলামায়ে ইসলামও। দলটির মহাসচিব মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী বলেন, ‘অনেকগুলো আসনই আমাদের ডিমান্ড রয়েছে। কিন্তু যাদের সঙ্গে আমরা একমত হয়ে কাঙ্ক্ষিত দ্বারপ্রান্তে এলাম, তারা যদি আমাদের সঙ্গে দলীয় নেতাকর্মীদের কাজ করার জন্য আন্তরিকতা প্রদর্শন না করে, তাহলে এটাকে সমঝোতা বলে না।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘আমরা আসন ছাড় দিতে রাজি আছি। কিন্তু তারা দলীয় মার্কা দিয়ে জনগণের ভোট আদায় করে আনতে পারবে কি না এ নিয়ে আমাদের একটা আশাঙ্কা রয়েছে। যদি তারা ধানের শীষে নির্বাচন করতে পারতো, তাহলে দলীয় নেতাকর্মীদের তাদের প্রচারণায় নামানো যেত। আর নিজ দলীয় মার্কায় ভোট করে তাহলে ধানের শীষের কর্মীদের জোর করে মাঠে নামানো আমাদের জন্য খুব কষ্টকর হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘শরিক দলকে যথপযুক্ত সম্মান করতে আমাদের আপত্তি নেই। কিন্তু এটা কার্যকর করার ক্ষেত্রে আমাদের একসঙ্গে বসেই ভাবতে হবে, কোন পদ্ধতিতে নির্বাচন করা যায়।’
ডিসেম্বরের প্রথম দিকে তফসিল ঘোষণার পরই শুরু হয়ে যাবে আনুষ্ঠানিক প্রচারণা। ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ভোট আয়োজনে প্রস্তুতি প্রায় গুছিয়ে এনেছে ইসি।