ক্রমাগতভাবে যদি চেষ্টা করলে বিগত আওয়ামী লীগ আমলে ধ্বংস করে দেয়া শিক্ষাব্যবস্থাকে ঠিক করতে ২০ থেকে ৩০ বছর লাগবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। আজ সোমবার (১৭ নভেম্বর) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে সাদা দলের উদ্যোগে ‘বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ শিক্ষার রূপান্তর: একটি কৌশলগত রোডম্যাপ’ শীর্ষক সেমিনার এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, দায়িত্বশীল একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে জাতি গঠনে আমাদের কিছু ভাবনা আছে। অনেক আগে থেকেই আমাদের যে ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছিলাম তার মধ্যে সংক্ষিপ্তভাবে কিছু এমব্রডিং আমরা করেছি। যে নিড বেসড এডুকেশন বলতে আমরা কি বুঝাচ্ছি, নলেজ বেসড এডুকেশন বলতে আমরা কি প্রস্তাব করছি এবং রিসার্চ বেসড এডুকেশন বলতে আমরা কি কি পরিকল্পনা করছি। কিন্তু ৩১ দফা একটা সংক্ষিপ্ত নীতি ও পরিকল্পনা। তার ভিত্তিতে যে সমস্ত কর্মপরিকল্পনা এখন প্রণয়ন হচ্ছে। আমরা চেষ্টা করছি তার মধ্যে আপনাদের সবার মতামতকে ধারণ করে, বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মের মতামতকে ধারণ করে মেধাভিত্তিক জ্ঞান নির্ভর এবং গবেষণাভিত্তিক একটি সমাজ এবং রাষ্ট্র বিনির্মাণের। কথাগুলো বলতে গেলে খুব সহজেই বলা যায়। কিন্তু এই বাস্তবায়ন অনেক সময় সাপেক্ষ এবং দীর্ঘ পরিকল্পনার বিষয়।
তিনি বলেন, যেভাবে সিস্টেম্যাটিক ব্রুটাল কিলিংয়ের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনা এই রাষ্ট্রের ফ্যাসিস্ট শাসন ব্যবস্থা টিকিয়ে রাখতে চেয়েছিল। তার চাইতেও ডেঞ্জারাস হচ্ছে যে আমাদের অর্থনীতি, সমাজনীতি, আমাদের রাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ এবং শিক্ষা ব্যবস্থা সবকিছুকে একটা সিস্টেম্যাটিক প্ল্যান ওয়াইজ ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। কারণ যাদের হেজিমনি বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠা করা দরকার তারা জানত এই রাষ্ট্রটাকে, এই জনসমষ্টিকে গ্রাজুয়ালি এমন একটি অবস্থায় নিয়ে যেতে হবে। যাতে এখানে কোনো এই দেশ নির্মাণের জন্য কোনো শিক্ষিত জনগোষ্ঠী না থাকে। বুদ্ধিভিত্তিক চর্চা যেন না থাকে।
তিনি বলেন, সাংস্কৃতিক আগ্রাসন যেভাবে হয়েছে। আমরা এটা খুব সংক্ষিপ্ত ভাষায় বলে থাকি যে কোন রাষ্ট্রকে ধ্বংস করার জন্য এটাম বোমার চাইতেও কার্যকর হচ্ছে সেই দেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দেয়। এটা আমরা খুব ইজিলি বলে থাকি। কিন্তু বিশ্লেষণ করতে গেলে দেখা যাবে প্রাইমারি লেভেল থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত বিভিন্ন কারিকুলামের মাধ্যমে গণহারে জিপিএ-৫, গোল্ডেন এ প্লাস এগুলো দেয়ার মাধ্যমে যেভাবে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। সেটা আগামীতে ঠিক ২০ থেকে ৩০ বছর পর্যন্ত আমরা গ্রাজুয়ালি যদি চেষ্টা করি তাহলে আমরা সফলকাম হবো। যেই জায়গায় আমরা যেতে চাই, এই জাতিকে যে জায়গায় নিতে চাই। সেই জায়গায় নিয়ে যাওয়ার জন্য। সেজন্যই আজকে আমাদের এই কর্ম পরিকল্পনা।
ঢাবি সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খানের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. আবদুস সালামের সঞ্চালনায় সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাবির শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক শাহ শামীম আহমেদ। মূল আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাউবির) ভিসি অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম।