নির্বাচনের টাইমফ্রেম দেয়া না হলেও নির্বাচনের পথে এগিয়ে যাচ্ছে দেশ। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা নতুন দল গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করেছেন। তাদের মূল এজেন্ডা হচ্ছে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে ভারত বিরোধিতা, হাসিনার বিচার নিশ্চিত করা, ৯২ ভাগ মুসলমানের ধর্মীয় চেতনা ধারণ করে তৌহিদী জনতাকে দলে ভিড়ানো। ছাত্রনেতারা শুধু সভা-সমাবেশ নয় পাশপাশি ইসলামী জলসা-মাহফিলে যাচ্ছেন। এরোই মধ্যে আওয়ামী লীগের ‘রাজনৈতিক মৃত্যু’ ঘটে গেছে। জামায়াত চানক্যনীতি কৌশল করে বিএনপিকে ঠেকিয়ে ক্ষমতায় যাওয়ার পরিকল্পনা করছে। দলটি বিগত ‘৮৬ ও ’৯৬ সালের নির্বাচনের আগের কৌশলের পথে হাটছে। কিন্তু বিএনপি কী করবে? বিএনপির রাজনৈতিক পরিণতি কোন দিকে যাবে? দলটি কী ধর্ম নিরপেক্ষতার নামে সেক্যুলার পথ ধরবে, নাকি সম্ভাব্য কিংস পার্টিকে ঠেকাতে রাষ্ট্রধর্ম ইসলামের পক্ষ্য নিয়ে তৌহিদী জনতার পক্ষ নেবে? দলটি কী শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের চেতনায় এগোবে? এ প্রশ্ন এখন সর্বত্রোই আলোচন হচ্ছে।
শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৮৯তম জন্মবার্ষিকী ছিল ১৯ জানুয়ারি। দিবসটি উপলক্ষ্যে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। বিএনপি আয়োজিত ওই সভায় কয়েকজন নেতা বক্তৃতা করলেও দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ ও লন্ডন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান যে বক্তব্য দেন তা নিয়ে বেশ আলোচনা হচ্ছে। রাজনৈতিক অঙ্গনের পাশাপাশি সোস্যাল মিডিয়ায়ও দু’নেতার বক্তব্য সাড়া ফেলেছে। মেজর (অব) হাফিজ বলেছেন, ‘যত বড় নেতাই হোক, দুর্নীতির অভিযোগ পেলে তাকে সাথে সাথেই বহিষ্কার করে দিবেন। আমরা একজন-দুইজন ব্যক্তির জন্য দেশ ও দলের ভাগ্য বিপর্যয়ে ফেলতে পারি না।’ বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তরুণ নেতাদের ‘কিংস পার্টি’ গঠনের প্রক্রিয়া এবং বিএনপি ক্ষমতায় গেলে তরুণদের সামরিক প্রশিক্ষণ দেয়া হবে বলেও জানান।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, ‘আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন বিএনপির জন্য এতো সহজ নয়। আমি গত কয়েক মাস ধরে বলছি, আপনারা যতো সহজ ভাবছেন, সামনের নির্বাচন এতো সহজ নয়। নিজের মনে যতই বড়াই করুন বিএনপির তো শাখা-প্রশাখা একদম গ্রাম পর্যন্ত আছে, অন্যদের কি আছে? এই তো বড়াই করছেন, তাই না। থাকতে পারে আপনার শাখা-প্রশাখা, আমাদের নেতা-কর্মীরা তৈরি করেছেন সেই শাখা-প্রশাখা, গ্রাম পর্যন্ত দলকে নিয়ে গেছে, ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে দলকে নিয়ে গেছে। কিন্তু তারপরেও জনগণ ম্যাটারস। সেই জনগণ হচ্ছে আমাদের শক্তি, আমাদের সমর্থন। জনগণ সাথে না থাকলে কি হয় ৫ আগস্ট বুঝিয়ে দিয়েছে।’
তারেক রহমান ও মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বিএনপি নিয়ে যে উপলব্ধি করেছেন দলটির অন্য নেতাকর্মীরা কী সেটা করছেন? হাসিনার পতনের পর দেশে রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপির সমকক্ষ কেউ নেই। অন্যেরা যতই লাফালালি করুক এখন পর্যন্ত জনগণ বিএনপির সঙ্গে রয়েছে। ৫ আগস্ট হাসিনা পালানোর আগ পর্যন্ত ১৭ বছর বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর যে অবর্ণনীয় জুলুম নির্যাতন হয়েছে এবং হাসিনা নানা চেষ্টা করেও বিএনপিকে খন্ডবিখন্ড করতে পারেনি এটা সত্য। এমনকি ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে বিএনপির কয়েকশ নেতাকর্মী ‘শহীদ’ হয়েছেন। কিন্তু তারেক রহমান বলেছেন, ‘জনগণ সাথে না থাকলে কি হয় ৫ আগস্ট বুঝিয়ে দিয়েছে।’ তারেক রহমান যথার্থই উপলব্ধি করেছেন। প্রশ্ন হচ্ছে বিএনপির জনগণকে পাশে রাখতে কী করছে?
কয়েক মাস আগেও দেশের আকাশ-বাতাসে উচ্চারিত হতো শেখ মুজিব, শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগের নাম। দেশে প্রচারণাটা এমন ছিল যে ‘এ জগতে যা কিছু চির কল্যাণকর, অর্ধেক তার করেছে নারী অর্ধেক তার নর’ কাজী নজরুল ইসলামের এই কবিতাকে বিকৃত করে ‘বাংলাদেশের যা কিছু চির কল্যাণকর, তার সবকিছুই করেছে আওয়ামী লীগ আর শেখ মুজিব’। সেই শেখ হসিনা জনরোষে পালিয়ে রাজনৈতিক মুরুব্বী ভারতে গেছেন; আর শেখ মুজিবুর রহমান দলিথমতিথ। এতে প্রমাণ মেলে দল যত শক্তিশালী হোন না কেন, জনগণ যে কোনো সময় ওলোটপালট করে দিতে পারে। বিএনপির নেতারা কি সেটা অনুধারণ করতে পারছেন?
হাসিনা পালানোর পর দিল্লি একের পর এক ঢাকার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের তীর ছুঁড়ছে। আওয়ামী লীগের রাজনীতি দিল্লি কেন্দ্রক দেশবাসী বুঝে গেছে। কিন্তু বিএনপি? বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের প্রবক্তা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের দলটি কী জাতীয়তাবাদী ধারায় চলছে? জিয়াউর রহমান বঙ্গোপসাগরের নতুন ভূমি তালপট্টি নিয়ে ভারতের সঙ্গে কম্প্রোমাইজ করেননি। শেখ মুজিবুর রহমান চীনের সঙ্গে সম্পর্ক গড়তে পারেননি। জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে অর্থনৈতিক শক্তি চীনের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলেন। সে সম্পর্ক বিএনপির সঙ্গেও ছিল। অর্থনৈতিক ভাবে চীনের অবস্থা এমন যে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙ্গে যাওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র সবচেয়ে বড় শত্রু হচ্ছে চীনকে। তারপরও যুক্তরাষ্ট্র সব সময় চীনের একদেশ নীতির পক্ষ্যে। অথচ ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসে বিএনপির নেতা ওই সময়ের বাণিজ্যমন্ত্রী আমির খসরু মাহমুদ চৌধরী চীনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে তাইওয়ানের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক গড়ে বিএনপির সর্বনাশ করেন। বেগম খালেদা জিয়া সব সময় শহীদ জিয়ার রাজনীতি একশ ভাগ ধারণ করতেন। তিনি দেশের সর্বময় মানুষের চিন্তা চেতনা বুঝতেন এবং সেভাবে সরকার ও দল পরিচালনা করতেন। ভারতের সাবেক প্রেসিডেন্ট প্রণব মুখার্জির লেখা ‘আত্মজীবনী’ বই প্রমাণ দেয় বেগম জিয়া কেন ঢাকা সফরের সময় ভারতের প্রেসিডেন্ট প্রণব মুখার্জির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেননি। কিন্তু বিএনপি কী করছে?
৫ আগেস্টের ছাত্রজনতার অভ্যূত্থানে নেতৃত্ব দেয়া বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের ঘোষণা দিয়েছে। তারা কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণার পর ইতোমধ্যেই দেশের কয়েকটি জেলা কমিটি গঠন করেছেন। প্রচারণা রয়েছে তারা দু’এক মাসের মধ্যে তাদের রাজনৈতিক দল আত্মপ্রকাশ করবে। ছাত্রদের কথা মাথায় রেখে নির্বাচন সংক্রান্ত সংস্কার কমিশন ১৭ বছর বয়সে ভোটার এবং ২১ বছর বয়সে নির্বাচনের প্রার্থী হওয়ার প্রস্তাব করেছেন। ছাত্রদের সম্ভাব্য দলকে যতই ‘কিংস পার্টি’ হিসেবে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করা হোক বাস্তবতা কী বলে? পতিত আওয়ামী লীগ এক সময় ‘বিএনপির জন্ম ক্যান্টনমেন্টে’ প্রচার করে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করেছে। সে আওয়ামী লীগ কোথায় আর বিএনপি জনসমর্থন কোন পর্যায়ে? সারাদেশে বিএনপির কর্মীসমর্থন, হাসিনা ১৫ বছয় ভয়ভীতি দেখিয়ে, এমপি-মন্ত্রীর লোভলালসা দেখিয়ে, হামলা-মামলা কারাগারে নিয়ে এমনকি খুন-গুম করেও বিএনপিকে সাংগঠনিকভাবে দুর্বল করতে পারেনি। তাহলে নতুন প্রজন্মের ‘কিংস পার্টি’ যদি মানুষের কথা বলে, হিন্দুত্ববাদী আগ্রাসী ভারতের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করে, ৯২ ভাগ মুসলমানের দেশে আলেম ওলামাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক গঠন করে মানুষের প্রত্যাশা অনুযায়ী অগ্রসর হয় তাদের ঠেকাবেন কিভাবে? হাসিনা পালিয়েছে সাড়ে ৫ মাস, এখন পর্যন্ত বিএনপির রাজনৈতিক অবস্থান পরিস্কার করেনি। মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারী, মাওলানা আমির হামজাসহ কয়েকজন ইসলামী বক্তার ওয়াজ মাহফিলে লাখ লাখ লোকের সমাগম ঘটছে। হেলিকপ্টারে চলে তারা দেশের বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে ওয়াজ করছেন। তাদের মাহফিলে যে লাখ লাখ লোক সমাবেত হয়ে ওয়াজ শোনেন তারা কিন্তু নির্বাচনে জামায়াতকে ভোট দেন না, তাদের দুই তৃতীয়াংশ বিএনপির কর্মী-সমর্থক এবং তৌহিদী জনতা। ৫ আগস্টের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর তাদের সঙ্গে বিএনপি কি কোনো সম্পর্ক গড়ে তুলছে? সোস্যাল মিডিয়া ইউটিউবে ভাইরাল হওয়া দুটি ঘটনায় দেখা যায়, ঠাকুরগাঁয়ে আমির হামজার সঙ্গে বিএনপির স্থানীয় সাবেক এমপির তর্ক-বির্তক ধাক্কাধাক্কির পর্যায়ে চলে যাওয়ায় মুসুল্লিরা তা ঠেকিয়ে দেয়। আর কারানির্যাতিত ছোটহুজুর খ্যাত মাওলানা রফিকুল ইসলাম মাদানির ওয়াজ মাহফিলে ওয়াজ করছেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শীর্ষ নেতা হাসনাত আবদুল্লাহ।
হাসিনাকে দিল্লিতে আশ্রয় দিয়ে সীমান্তে শূন্য রেখায় ভারতের কাঁটা তারের বেঁড়া দেয়া বাংলাদেশের স্থানীয় জনতা ঠেকিয়ে দিয়েছে। বাংলাদেশের মানুষ কার্যত ভারতের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে। ভারতীয় পণ্য বর্জন করছে, ভারতের সঙ্গে হাসিনার গোপন চুক্তি প্রকাশের দাবিতে আন্দোলন করছে। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ভারত সব সময় বাংলাদেশ এবং ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। এমনকি হাসিনা পালানোর পর বাংলাদেশের ‘মৌলবাদী উত্থান’ ফেইক তথ্য দিয়ে যুক্তরাজ্যের এমপিদের ভারত ক্ষেপিয়ে তুললেও সেটা মিথ্য প্রমাণ হওয়া যুক্তরাজ্যের এমপিরা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে তাদের অভিযোগ প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। ছাত্ররা সরাসরি ভারত বিরোধিতা নিয়ে রাজনীতি করছে যা মানুষ গ্রহণ করছে। বিএনপির কয়েকজন নেতা ভারতের ব্যাপারে মমত্ববোধ দেখালেও সম্ভাব্য কিংস পার্টির নেতা তথা ছাত্রনেতারা ভারতের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে। তারা ভারতীয় পণ্য বর্জন, সীমান্তে কঠোর অবস্থান, দিল্লির সঙ্গে চোখে চোখ রেখে কথা বলা’ তৌহিদী জনতাকে উদ্বুদ্ধ করতে ইসলামী জলসা ও ওয়াজ মাহফিলে হাজির হয়ে বক্তৃতা করছেন। কিংস পার্টিকে ঠেকাতে কি বিএনপির শুধু আওয়ামী লীগ বিরোধী চেতনা নির্বাচনে কাজ দেবে? গোটা বিশ্বে এখন জাতীয়তাবাদী তথা উগ্র ডানপন্থীরা ক্ষমতায় যাচ্ছেন। যুক্তরাষ্ট্রের ডোনাল্ড ট্রার্মের হোয়াইট হাউজে ফেরা তার জলন্ত উদাহরণ। বিএনপি কি মুসলমানদের পক্ষ্যে অবস্থান নিয়ে ‘রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম’ পক্ষে থাকবেন নাকি আওয়ামী লীগের তথাকথিত প্রগতিশীলতার নামে ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’র পথে হাটবেন সেটা পরিস্কার করা প্রয়োজন। এখানে অপ্রাসঙ্গিক হলেও সত্য যে, ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছিল; তখন শেখ হাসিনা ধর্ম নিরপেক্ষতার লেবাস খুলে ইসলামী চেতনা ধারণ করে মাথায় পট্টি বেঁধে তৌহিদী জনতার ভোট নিয়েছিলেন।
হাসিনা পালানোর পর বাংলাদেশ নিয়ে দিল্লি নানা হিসেব নিকেষ করেছে। তারা হাসিনাকে ঢাকায় ফেরানোর চেষ্টা ব্যর্থ হয়ে জামায়াতের সঙ্গে আওয়ামী লীগের ভোট যোগ করে নানা ফন্দিফিকির করেছে। কিন্তু নির্বাচনে বিএনপিকে ঠেকানোর জন্য তা খুবই কম। ফলে দিল্লি একদিকে পর্দার আড়াল থেকে বিএনপির সঙ্গে সম্পর্ক করতে চাচ্ছে অন্যদিকে বিএনপির বিরুদ্ধে জনগণ গঠনে দিল্লির অনুগত গণমাধ্যমগুলোকে কাজে লাগাচ্ছে। নানা দিক থেকে যে খবর জানা যাচ্ছে, তাতে পরিস্কার হাসিনা পালানোর পর প্রশাসনযন্ত্রে জামায়াতপন্থী কর্মকর্তারা জেঁকে বসছেন। হাসিনার অগিলার্ক আমলারাই এই কৌশল গ্রহণ করেছেন। উপদেষ্টাদের বেশির ভাগ এনজিও-বাম ঘরানার হওয়ায় তারাও বিএনপিপন্থীর চেয়ে জামায়াতপন্থী আমলাদের বেশি নির্ভরযোগ্য মনে করছেন। প্রশাসনের এই চিত্র আর মাঠের চিত্র হচ্ছে বিএনপির নেতাকর্মীদের কেউ কেউ চাঁদাবাজী করছেন। বিএনপির নেতারা যতটুকু চাঁদাবাজীর অনৈতিক কাজ করছেন তার চেয়ে ভারতীয় তাবেদার মিডিয়া প্রচারণা চালাচ্ছে কয়েকগুন বেশি। বিশেষ করে পরিবহণ সেক্টর, বিভিন্ন ঘাট, হাট, বালুর মহাল, হাওরাঞ্চলে বিল ইজারা, পর্যটন সেক্টর, মার্কেট-বাজারে চাঁদাবাজী হচ্ছে। বিগত আওয়ামী লীগের ১৫ বছরের শাসনামলের সঙ্গে তুলনা করলে এটা সামান্য হলেও তাবেদার গণমাধ্যম ফুলিয়ে ফাপিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছে বিএনপির বিরুদ্ধে। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে উদ্দেশ্য করে মেজর (অব) হাফিজ উদ্দিনের বক্তব্য যথার্থই উপলব্ধি। এটা ঠিক চাঁদাবাজীর অভিযোগ পাওয়ায় বিএনপি এরই মধ্যে মাঠ পর্যায়ের কিছু নেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। এতে বেশি ফল আসেনি। কাজেই পরিবহন সেক্টর, ঘাট ও পর্যটন সেক্টর, বালুর মহাল দখলসহ গুরুত্বপূর্ণ সেক্টরে যাদের পৃষ্ঠপোষকতায় চাঁদাবাজীর অভিযোগ উঠছে সেই কেন্দ্রীয় স্থায়ী কমিটির রাঘব-বোয়ালদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা এবং বহিস্কার করলে মাঠ পর্যায়ের চুনোপুঁটি চাঁদাবাজরা বার্তা পেয়ে যাবেন। কেন্দ্রীয় জাঁদরেল নেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে এ বার্তা পেলে তৃর্ণমূল পর্যায়ে যাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠছে তারা সতর্ক হয়ে যাবেন। বিএনপিকে মনে রাখতে হবে সাংবিধান বলা হয়েছে ‘জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস’। সেটা তারেক রহমান উপলব্ধি করেছেন। ভারত বিরোধী চিন্তা চেতনার মানুষ এবং তৌহিদী জনতার ভোট ধানের শীষে নিতে চাইলে বিএনপিকে এখনই পরিস্কার সিদ্ধান্ত নিতে হবে।