Image description

ভারতে পালিয়ে থাকা সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের রায় দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। কয়েক মাস আগেই তার একটি বক্তব্যকে কেন্দ্র করে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়েছে ধানমন্ডি-৩২ নম্বরে অবস্থিত তার বাবা শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ি। ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ করেছে তার স্বামী ড. ওয়াজেদ মিয়ার বাড়ি সুধা সদনে। তার অন্যান্য সম্পদও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। বিদেশে থেকেই শুনতে হলো তার ফাঁসির রায়। দেশে আসলে তার এই ফাঁসি কার্যকর হবে। 

এ প্রেক্ষাপটে সামনে এসেছে ২০১০ সালের ১৩ নভেম্বরের একটা ঘটনা। অনলাইনে ঘুরে বেড়াচ্ছে সেদিনের স্মৃতি। সেদিন খালেদা জিয়াকে তার স্বামী জিয়াউর রহমানের স্মৃতিবিজড়িত বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার। এমনকি উচ্ছেদ করার পর ক্রন্দনরত খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দম্ভভরে নানা তাচ্ছিল্য ও উপহাসমূলক মন্তব্য করেছিলেন শেখ হাসিনা। 

সেদিন মহান মুক্তিযুদ্ধের ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের স্মৃতিবিজড়িত বাড়িটি নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছিল শেখ হাসিনা। কেবল অসহায়ের মতো কেঁদেছিলেন এক বিধবা নারী বেগম খালেদা জিয়া। এই চোখের পানিতে যে কষ্ট ছিল তা বুঝতে চাননি ফ্যাসিস্ট হাসিনা। 

কান্নাবিজড়িত কণ্ঠে সেদিন তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া বলেছিলেন, ‘তাকে বাড়ি থেকে এক কাপড়ে বের হয়ে আসতে হয়েছে। টেনেহিঁচড়ে সেখান থেকে বের করা হয়েছে।’ 

খালেদা জিয়া বলেন, ‘আমি প্রায় ৪০ বছর এই বাড়িতে কাটিয়েছি। আমার স্বামী জীবন দেওয়ার পর তার অনেক স্মৃতি নিয়ে এই বাড়িতে ছিলাম।’ 

তার বিরুদ্ধে অমানবিক আচরণ করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন বেগম জিয়া। তিনি আরও বলেছিলেন, “সারাদিন আমাকে কিছু খেতে পর্যন্ত দেওয়া হয়নি। অথচ তারা মিথ্যা কথা বলছে। আমি নাকি আমার বাড়ি ছেড়ে দিয়ে চলে এসেছি। সব মিথ্যা, বানোয়াট। ‘নিজে যেতে না চাইলে তুলে নিয়ে যাও’-বলেও একজন হুমকি দিয়েছে।” 

খালেদা জিয়া বলেছিলেন, ‘তারা জবরদস্তি আমাকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে। গ্রিল কেটে তালা ভেঙে ভেতরে ঢুকেছে। আমার লোকজনকে মারধর করেছে। লাথি মেরে মেরে বেডরুমের দরজা ভেঙেছে। আমাকে টানতে টানতে বাইরে এনেছে। আমি বিরোধী দলের নেত্রী। তিন দফায় প্রধানমন্ত্রী ছিলাম, সাবেক সেনাপ্রধানের স্ত্রী, সাবেক রাষ্ট্রপ্রধানের স্ত্রী হিসাবেও সামান্য মর্যাদাটুকুও আমাকে দেখানো হয়নি। এতেই আমরা বুঝতে পারি এই সরকার সাধারণ মানুষের সঙ্গে কেমন আচরণ করবে।’ 

কান্নাজড়িত কণ্ঠে খালেদা জিয়া আরও বলেন, ‘আমি এর বিচারের ভার মহান আল্লাহর হাতে ছেড়ে দিলাম। দেশবাসীর কাছে ছেড়ে দিলাম।’