ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বর বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় এলাকা। শুক্রবার (৭ নভেম্বর) বিকেলে ওয়াপদার মোড়ে এ সংঘর্ষে তিন পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন।
সংঘর্ষের সময় ওয়াপদার মোড়ের পাশে হারুন শপিং কমপ্লেক্সে বিএনপির এক পক্ষের কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করা হয়। আগুন দেওয়া হয় কমপ্লেক্সের সামনে থাকা অন্তত ১১টি মোটরসাইকেলে। এ সময় আশপাশের দোকানপাটও রেহাই পায়নি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা বিএনপি কৃষকদলের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি খন্দকার নাসিরুল ইসলাম এবং উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক শামসুদ্দিন মিয়া ওরফে ঝুনু—এই দুই পক্ষের অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষটি হয়। দুজনই ফরিদপুর-১ (বোয়ালমারী, আলফাডাঙ্গা ও মধুখালী) আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী। তবে দল এখনো এ আসনে চূড়ান্ত প্রার্থী ঘোষণা করেনি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বেলা তিনটার দিকে দুই পক্ষের সমর্থকরা পৃথকভাবে মিছিল নিয়ে ওয়াপদার মোড় ও কলেজ মোড়ে জড়ো হন। বিকেল ৪টার দিকে নাসিরুলপন্থীরা ওয়াপদার মোড়ের দিকে অগ্রসর হলে দুই পক্ষের মধ্যে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু হয়। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।
বোয়ালমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর হাসান চৌধুরী, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. শিব্বির আহমেদ ও থানার ওসি মাহমুদুল হাসান পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। হামলাকারীরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে শপিং কমপ্লেক্সে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ চালায়।
এ সময় ফায়ার সার্ভিসের গাড়িও হামলার শিকার হয়। বিকেল ৫টা থেকে সাড়ে ৫টা পর্যন্ত উত্তেজনা চলতে থাকে। পরে সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
শামসুদ্দিন মিয়া অভিযোগ করে বলেন, ‘আমরা অনুমতি নিয়ে অনুষ্ঠান করছিলাম, কিন্তু নাসিরুলের লোকজন আওয়ামী লীগের সহায়তায় আমাদের উপর অতর্কিতে হামলা চালায়। এতে আমাদের ১৭ জন আহত হন।’
অন্যদিকে খন্দকার নাসিরুল ইসলাম দাবি করেন, ‘আমাদের লোকজনের ওপর প্রথমে হামলা হয়েছে। এতে কয়েকজন আহত হন। জনতা উত্তেজিত হয়ে শপিং কমপ্লেক্সে হামলা চালায়।’
বোয়ালমারী থানার ওসি মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘সংঘর্ষে তিন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।’